পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা।] মিণ্টে গবর্ণমেণ্ট আবার সম্রাট বাহাদুর শার সমাধির উপর স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করিতে না দিয়া তোমার প্রতি আদর ও সন্মানের পরাকাষ্ঠ প্রদর্শন করিয়াছেন ! আবার ঐ দেখ যিনি কত আদর করিয়া তোমাকে প্রিয়তমা পত্নী বলিয়া গ্রহণ করিয়াছিলেন, সেই ফুলার সাহেব একটু দূরে সরিয়া গিয়াই *son CŞfoll “descended mainly from men of the lower and the servile castes converted to Islam.” ইহাতে বঙ্গীয় মুসলমানগণকে ফিরিঙ্গ কি চক্ষে দেখে তাহা অজ্ঞাতসারে প্রকাশিত হইয়া পড়িয়াছে। আর কেন ভাই, সোজা পথে ঘরে এস, দুই ভাইয়ে মিলিয়া মায়ের কষ্ট দূর করি। ভাই শত্রর প্ররোচনায় তুমি যদি তোমার ভাইএর উপর কোনও অন্যায় কর তবে হিন্দু ভাই তোমাকে ক্ষমা করিতে প্রস্তুত। কেন না, তাহার শিক্ষা “মেরেছিস্ তুই কলসীর কানা, তাই বলে কি প্রেম দিব না।” কিন্তু ভীষ্ট একটা কথা তোমাকে না বলিয়া থাকিতে পারিলাম না । -তুমি যদি আত্মাহত না বুঝিয়া দেশের অনিষ্ট করিতে ফিরিঙ্গীর হাতের যন্ত্রই থাক, তবে জানিও শক্রর সে যড়যন্ত্র ব্যর্থ হইবেই। দেশে য়ে জাতীয় জীবনস্রোত বহিয়াছে, স্বর্গ হইতে জাতীয় জীবনগঙ্গার যে ধারা নামিয়াছে, তাহার গতি রোধ করে এমন সাধ্য কাহারও নাই। সে তাহার গন্তব্য পথে যাইবেই,সে সাগরে যাইয়া মিশিবেষ্ট, তুমি তাহার বাধা জন্মাইতে পারিবে না। গোমুখী হইতে গঙ্গা যখন ধরাতলে অবতীর্ণ হইয়াছিলেন, তিনি কোন বাধা মানেন নাই, এক ঢেউ সাম্‌লাইতে যাইয়া ঐরাবতেরও প্রায় প্রাণান্ত হইয়াছিল। যদিও গোমুখীতে গঙ্গার মুখ খুলিয়। দিয়াছিল তবুও সে স্রোতমুখে দাড়াইতে পারে নাই, এখানেও কেউ পরিবে না, যে দাড়াইবে তাহার লাঞ্ছনার একশেষ হইবে। স্রোতের সঙ্গে যে গা ভাসাইবে সে সাগর সঙ্গমে যাইয়ু পৌঁছুবে । এ স্রোত কোন সাহায্য যাচিবে না, কোন বাধা মানিবে না,—“সহায়তা কার লাগে বিশ্ব ডুবাইতে প্রলয়ের জলে ।” তাই বলি ভাই আর বিড়ম্বিত হইও না । আমার হিন্দুভ্রাতাদের নিকটও একটা নিবেদন আছে। আর. রক্ত দেখিয়া মূৰ্ছ গেলে চলিতেছে না। জননীর, ভগিনীর সম্মান রক্ষার জন্তও তোমাকে অস্ত্র ধরিতে শিখিতে ভারতের স্বরাষ্ট্র । 아 হইতেছে। সরকার যখন তোমার রক্ষার ভার লইতে নারাজ তখন তোমাকেই আত্মরক্ষার ভার লষ্টতে হইবে। তুমি এমন শুইয়াছিলে যে আর কিছুতেই তোমাকে উঠাইতে না পারিয়া ভগবান এবার তোমার এমন জায়গায় ঘা মারিয়াছেন, তুমি আর শুষ্টয়া থাকিতে পরিবে না। তোমাকেও উঠিতে হইয়াছে। কুমিল্লার হিন্দু মুসলমান বিবাদও তোমার জষ্ঠ স্বর্গের সম্বাদ বহন করিয়া আনিয়াছে, সে সংবাদ গ্রহণ কর এবং তাহার মৰ্ম্ম বুঝিয়া কাৰ্য্যক্ষেত্রে অবতীর্ণ হও । আমি দেখিয়া শুনিয়া করজোড়ে উদ্ধনেত্রে কেবল ভাবিতেছি,— , “নিজে তুমি ভগবান, বোগাষ্টছ উপাদান, তব কাৰ্য্য সকলই মঙ্গল ।” আর এক শ্রেণীর আপত্তি এই যে তোমাদের সমাজে নানারূপ বৈষম্য বর্তমান সুতরাং তোমরা স্বরাজের উপযুক্ত নও। অর্থাৎ যে সব দেশে স্বরাজ প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে বা চিরদিনই আছে সে সব দেশে বৈষম্য আদৌ নাই । স্বৰ্গরাজ্যে কি আছে জানি না, কিন্তু স্বরাজ্যের জন্ত যে সাম্য নিতান্তই দরকার এ কথা আমরা স্বীকার করিতে এখনও প্রস্থত হই নাই। এই পৃথিবীতে এমন অনেক দেশে স্বরাজ প্রতিষ্ঠিত আছে যাহাদের সামাজিক ও নৈতিক অবস্থা আমাদের অপেক্ষা হীন । মহাপুরুষ রাজা রামমোহন রায়ের সঙ্গে আমরা বেশ বলিতে পারি—এবং সে সময়কার অপেক্ষ আমাদের অবস্থা এখন অনেক বিষয়ে উন্নততর—যে, “এ দেশের লোকের নীতি ও ধৰ্ম্মের ক্রটি বিষয়ে যাহা আপনি লখিয়াছেন তাহাতে এতদেশীয় ব্যক্তিদের ও ইউরোপদেশীয়দের গার্হস্থ্য ধৰ্ম্মবিষয়ে উৎপ্রেক্ষা দিয়া দোষের নুনাধিক্য অনায়াসে আমি দেখাইতে পারিতাম, কিন্তু তাহার কোনওঁ প্রয়োজন নাই”। আমেরিকা যখন ইংলণ্ডের করাল গ্রাস হইতে আপনাকে উদ্ধার করিয়া স্বরাষ্ট্র স্থাপন করিয়াছিল তখনও সেখানে দাস বিক্রয়ের জঘন্ত প্রথা বর্তমান ছিল, এবং স্বরাষ্ট্র স্থাপনের পরে আপনাদের মধ্যে মারামারি কাট কাটি করিয়া সে প্রথা তুলিয়া দিয়াছে। কিন্তু বৈষম্য কি গিয়াছে ? দাসত্ব প্রথা চলিয়া গিয়াছে বলিয়া কি ‘দাস’ নাই ? সে দিনও একজন শ্বেতকার রমণী অষ্ঠ বর্ণের স্বামী গ্রহণের মহা অপরাধে (!) কারাগারে