পাতা:প্রায়শ্চিত্ত - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8२ প্রায়শ্চিত্ত বসন্তরায়। প্রতাপ ! ( প্রতাপাদিত্য নিরুত্তরে নিদ্রার ভান করিয়া রহিলেন ) বাবা প্রতাপ ! ( প্রতাপাদিত্য নিরুত্তর ) বাবা প্রতাপ, এও কি সম্ভব ? প্রতাপাদিত্য । ( দ্রুত বিছানায় উঠিয়া বসিয়া ) কেন সম্ভব নয় ? বসন্তরায় । ছেলেমানুষ, অপরিণামদর্শী, সে কি তোমার ক্রোধের যোগ্য পাত্র ? প্রতাপাদিত্য । ছেলেমানুষ ! আগুনে হাত দিলে হাত পুড়ে যায় এ বোঝবার বয়স তার হয় নি ! ছেলেমানুষ ! কোথাকার একটা লক্ষ্মীছাড়া মূৰ্থ ব্রাহ্মণ, নির্বোধদের কাছে দাত দেখিয়ে যে রোজকার করে থায়, তাকে স্ত্রীলোক সাজিয়ে, আমার মহিষীর সঙ্গে বিদ্রুপ করবার জন্যে এনেছে— এতটা বুদ্ধি যার জোগাতে পারে, তার ফল কী হতে পারে সে বুদ্ধিটা আর তার মাথায় জেগোলো না! দুঃখ এই, বুদ্ধিটা যখন মাথায় জোগাবে তখন তার মাথাও শরীরে থাকবে না। বসন্তরায় । আহা, সে ছেলেমানুষ। সে কিছুই বোঝে না । প্রতাপাদিত্য । দেখো পিতৃব্যঠাকুর, যশোরের রায়বংশের কিসে মান-অপমান সে জ্ঞান যদি তোমার থাকবে, তবে কি ওই পাকা মাথার উপর মোগল-বাদশার শিরোপা জড়িয়ে বেড়াতে পার ! তোমার ওই মাথাটা ধূলিতে লুটাবার সাধ ছিল, বিধাতার বিড়ম্বনায় তাতে বাধা পড়ল। এই তোমাকে স্পষ্টই বললুম। খুড়ামহাশয়, এখন আমার নিদ্রার সময় । [ বসন্তরায়ের দিকে পিছন করিয়া চোখ বুজিয়া শয়ন বসন্তরায়। প্রতাপ, আমি সব বুঝেছি— তুমি যখন একবার ছুরি তোল তখন সে ছুরি একজনের উপর পড়তেই চায় ; আমি তার লক্ষ্য হতে সরে পড়লুম বলে আর-একজন তার লক্ষ্য হয়েছে। ভালো প্রতাপ,