পাতা:প্রায়শ্চিত্ত ১৯২০ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রায়শ্চিত্ত 〉)● বিভা। হেঁটে যাওয়াই আমাকে সাজে, আমি হেঁটেই যাব। তুই সঙ্গে যাবি নে ? রামমোহন । আমি সঙ্গে যাব না তো কে যাবে ? কিন্তু মা, সে সভায় আজ তুমি কিসের জন্যে যাবে ? বিভা ৷ কিসের জন্তে যাব ? সেখানে আমার কোনো আশ নেই বলেই যাব। আমার রাগ অভিমান, আমার সমস্ত বাসনা বিসর্জন করব বলেই যাব। আমি কি এত দূরে এসে অমনি চলে যাব! ষে আজ আসছে তাকে আশীর্বাদ করে যাব না ? নিজের হাতে করে তার হাতে আমার রাজাকে সমপণ করব । রামমোহন । তার পরে ? বিভা । তার পরে ! ভগবানের পৃথিবীতে অভাগাদেরও আশ্রয় মেলে। আমারও মিলবে । রামমোহন। সেইসঙ্গে আমারও মিলবে । আমি তোমাকে আনতে পারি নি, কিন্তু তুমি আমাকে নিয়ে যাবে মা । বিভা। মোহন, আমাকে দুঃখ সইতে হবে সে কথাটা হঠাৎ আমি ভুলে গিয়েছিলুম। ভেবেছিলুম, যা ভোগ হবার তা বুঝি হয়ে চুকে গেছে । রামমোহন। কেন মা, তুমি সতীলক্ষ্মী, তুমি দুঃখ কেন পাও। বিভা। মোহন, সেদিন অপরাধ ষে সত্যি হয়েছিল— সে কথা তো আর ভোলবার নয়! সে অপরাধের শাস্তি না হয়ে তো মিটবে না। সে শাস্তি আমিই নিলুম, প্রায়শ্চিত্ত আমাকে দিয়েই হবে। রামমোহন। মা, তোমার পিতার হাতের আঘাত সেও তুমিই মাথায় করে নিয়েছ, আবার তোমার স্বামীর হাতের আঘাত সেও তুমিই নিলে। কিন্তু আমি বলছি মা, সকলের চেয়ে বড়ো ও পেলে তোমার স্বামী। সে আজ দ্বারের কাছ থেকেও তোমাকে হারালো ।