পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান معلا কাপাইতেছি, তাহাতেই বঙ্গ-সাহিত্যের আদিযুগ ও মধ্যযুগ পরিকল্পন। করিয়া তৃপ্তিলাভ করিতেছি, অথচ এই সাহিত্যকে কেহ কেহ ফিরিঙ্গিয়ানদুষ্ট বিকৃত সাহিত্য মনে করিয়াছেন। সেই সকল উগ্র সমালোচকের কথায় সায় না দিয়াও একথা অবশ্ব বলা যাইতে পারে যে, এই অভিযোগ একবারে অমূলক নহে ; কোন কোন সম্প্রদায় বর্তমান বাঙ্গল সাহিত্যকে আবার অতিরিক্ত মাত্রায় হিন্দু ভাবাপন্ন বলিয়া ইহার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণ। করিতেছেন । কিন্তু বৰ্ত্তমানের অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র সাহিত্যের কল-কোলাহুল হইতে দূরে আমুন—আমরা আমাদের ভাষার বিরাট রূপের সান্নিধ্যে যাইয়া দেখি—সেখানে বিশাল পল্লী-সাহিত্য-সমুদ্র পড়িয়৷ রহিয়াছে—তাহা কি ভাবে, কি সংখ্যায়, কি কবিত্ব মৰ্য্যাদায়, অতি বিপুলকায়, ইহার সমস্তই বাঙ্গালী জাতির অবদান—এই রত্ন-বোঝাই জাহাজ আমরা অবহেলার অতল গর্ভে ডুবাইয়া দিয়া কয়েকখানি রঙ্গীন নূতন তৈরী জেলে ডিঙ্গা লইয়া হাওয়া খাইয়া বেড়াইতেছি । মুসলমানের যে-সকল পুথি ছাপাইয়াছেন, তাহদের মধ্যে কতকগুলিতে উচ্চাঙ্গের কবিত্ব ও করুণ-রস আছে, আমাদের বাঙ্গলা রামায়ণ ও মহাভারত অনেকস্থলে মূলসংস্কৃতের গণ্ডী ছাপাইয়া গিয়৷ দেশী-উপাদানে কাব্য কথা সাজাইয়াছে— তাহাতে তাহদের ঐ কমে নাই, বরং বাড়িয়াছে। বহু মুসলমান কবি সেইরূপ হাসেন-হুসেনের কথা, সখিনার প্রেম, কারাবালার যুদ্ধ-ক্ষেত্রের কথ। বিদেশের মাল-মসলা হইতে সংগ্ৰহ করিয়াও তাহ বাঙ্গালার নিজস্ব উপাদান দিয়া গড়িয়াছেন। যেখানে করুণ-রসের কথা সেখানে পরদেশ মূল ছাপাইয়া উঠিয়াছে—তাহাদের কবিত্বের অনুভূতি ও ভাষা । আমরা এখানে সংক্ষেপে এই পল্পী-সাহিত্যের গুণাগুণ বিচার করিব এবং প্রমান করিতে চেষ্টা পাইব যে, এই বিরাট সাহিত্যে হিন্দুর অপেক্ষা