পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান ৭৩ (২) শমসের আলি—কাব্যের নাম রিজওয়ান শাহ । ইনিও দৌলত কাজির সমকালবৰ্ত্তী। দৌলত কাজির মৃত্যুর পরে ইনি রোসাঙ্গে আসিয়া কবি-যশ: লাভ করিবার প্রত্যাশায় তাহার কাব্য রচনা করিয়াছিলেন, কিন্তু তাহারও অল্পবয়সে মৃত্যু হয়। রিজওয়ান শাহ' কাব্যও একটা প্রাচীন পল্লী-গীতিকার পুনরাবৃত্তি। বাঙ্গালী কবি বিদেশী বিষয়ের অনেক স্থানেই বাঙ্গাল-সুলভ নর-নারীর প্রকৃতি, এমন কি কয়েকটি বাঙ্গালী নায়ক-নায়িকার কথাও যোগ করিয়াছেন । (৩) মোহাম্মদ খান—ইনি বহু কাব্য প্রণেত, যথা—“মকতুল হোসেন’, ‘কাসেমের লড়াই, "দজালের বয়ান’, ‘হানিফার পত্র পাঠ', ‘কেয়ামত নামা’ ইত্যাদি। ‘কেয়ামত নাম’ ১৩৪৬ খৃঃ অব্দে লিখিত । ইনি একজন বিখ্যাত কবি ছিলেন । এনামুল হক্‌ লিখিয়াছেন—“মকতুল হোসেন’ এক সময়ে চট্টগ্রামের ঘরে ঘরে মোহররমের সময় সুর করিয়া দল বাধিয়া পড়া হইত ” এ এই পুস্তকের ভূমিকায় কবি মুসলমান কর্তৃক চট্টগ্রাম বিজয়ের একটি প্রাচীন কাহিনী দিয়াছেন। (৪) আবদুল নবী-ইনি ১৬৮৪ খৃঃ অব্দে ফারসীতে লিখিত— “দাস্তানে আমির হামজা" নামক প্রসিদ্ধ গ্রন্থ অবলম্বন করিয়া তাহার বিরাট আশপৰ্ব্বে সম্পূর্ণ আমির হামজা" কাব্য রচনা করিয়াছেন। পরের জিনিষ যে অবস্থায় থাকে, ঠিক সেইভাবে গ্রহণ করা বাঙ্গালী কবিদের ধৰ্ম্ম নহে। তাহারা অন্তস্থান হইতে কাব্য-কথা কুড়াইয়া আনিলেও তাহাতে স্বীয়-বৈশিষ্ট্যের রাজকীয়-ছাপ মারিয়া তাহা একবারে নিজস্ব করিয়া প্রচার করেন । এই কাব্যেও বাঙ্গালী কবির স্বরটি ফারসীর বিষয়-বস্তুর বর্ণনা ছাপাইয়া উঠিয়াছে, তাহা যেমনই করুণ, তেমনই বাঙ্গালীত্বময় ।

  • আরাক নি রাঞ্জ সভায় বাঙ্গল সাহিত্য ༢ ༠༡: