পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/১৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান >br○ ত্যাগিনী, ধরিত্রীর দ্যায় সৰ্ব্বংসহ, যে-সকল মুসলমান-লিখিত গাথার কথা উল্লেখ করিয়াছি, তাহাতে সেইরূপ নারী বিরল নহে। কিন্তু মনির ওঝ ও মামুদের মত চরিত্র হিন্দুগাথায় নাই, ভ্ৰষ্ট নারীর জন্ত এই প্রেম জগতের সাহিত্যে দুর্লভ। আমি পূর্বেই লিখিয়াছ—বাঙ্গলার গাথ-রচকের সৰ্ব্বদাই ভূমাকে লক্ষ্য করিয়াছেন, প্রেম-বর্ণনায় তাহারা খাটি প্রেমের প্রতি লক্ষ্য করিয়াছেন, সৰ্ব্ববিধ শাস্ত্রের অনুশাসন, সামাজিক সংস্কার ও লোকাচার ছাপাইয়। উঠিয়াছে—সেই প্রেমের বিজয়-দুন্দুভি । দুঃখের বিষয় মিঞাজান রচিত এই পালাটির কিয়দংশ মাত্র কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশ করিয়াছিলেন, তৎপর গানের বৃহত্তর অংশটিই আমি আর প্রকাশ করিতে সুবিধা পাই নাই, তখন বিশ্ববিদ্যালয় হইতে আমার আসন টলিয়। গিয়াছিল । আমি পূৰ্ব্বেই লিখিয়াছি—আমার নিকট অপ্রকাশিত অনেক গীতিক আছে, তন্মধ্যে কয়েকটির মাত্র সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিয়াছি, কিন্তু সমধিক পরিমাণে অধিকাংশেরই কোন পরিচয় দিতে পারিলাম না ১০ । ‘মাছুম খী পণ্টনের পালা’ নামক একটি গীতিক ময়মনসিংহ কেন্দুয়া হইতে নগেন্দ্রচন্দ্র দে সংগ্ৰহ করিয়াছিলেন। ইহাতে একটি মুসলমান গৃহস্থ পবিবারের কথা আছে মাছুম থা ও কাছুম খ। দুটি ভাই মাতা-পিতাহীন হইয়া তাহাদের মামা সায়েস্ত। খার বাড়ীতে আশ্রয় পাইল । সায়েস্তা খা বেশ সম্পন্ন গৃহস্থ, তাহার চৌদ্দ খানি হাল, বহু গোলা ধানে ভৰ্ত্তি—বাড়ীতে রকম-বেরকমের অনেকগুলি ঘর এবং “এক খায় আর আনে নাই কূল কিনারা ।” তাহার এক কন্যা সোনাজান বিবি পরম সুন্দরী। মাছুম ও কাছুমের বলিষ্ঠ দেহ দেখিয়া মাতুল খুব খুগীই হইলেন, দুটি ভাত দিয়া তাহাদের হাড়-ভাঙ্গা খাটুনির কাৰ্য্যে লাগাইয়া দিলেন ।