পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান ృష్ణా ৪ । এই গীতিকাগুলির মধ্যে ভেলুয়ার পালা’ট বিশেষরূপে উল্লেখযোগ্য। ইহা মুসলমান কবির রচিত। চট্টগ্রামের বাঙ্গুনিয়া থানার অধীন পোমর গ্রামের বৃদ্ধ ওমর বৈদ্য নামক এক মুসলমান গায়েনের নিকট হইতে আশুতোষ চৌধুরী ইহ সংগ্ৰহ করিয়াছিলেন। তাহার বয়স ছিল তখন সত্তর, তথাপি সে নাচিয়। গাহিয়। এই গীতিকাটি দোহারের সাহায্যে সতের ঘণ্টাকাল গাহিয়া আসরটি এমন জমাইয়া তুলিয়াছিল যে, সেই পল্লীটি সেদিন কোকিল-কুজন, রঙ্গীন-আকাশ, উন্মত্ত মধুর হাওয়ার মতই গীতিকার স্বনিকেতন হইয়া পড়িয়াছিল। এই কাব্যটির ভিত্তি ঐতিহাসিক, তন্মধ্যে নানা উপগল্প লতার স্যায় গীতিকার মাধুর্য্য বাড়াইয়াছে । কিন্তু এখনও কাব্যোক্ত ভোল৷ সদাগরের বাড়ী. যাহা বিস্তীর্ণ দীর্ঘীতে পরিণত হইয়া ভেলুয়ার দীর্ঘী’ নামে পরিচিত হইয়াছিল। মুনাপ কাজির কাছারীর চিহ্ন ও গীতে উল্লিখিত প্রায় সমস্ত ভৌগোলিক স্থানগুলি বিদ্যমান। টোন। বারুইয়ের ভিটা এখনও সৈয়দনগরের লোকেরা দেখাইয়া থাকে। ঘটনাটি হুসেন শাহের পুত্র নসরত শাহের রাজত্বকালে সংঘটিত হইয়াছিল বলিয়া লিখিত আছে। " তারিখ-ই-হামিদী” নামক ফারসী পুস্তকে ও পূর্ণচন্দ্র চৌধুরী নামক এক ভদ্রলোকের লেখায় এই গীতিকার আখ্যান-বস্তুর প্রধান প্রধান কথার উল্লেখ আছে। এই ভেলুয়ার গীতিকা নানারূপে নানা ছন্দে বিচরিত হইয়। চট্টগ্রামবাসীদিগকে এতকাল মুগ্ধ করিয়া রাখিয়াছিল। আমাদের শিক্ষিত-সম্প্রদায় জনসাধারণের প্রতিনিধি বলিয়া রাষ্ট্ৰক্ষেত্রে স্পদ্ধ করেন। কিন্তু ষে-সকল কথা লইয়া শত-সহস্ৰ লোক বাঙ্গালার পল্লীগুলিতে আনন্দোৎসব করিয়া আসিয়াছেন, অনেক সময় তাহার একবর্ণও র্তাহারা জানেন না এবং না জানিয়। ঘূণার সহিত চাষীদের কাহিনী উপেক্ষা করেন। বর্তমান বঙ্গ-সাহিত্য এই জনসাধারণ হইতে বিচ্ছিন্ন, বিদেশী-প্রভাবান্বিত আত্মম্ভরী একটা ক্ষুদ্র-দলের উপর প্রতিষ্ঠা