পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান brసా পালা-গান উচ্চশ্রেণীর হিন্দুর অনুমোদন করেন না ; তাহার। তাহাদের বাড়ীতে এ সকল গান গাহিতে দেন না। ইহাতে প্রাপ্ত-বয়স্ক কুমারীগণের স্বেচ্ছবর গ্রহণের কথা আছে, ব্রাহ্মণ ও ঠাকুর দেবতার প্রতি ভক্তির কথা নাই, ইহাতে ইতর-জাতির নায়কদের প্রসঙ্গ আছে এবং জাতি-নির্বিবশেষে নির্বিবচার বিবাহ-প্রথার কথা আছে।” একজন বিশিষ্ট সংগ্রাহক আমাকে জানাইয়াছেন, — শ্রেষ্ঠ পল্লীগাথাগুলি উদ্ধার করা এখনও কত বড় শক্ত কাজ, তাহা ভুক্তভোগী না হইলে কেহ বুঝিতে পরিবে না। এই সকল গান লিখিত হইত না, গায়কদের মুখে মুখে প্রচারিত হইত। যে পৰ্য্যন্ত ইহাদের প্রচলন বেশী ছিল, সে পৰ্য্যন্ত অনেক গায়েনেরই তাহ কণ্ঠস্থ থাকিত । কিন্তু প্রচলনের ক্ষেত্র সঙ্কীর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গায়েনদের স্মৃতি মলিন হইয়া গিয়াছে। একটি পালাগান বা পল্লীগীতিকা সংগ্ৰহ করিতে হইলে দূর-দূরান্তরবাসী বহু গায়েনের শরণাপন্ন হইতে হয়। কাহারও নিকট একাংশ এবং অপরদের কাছে ভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করিয়া অবশিষ্ট অংশগুলি সংগ্ৰহ করিতে হয় । কিছুদিন পরে আর তাহাও সম্ভবপর হইবে না।” অধিকাংশ স্থানে হিন্দু-মুসলমান নিরক্ষর কৃষকেরাই এই সকল কাব্য রচনা করিয়াছেন, তাহারাই ইহার রস-বোদ্ধা ও শ্রোত। কিন্তু হিন্দুদের যে ব্রাহ্মণ্য-অনুশাসন তাহ মুসলমানদের নাই, সুতরাং বংশ-পরম্পর তাহারা যে উৎসবের পরম প্রসাদ বিলাইয়া আসিয়াছে, সে-রসের অমৃতআস্বাদ ভুলিবার নহে, তাহা তাহারা ছাড়ে নাই। শুনিয়াছি, শরিয়ংবাদী মৌলবীর সঙ্গীতের প্রতি কতকট বিদ্বিষ্ট। তাঁহাতে মনের দৃঢ়তা কমে এবং হৃদয়ের বল ক্ষীণ করে—এই স্বত্র অবলম্বন করিয়া কেহ কেহ এই গীতিকাগুলির উপর নিষেধ-বিধি জারি করিতেছেন। আনন্দই জনসাধারণের শক্তির উৎস, আনন্দই তাহদের সারাদিনের কঠোর পরিশ্রমজনিত