পাতা:প্রায়শ্চিত্ত ১৯২০ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\Oo প্রায়শ্চিত্ত বড়ো বেঁচে গেলি। ঘরে আলো আছে, আজ নিরাপদে পালাতে পারবি ; কাল আসিস দেখি– অন্ধকারে কেমন না ধরা পড়িস !’ রামচন্দ্র । হা হা হা হ ! মন্ত্রী। হো হে হে হো হো ! সেনাপতি। হি ! রামচন্দ্র । তার পরে ? রমাই। জানি না কী কারণে চোরের যথেষ্ট ভয় হল না, তার পররাত্রেও ঘরে এল। গিন্নি বললেন, “সর্বনাশ হল, ওঠে। কর্তা বললেন, ‘তুমি ওঠে-না।’ গিন্নি বললেন, ‘আমি উঠে কী করব ?’ কর্তা বললেন, ‘কেন, ঘরে একটা আলো জালাও-না, কিছু যে দেখতে পাচ্ছি না।’ গিন্নি বিষম ক্রুদ্ধ ; কর্তা ততোধিক ক্রুদ্ধ হয়ে বললেন, ‘দেখো দেখি । তোমার জন্যই তো যথাসর্বস্ব গেল। আলোটা জালাও । বন্দুকটা আনে৷ ” ইতিমধ্যে চোর কাজকর্ম সেরে বললে, ‘মশাই, এক ছিলিম তামাক খাওয়াতে পারেন ? বড়ো পরিশ্রম হয়েছে।” কর্তা বিষম ধমক দিয়ে বললেন, ‘রোস বেটা ! আমি তামাক সেজে দিচ্ছি। কিন্তু আমার কাছে আসবি তো এই বন্দুকে তোর মাথা উড়িয়ে দেব।’ তামাক খেয়ে চোর বললে, “মশাই, আলোটা যদি জালেন তো বড়ো উপকার হয় । সিদকাটিটা পড়ে গেছে, খুজে পাচ্ছি না।’ সেনাপতি বললেন, “বেটার ভয় হয়েছে। তফাতে থাকৃ, কাছে আসিস নে।’ বলে তাড়াতাড়ি আলো জালিয়ে দিলেন। ধীরে স্বন্থে জিনিসপত্র বেঁধে চোর তো চলে গেল । কর্তা গিন্নিকে বললেন, "বেটা বিষম ভয় পেয়েছে।’ রামচন্দ্র । রমাই, শুনেছ আমি শ্বশুরালয়ে যাচ্ছি ? রমাই। ( মুখভঙ্গি করিয়া ) অসারং খলু সংসারেং সারং শ্বশুরমন্দিরং ! ( সকলের হাস্ত )– কথাটা মিথ্যা নয় মহারাজ ! ( দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া ) শ্বশুরমন্দিরের সকলই সার— আহারটা, সমাদরটা ;