পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/২১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२०२ প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান নাসাকর্ণচ্ছেদের ব্যবস্থা করিতেন, কিন্তু কবি ঘটনাটি এমন দরদ দিয়া সুকৌশলে অপূৰ্ব্ব কবিত্ব-মণ্ডিত করিয়া আঁকিয়াছেন যে—তাহা পড়িলে স্ত্রীলোকটি কোথায় দোষ করিল, তাহ নিতান্ত অনুসন্ধিৎসু সমালোচকও খুজিয়া পাইবেন না বরং শেষাঙ্কে পাঠকের মন সেই রমণীর জন্ত দরদে ভরিয়া যাইবে এবং প্রণয়ীটির প্রতিও অসামান্ত শ্রদ্ধা হইবে। কবির হাতে সত্যের যাদুকাঠি ছিল, তিনি সামাজিক মান-দণ্ডে কিছু বিচার করেন নাই। বিচার তিনি কিছুই করেন নাই, বিচারের ভার পাঠকের উপর দিয়াছেন, তিনি শুধু শুদ্ধান্তকরণে শিশুর নিৰ্ম্মল চক্ষে ঘটনাটি যেন প্রত্যক্ষ করিয়া বর্ণনা করিয়াছেন। সেজন্য এরূপ অদ্ভুত সাফল্য লাভে সমর্থ হইয়াছেন। কতবার এই সকল গাথায় কুমারী-কন্ত, পিতামাতা ও অভিভাবকগণের বিদ্রোহী হইয়া স্বেচ্ছামত বর মনোনয়ন করিয়াছে। কতবার স্বীয় স্বামীকে ছাড়িয়া অপরের সঙ্গে চলিয়া গিয়াছে, ব্রাহ্মণ-কুমারী মুসলমান বর বাছিয়া লইয়াছে এবং মুসলমান রমণী হিন্দুর পক্ষপাতিনী হইয়াছে। কবির। যেন কোন সমাজেই বাস করেন না, তাহারা যেন যথেচ্ছাচারী—কিন্তু তাহাদের হাতে সত্যের যাদুকাঠি ছিল, তাহারই জোরে তাহারা সৰ্ব্বত্র বিজয়-কুণ্ডল কর্ণে পরিয়াছে। পাঠকের নিকট সব কথাই ভাল ও স্বাভাবিক বলিয়া বোধ হইয়াছে, সৰ্ব্বত্রই গীতিকাগুলি অশ্রুর উপহার পাইয়াছে। কবিরা এমন একস্থানে যাইয়া আসন লইয়াছেন, যাহা সমাজের উদ্ধে—সমস্ত অমুশাসনের উদ্ধে। আমি বিস্ময়ের সহিত এই গাথা-সাহিত্যে লক্ষ্য করি—ইহার এত দুৰ্জ্জয় সাহস, এরূপ নিৰ্ভীকতা, এরূপ স্বচ্ছন্দ ও সরল ভঙ্গীতে সত্য বলিবার সাহস কোথায় পাইলেন ? ইহার সাম্প্রদায়িক কলহ-দ্বন্দের উপরে- আমরা যেখানে বসিয়া কিচির-মিচির করিতেছি, তাহার বহু উদ্ধে এই সকল ভরত-পক্ষী র্তাহাদের স্বর-মুধালহরী বিতরণ করিতেছেন। ডিরেক্টর ওটেন্‌ সাহেব