পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/৩৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা । ] নমনীয়, মুক্ত-হৃদয়, বহিঃপ্রভাবের বশবৰ্ত্তী, পরকীয় •সভ্যতার সমস্ত বিষয় (assimilation) সাক্ষ্মীকরণে সুপটু পাশ্চাত্য চিন্তা-কল্পনার প্রতি-পাশ্চাত্য ধরণধারণের প্রতি সজাগ-দৃষ্টি, কেজো লোক, সাহিত্যিক রচনায় সিদ্ধতন্ত, ক্রিকেট খেলায় শ্রেষ্ঠ, সৰ্ব্ব বিষয়ে “আধুনিক”—এই পার্সদের মত এমন আর কে আছে ? তা ছাড়া, উহার খুব পুরাতন জাতি—স্বকীয় অতীতের প্রতি যারপর নাই অমুরক্ত । উহাদের সমাজ ক্ষুদ্র-জনসংখ্যা নকবই হাজারের অধিক নহে। কিন্তু যে বীৰ্য্য উদ্যম, যে সামাজিক বন্ধন এই জাতিকে বঙ্কায় রাথিয়াছে, তাঙ্গ অসাধারণ। যে ঘটনাসূত্রে ৰোম্বাই সমৃদ্ধি লাভ করে তাহ এই –পাসীরা পারস্ত দেশ হইতে নিৰ্ব্বাসিত হয়। মুসলমানেরা তলোয়ারের বলে, উহাদিগকে মহম্মদীয় ধৰ্ম্মে দীক্ষিত করিতে প্রবৃত্ত হয়। উহারা পলাইয় প্রথমে সুরাটে, তাহার পর, বোম্বায়ে আগমন করে। আজ উহার বেশ বৰ্দ্ধিষ্ণু, বেশ ধনশালী ; উহাদের ঘনিষ্ঠ সামাজিকত ( solidarity , উহাদের বিদ্যালয়, উহাদের অর্থসাহায্যজনিত বিবিধ অনুষ্ঠান—এই সকলের দরুণ, উহার আজ সমস্ত ভারতের মধ্যে সৰ্ব্বাপেক্ষ শিক্ষিত ;—অনক্ষর লোকের অনুপাত শতকরা সাত হইতে পাচ মাত্র—এবং উহারা সৰ্ব্বাপেক্ষা সুনীতিপরায়ণ, কেন না, বেশু-শ্রেণীর মধ্যে একটিও পাসী রমণী দেখিতে পাওয়া যায় না ।

  • এই বৃহৎ নগরীর প্রত্যেক রাস্তাতেই কতকগুলি কাজের লোক যাতায়াত করিতেছে দেখিতে পাওয়া যায়। মাথায় সাদা ধুচনী টুপি কিংবা মোমজমা কাপড়ে মণ্ডিত ধুচ নীটুপি—তাহাতে মটরের মত সাদা সাদা ফুটুকি । ইহারাই পাসী। আবার সন্ধ্যার সময়, দেখিতে পাই, উহার “বোটানি-বে”র সমুদ্র-তীরে, কৃতাঞ্জলিপুটে দণ্ডায়মান হইয়া আগ্রহসহকারে অস্তমান স্বৰ্য্যদেবের স্তবস্তুতি করিতেছে। ইহাদের মধ্যে একজন খুব আগ্রহের সহিত উচ্চৈঃস্বরে মন্ত্রপাঠ করিতেছে। পরে, স্বকীয় যজ্ঞস্থত্রের

