পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান උ)ව বাহিরে যে সাধনা করিতেছিল, ইসলাম গ্রহণ করিয়া তাহারা তাহা ছাড়ে নাই। সুফী-গুরুগণ তাহাদিগকে অনেক নূতন তত্ত্ব শিখাইয়াছিলেন এবং তাহারাও ইসলামকে এদেশের উপযোগী করিয়া নূতন গড়ন দিতে ছাড়ে নাই। এই লেন-দেনের কারবারে সুফী-মত বঙ্গদেশে এক অপরূপভাবে পুষ্টি লাভ করিয়াছিল। গোড় সম্প্রদায়ের বিরক্ত হওয়ার কোন কারণই নাই। র্যাহারা শত সহস্ৰ বৎসরের সংস্কৃতি লইয়া মুসলমান হইয়াছেন, তাহারা তাহাদের পূর্ব পুরুষের অবদান বিস্তুত হইবেন কিরূপে ? এই বঙ্গদেশ প্রেম ও ভক্তির স্বীয় নিকেতন, সেই প্রেম-পঙ্কজ হস্তে লইয়া এককালে মহাযানী বৌদ্ধ তাহার বুদ্ধ ও পরে গুরুর পায়ে অঞ্জলি দিয়াছে ৷ পর যুগে মুসলমান হুইয়া তাহারা তাহাদের হৃৎপদ্ম যে প্রাণ-প্রিয় হজরতের পায়ে দিবে, তাহাতে বিরক্ত হইবার কোন কারণ নাই। তাহাদের নিজের ঘরে যে ফুল-পল্লব আছে, তাহ লইয়া তাহারা মসজিদে প্রবেশ করিয়াছে। তৰ্দ্দার তাহার তাহাদের অন্তর-দেবতার প্রতি প্রাণের অনুরাগ সহজেই বুঝাইয়া দিয়াছে। যে সকল উপকরণ তাহাদের নিজস্ব, যে অনবদ্য ও দুর্লভ কোমলতা বাঙ্গালী প্রকৃতি-সুলভ ও যাহ। তাহার শত সহস্ৰ বৎসরের সাধনায় লাভ করিয়াছে, তাহা দিয়া যদি তাহারা অন্তরের কথা বুঝায়, তবে তাহাতে বাধা দেওয়ার কোন কারণই নাই | সুফীর মুসলমান হইয়াও বৌদ্ধ ধৰ্ম্মের কোমল অংশ ও দেহ-তত্ত্ব ছাড়িতে পারে নাই। সেই কোমলতায় হাফেজ ও সাদার অপূৰ্ব্ব আধ্যাত্মিকতাপূর্ণ ইঙ্গিত রূপকের কবিতায় ফুটিয়া উঠিয়াছে। যে কোন সংস্কৃতি বা ধৰ্ম্ম দেশ-বিদেশে ছুটিয়া যায়, তাহ সেই দেশের সিকতা-ভূমি, শুামল-ক্ষেত্র এড়াইয়া যাইতে পারে না, দেশজ উপাদানগুলির যাহা শ্রেষ্ঠ, তাহার সুরভি ও রেণু বহন করিয়া সেই প্রবাহ সার্থক হয়। যখন কোন ধৰ্ম্ম সতেজ ও জীবন্ত থাকে, তখন তাহ পরশ্ব গ্রহণ করিয়া