পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b&や প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান যথাবিহিত অঙ্গভঙ্গী করিয়া নামাজ পড়িতেছে এবং তাহার পায়ের কাছে তাহার ধনরত্ন লুটাইতেছে। যোড়হাতে গৃহস্বামী তাহার পরিচয় জিজ্ঞাসা করিলেন । নামাজ শেষ করিয়া মনসুর বলিল—“আমি ডাকাত, আপনার ধনরত্ন লুণ্ঠন করিবার জন্ত বাহির করিয়াছি, আপনি আমাকে ধরাইয় দিন ও শাস্তির ব্যবস্থা করুন।” কিন্তু গৃহস্বামী কিছুতেই বিশ্বাস করিলেন না । সেইদিন তাহাকে সাধু ও গুরু বলিয়া তাহার শিষ্যত্ব গ্রহণ করিলেন এবং র্তাহার সমস্ত ঐশ্বৰ্য্য মন্‌স্বরের পায়ে উপহার দিলেন। সেই হইতে মনস্করের ডাকাতি জীবন শেষ হইয়া গেল । কেহ আর তাহাকে দেখিতে পাইল না— “কত কাল গত হইল তারপর। কাফন-চোরার কেহ না পাইল খবর ॥" মাঝে মাঝে জঙ্গল হইতে এক পীর বাহির হইয়া আসে, প্রহরে প্রহরে তাহার নামাজের সুর প্রাণ বিগলিত করে এবং মাঝে মাঝে দেখা যায়, ময়দানের উপরে আয়রার কবরে পার জেয়ারত করে । এই পালা-গানটিতে দেখা যায়, প্রেম মানুষকে কিভাবে পশু-প্রকৃতি হইতে দেবত্বে পৌছাইয়া দেয়। গানটি প্রাদেশিক ভাষায় লিখিত, এজন্ত কতকটা দুৰ্ব্বোধ্য। কিন্তু ইহার মধ্যে মধ্যে কবিত্ব ও করুণ-রসের উৎস বহিয়া গিয়াছে। আয়রার মৃত্যুর পর তাহার স্বামী আজিম বিলাপ করিয়া বলিতেছেন— “কেমনে খাব ধন-দৌলত, কেমনে খাবরে। তোমারে ছাড়িয়া আমি কোন পন্থে যাবরে। কুৰ্ম্মাইর কুলের মিঠাপান কৰে আর খাবরে। হাসি-মুখে আমারদিকে কবে চাইবেরে। জোড়-পালঙ্কের খাট আমার খালি রৈলরে। বুকের ভিতর কলিজা আমার কাটি পৈল্লরে।”