পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ჯ, - প্রবাসী । না, উভয়েই সম্পদ বিপদের সমাংশভাগী। সুতরাং তাহদের পরস্পরের মধ্যে কোনও বিবাদ থাকিতে পারে না। তবে যে এখন সময়ে সময়ে হিন্দু মুসলমানের বিবাদের কথা শুনা যায় তাহার অধিকাংশই ফিরিঙ্গীর স্বার্থপ্রণোদিত । আমাদের মধ্যে কিসে বিবাদ বাধাইয়। সে নিষ্কণ্টকে রাজ্যভোগ করিতে পারে ইহাষ্ট হইল তাহার বর্তমান রাজনীতি, তৃষ্ঠ উপায়ে সে ত্ৰিশ কোট প্রজার উপর কর্তৃত্ব করিতে সম্পূর্ণ অসমর্থ। সেই জন্যই সে হিন্দুদেরও পরস্পরের মধ্যে বিবাদ বাধাইতে সৰ্ব্বদা সচেষ্ট। কিন্তু "তাহে মুগ্ধ প্রতারিত বোধহীন নরে” । বোধহীন নর সর্বত্রই আছে, সুতরাং আমাদের মধ্যে সময়ে সময়ে বিবাদ বাuধ । হিন্দুমুসলমানবিবাদের এই একমাত্র অর্থ, বাস্তবিক উভয়ের কোনও জাতিগত বিদ্বেষের হেতু নাই। বিবাদের কারণ বাহিরে, কারণ দূরীভূত হইলে বিবাদ ও দূরীভূত হইবে, কাজেই কারণ দূর করিবার জষ্ঠ পরস্পরের ঐক্য অসম্ভবও নহে, সুদূরপরাহতও নহে । যাঙ্গর চক্ষু আছে তিনি তাঙ্গ সহজেই দেখিতে পাইবেন । শত্রুপক্ষ আওরংজিবের “ঞ্জিজিয়াকে” আপনাদের ইতিহাসে এমন র-এ চিত্রিত করিয়াছে, যাহাতে উহা হিন্দু মুসলমান বিদ্বেযের একটা স্মৃতিচিহ্নরূপে দণ্ডায়মান রহিয়াছে । এই মিথ্যা ভ্রান্তি অপনোদন নিতান্ত দরকার । আওরংজিবকেও যে বর্ণে চিত্রিত করা হয় তাহাও মিথ্যা। তিনি সনদগ্ধমনা ছিলেন। র্তাহার অবিশ্বাস হিন্দু মুসলমান উভয়ের উপরই সমভাবে ছিল। হিন্দু বলিয়া তিনি প্রজাদের মধ্যে ইতরবিশেষ করিতেন তাহ নহে। হিন্দুগণ যে জিজিয়ু দিত তাহার কারণ কি ? ধৰ্ম্মযুদ্ধে মুসলমান প্রজা রাজার জন্ত প্রাণ দিত, সে যুদ্ধে হিন্দু প্রজাকে আহবান ফরা চলিত না, সুতরাং ক্ষতিপূরণ স্বরূপ হিন্দু প্রজা জিজিয়া দিত। ইঙ্গ একটা যুদ্ধকর। মুসলমান প্রজ যাহা দিত, হিন্দু প্রজার তাহা দিবার অধিকার ছিল না বলিয়া তাহারা তাহার পরিবর্তে ‘জিজিয়া” দিত। উহা কদাপি জাতিবিদ্বেষমুলক ছিল না। জাতিবিদ্বেষমূলক যুদ্ধকর বরং ইংরাজ রাজত্বে হিন্দু মুসলমান প্রজাকে দিতে হইতেছে। আমরা গায়ের রক্ত দিয়া ইংরাজসৈন্ত পোষণ করিতেছি। অথচ ব্রিটিশ সৈন্তবিভাগের যে অধিকার, যে সুখ সুবিধা, তাহা