• श्हे थारूं छैोनिक्ल টঙ্কারধ্বনি কুরিয়া, প্রশান্ত তরঙ্গরাজির নিকটে আসিয়া কনকোজ্জল তরল বালুকার মধ্যে হাত ডুবাইতেছে। এই সমুদ্রতীর, এই অস্তমান স্বৰ্য্য, দিগন্তের উপর বেগনি রঙ্গের এই তালপত্রাবলী,—সমস্ত মিলিয়া নাগরিক ভারত । రిe (t পূজাৰ্চনার নিমিত্ত ইছাই তাছাদের ৰিশাল দেবমন্দির। বোম্বাই নগরের যে পাহাড়টি সৰ্ব্বাপেক্ষ উচ্চ, বাছিয়া বাছিয়া তাহারই উপর, তালকুঞ্জের মধ্যে—গুল্মপুষ্পের মধ্যে —৭টা স্তম্ভ নিৰ্ম্মিত হইয়াছে। ইহাই উহাদের শ্মশান। একদিন অপরাহ্নে, বাগদাদের প্রধান-পাদ্রির সহিত, আমি এই স্থানটি দেখিতে গিয়াছিলাম। প্রথমে শুভ্ৰবসনধারী পুরোহিতগণ, তাহার পর অনুযাত্রীবর্গ আসিল ; শব-মন্দিরের চুড়াদেশে শব স্থাপিত হইল। ন্যাড়-মাথা শকুনীর বাক, উদ্ধান প্রাচীরের উপর কালে ফিতার আকারে, সারি সারি বসিাছিল, শব দেখিবামাত্র বাপাইয়া পড়িয়া উহাকে থও খও করিয়া ছিড়িতে লাগিল । পাসীদের মধ্যে এই যে ঘনিষ্ঠ ভ্রাতৃবন্ধন, ইহা হইতেই উহাদের সাধারণ সম্মিলিত-স্বার্থের ভাব জাগিয়া উঠিয়াছে। উহার যেমন আপনাদের উন্নতির জন্তা—সেইরূপ সমস্ত বোম্বায়ের উন্নতির জন্ত অনেক কাজ করিয়াছে। উহাদের উদার-হৃদয় মানবহিতৈষী মহাত্মাগণ—পুস্তকালয়, বিদ্যালয়, হাসপাতাল স্থাপন করিয়াছেন। একটা কোন সাৰ্ব্বজনিক স্মৃতিস্তম্ভের নিকটে গিয়া তাহার উপরিস্থিত অৰ্দ্ধকায় মূৰ্ত্তিটি দেখ—তাহার নীচে দেখিতে পাইবে এই কথাগুলি লেখা রহিয়াছে —‘ইনি একজন পার্স, ইনি এক লক্ষ, দুই লক্ষ টাকা দান করিয়াছেন।” এইরূপে উহার এলফিনষ্টোন কালেজ ও মিউনিসিপাল পুস্তকালয় স্থাপন করিয়াছে । এইরূপে উহার,—যিনি বদান্ততায় Rockfiller ও Carneggieয় সমকক্ষ সেই তাতার প্রভূত অর্থ-সাহায্যে গবেষণা-মন্দির স্থাপনে উষ্ঠত হইয়াছে। প্রত্যেক ইমারতের উপর, প্রত্যেক প্রস্তরের উপর লিখনাদি পাঠ করিয়া ভারতপৰ্য্যটক, পার্সী-উদ্যম-তৎপরতার পরিচয় পান। যে দিন আমি পৌছিলাম সেই দিনেরই অপরাহ্নে, বেড়াইতে বেড়াইতে একটা গলির ভিতরে, আমার হোটেলের নিকট ইহার আর একটা নিদর্শন পাইলাম –“ফরাসী-সাহিত্যসন্মিলনী।” একটা সিড়ি দিয়া উপরে উঠিলাম। ধুচনীটুপি-পরা একটি গম্ভীর প্রকৃতির লোক আসিয়া দ্বার খুলিয়া দিলেন। আমার বিস্ময়-রঞ্জিত মুখভাব দেখিয়া একটু হাসিলেন এবং আমাকে পঠন-শালায় ও পুস্তকাগারে লইয়া গেলেন। পুস্তকাগারটি বেশ প্রশস্ত; মনোরম, সুপরিচিত