পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান ፳ማ -صی.-ب۔-م . সমাজের অপাংক্তেয় ; তাহাদের কাব্য ও গীতি তাহাদের লাঙ্গলের মতই জীবন-ধারণের পক্ষে অপরিহার্য্য অথচ তাহ সেই লাঙ্গলের মতই ভদ্র সমাজে ত্যাজ্য । এই জন্য যখন চন্দ্রকুমার দে ‘পূৰ্ব্ববঙ্গ গীতিকা’র সোনালিবাধাই, নানা চিত্র-শোভিত, সুদৃষ্ঠ কাগজে ছাপা একখানি বই লইয়া গায়েনদের কাছে গেলেন এবং পড়িয়া বুঝাইলেন—এই মনোহর, সমৃদ্ধ আবরণের মধ্যে তাহদের দেওয়া গান স্থান পাইয়াছে, তখন তাহার বিস্ময়ে বাকৃশক্তি হারাইয়া ফেলিল। তাহাদের অক্ষর-পরিচয় নাই, সুতরাং বইখানি পড়িতে পারিল না, কিন্তু সারমেয় যেরূপ প্রবাসাগত গৃহস্বামীকে দেখিয় তাহার সঙ্গ ছাড়িতে চায় না, মনের আনন্দ-জ্ঞাপনের ভাষা নাই, এজন্য লেজ নাড়িয়া পায়ে লুটাইয়া পড়িয়া, বারংবার তাহাকে প্রদক্ষিণ করিয়া অসহ্য হৃদয়াবেগ প্রকাশ কামতে চেষ্টা করে—ইহারাও সেইরূপ কৃতজ্ঞতা ও আনন্দের আতিশয্যে পুস্তকখানি কখনও মাথায় রাখিয়, কখনও তাহার উপর হাত বুলাইয়া আনন্দে বিহবল হইয়া গেল। তাহারা জানে না যে, তাহারা অতি সংক্ষেপে নর-জীবনের কতকগুলি সার কথা বলিয়াছে, যাহা দার্শনিকগণ বুঝাইতে গলদ ঘৰ্ম্ম হইয়া যান ; তাহার কবিত্বের এমন মৰ্ম্মস্পশা রূপ দেখাইয়াছে, যাহা পাণ্ডিত্যের ধার ন৷ ধারিলেও জগৎকে মুগ্ধ করিবার শক্তি রাখে। আমি ইতিপূৰ্ব্বে বলিয়াছি, ইহাদের ভাষা প্রাদেশিক হইলেও তাই খাটি বাঙ্গলা । মুসলমানগণ এই সকল পালাগানের অনেকগুলি রচনা করিয়াছেন এবং এখন তাহারাই ইহাদের প্রধান গায়েন ও শ্রোতা বলিয়া এই সকল গীতিকার ভাষা মুসলমানী বাঙ্গলা নহে, অর্থাৎ মৌলবীরা বহু উর্দু ও আরবীশব্দ-কণ্টকিত যে অস্বাভাবিক বাঙ্গলা অমুমোদন ও প্রবর্তন করিতে চেষ্টা পাইয়াছেন, ইহা সে বাঙ্গলা নহে। ইহাতে ੇ, ও ফারসী শব্দ আছে, কিন্তু স্বাভাবিক ক্রমে সেই সকল ভাষার যে শব্দগুলি আমাদের q—