পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান ') : (t খাওয়ার পর হইতে তোমার মাথা খারাপ হইয়া গিয়াছে।” মনস্থর বলিল —“আজ ডাকাতি করিতে বাহির হইব, তোরা প্রস্তুত হইয়! থাক।” কাইজপার নামক স্থানে এক ধনাঢ্য ব্যক্তির গৃহে ঘুট্‌ঘুটে অমাবস্তার অন্ধকারে সে ডাকাতি করিতে গেল। প্রাসাদের ইট খসাইয়া দলের লোকদিগকে বাহিরে প্রতীক্ষা করিতে বলিল এবং মনসুর এক ধনীর সেই বিশাল শয্যাগুহটিতে প্রবেশ করিয়—জোডপালঙ্কে মশারি খাটাইয়। দৌলতদার স্বায় সুন্দরী স্ত্রীকে লইয়া ঘুমাইয় আছেন, দেখিতে পাইল । তাহার শিপানের দিকে একটা মস্তবড় সিন্দুক ছিল, মনসুর তাহার হাত দিয়া তাহাতে তাল বাজাইতে লাগিল । গৃহস্বামীর নিদ্রাভঙ্গ হইল না দেখিয় মনসুর কলের চাবি দিয়া সিন্দুক পুলিল— "সিন্ধুক খুলিয়া পাইল টাকা ভোড়া তোড়া। অষ্ট অলঙ্কার আর শাল জোড়া জোড় ॥ দামী মালমত্তা সব করিয়া বাহির ।”— মনম্বর সেগুলি লইবার উদ্যোগ করিতেছে, এমন সময় প্রভাতী-পাখীর সুরে সুর মিলাইয়া নিকটবৰ্ত্তী মসজিদ হইতে আজানের করুণ-আহবান শুনিতে পাইল । রন্ধপথে উষার লাল ছবি তাহার চোখে পড়িল । মনসুর তখন ডাকাতি ভুলিয়া গেল। ভুলিয়া গেল যে, গৃহস্বামী সেখানে ঘুমাইতেছেন তিনি মস্ত বড় লোক, তাহার গৃহময় লোকজন, সঙ্গীনধারী প্রহরীর আশেপাশে । সে ভুলিয়া গেল যে, তাহার দলের লোকেরা লুটের জিনিষ বহন করিবার জন্ত বাহিরে প্রতীক্ষা করিতেছে—ভুলিয়। গেল যে, সে দস্য এবং বহুমূল্য ধন-রত্ন বাহির করিয়াছে,—সে আনন্দে চীৎকার করিয়া উঠিল—‘ লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ । সেই চীৎকার শুনিয়া দলের লোকের ওস্তাদের কণ্ঠস্বর বুঝিতে পারিল ও ছুটু দিল । গৃহ-স্বামীর ঘুম ভাঙ্গিয়৷ গেল, তিনি দেখিতে পাইলেন এক স্বৰ্গীয় দৃষ্ঠ—অতি নিবিষ্ট হইয়া এক সাধু