مهشیعهحههای - همه عی ----- ۰۰ح হইতে আমরা সম্পূর্ণ বঞ্চিত ইহা অপেক্ষা জাতিবিদ্বেষমূলক অত্যাচার আর বেশী কি হইতে পারে ? অথচ ফিরিঙ্গী নাকি সভ্য, আর ইতিপূৰ্ব্বে আমরা অসভ্য মুসলমান সম্রাটগণ কর্তৃক অত্যাচরিত হইতাম এবং তাঁহাই নাকি ফিরিঙ্গার এদেশে রাজত্ব করিবার একটা প্রধান ওজুহাত । ইহা অপেক্ষা দিনকে রাত এবং রাতকে দিন আর কি হইতে পারে? অদ্ধ সভ্য (!) মুসলমান অন্ধকারযুগে যে অষ্টায় করিত বলিয়া ফিরিঙ্গী তাহার ইতিহাসে আজ কীৰ্ত্তন করিতেছে এই বিংশ শতাব্দীর দিবালোকে ফিরিঙ্গীরাজ যে তাহ অপেক্ষা শতগুণ অন্তায় করিতেছে, তাহার খবর কেহ পায় না ! ফিরিঙ্গীর এমনই কৌশল ! আগে যাহা কিছু অন্তায় হইত, তাহ সরল ভাবে হইত, লোকে বুঝতে পারিত, ফিরিঙ্গ অন্তায় করে এমন কৌশলে যে কেহ তাহার সন্ধান পায় না। এই যে হিন্দু মুসলমান প্রজার গায়ের রক্ত দিয়া খৃষ্টীয় পাদুরসম্প্রদায় (Church) প্রতিপালন করা হইতেছে, ইহা অপেক্ষা অধিকতর অন্তায় মানুষ আমি দিবালোকে কি করিতে পারে ? আজ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দক্ষিণ আফ্রিকা বা অষ্ট্রেলিয়া হইতে ভারতবাসী যেরূপ কুকুর বিড়ালের স্থায় বিতাড়িত কোনও মুসলমান সম্রাটের (ৰ্তাহীকে তোমাদের মিথ্যা ইতিহাস যতই অত্যাচারী বলিয়া বর্ণনা করুক না,) অধীনস্থ হিন্দুপ্রজা কি ইহার শতাংশ অত্যাচার ও কখন ভোগ করিয়াছে ? বাস্তবিকই হিন্দু মুসলমানের বিদ্বেষের কথা ফিরিঙ্গীর স্বার্থপ্রস্থত রাজনীতির কল্পনা । বস্তুতঃ ইহার কোনও অস্তিত্ব নাই। যে সকল মুসলমান হিন্দুর প্রতি বিদ্বেষ দেখাইতেছেন তাহারা অশিক্ষিত এবং ফিরিঙ্গীর হাতের যন্ত্র। সুতরাং এ বিবাদ হিন্দু মুসলমানের বিবাদ নহে, ফিরিঙ্গীর রাজনীতির ক্র। হয়, ভাই মুসলমান, তুমিই না দিগ্বিজয়ীবেশে ভারতে প্রবেশ করিয়াছিলে, তবে আজ , তোমার এ মতিচ্ছন্ন হইল কেন যাহাতে নিজের হিত বুঝিতে না পারিয়া শক্ররই পদলেহন করিতেছ ? তোমার প্রতি যে ফিরিঙ্গীর ভালবাসা তাহা রাজনৈতিক চা’ল তাহ কি এখনও বুঝিবে না ভাই ? তোমার প্রতি যদি ফিরিঙ্গীর এতই সম্প্রীতি তবে কার্জনগবর্ণমেণ্ট অন্ধকূপহত্যারূপ তোমার মিথ্যা অপবাদটার স্মৃতি চিরস্থায়ী করিবার खुछ এত আয়োজন করিলেন কেন ?