পাতা:বংশ-পরিচয় (অষ্টম খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বুদ্ধদেব। ܗ অশ্বের দ্বারা আকৰ্ষিত রথে আরোহণ করিয়া রাজকুমার সিদ্ধার্থ নগরপ্ৰবেশ করিলেন। নাগরিকগণ মহোল্লাসে। তঁহাকে অভ্যর্থনা করিল ; কিন্তু এই ভীষণ জনতার মধ্যে রাজকুমার একটি বৃদ্ধ লোককে দেখিতে পাইলেন, সেই লোকটি মৃত্যু-যন্ত্রণায় তখন ছট্‌ফট্‌ করিতেছিল। সিদ্ধার্থ রথের সারথি, চন্নাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “ওহে ঐ যে শ্বেতকেশ, নু্যজদেহ, জীর্ণকায় লোকটি কে ?” চন্না উত্তর করিল, “এই লোকটি একসময়ে মাতৃ-অঙ্কে শিশু ছিল, যৌবনে খুব বলশালী, আমোদপ্ৰিয় যুবক ছিল, সে সময়ে প্ৰঞ্চেন্দ্ৰিয়ের যথেষ্ট ভোগও করিয়াছে, লোকটি এখন বৃদ্ধ হইয়াছে, কালের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ইহার দৈহিক আকার-প্রকার সকলেরই পরিবর্তন হইয়াছে—তেজস্বী যুবক আজ জীৰ্ণ শীর্ণ বৃদ্ধে পরিণত হইয়াছে।” রাজকুমার জিজ্ঞাসিলেন, “ওহে ! আমাকেও কি ইহার মত জীৰ্ণ শীর্ণ হইতে হইবে ?” চন্না বলিল “ই ।” তখন রাজকুমার চীৎকার করিয়া বলিলেন, “তাহা হইলে সকল মানুষকেই কালক্রমে এইরূপ হইতে হয়।” সিদ্ধার্থ রথ ফিরাইয়া বাড়ীতে আনিতে আদেশ করিলেন এবং পথিমধ্যে আরও দুইটি মৰ্ম্মস্তুদ দৃশ্য দেখিতে পাইলেন। দেখিতে পাইলেন, একটি রোগগ্ৰস্ত লোকের সমস্ত দেহ ফুলিয়াছে, সর্বাঙ্গে ক্ষত হইয়াছে, আর একটি মৃতদেহকে চারিজন লোকে কঁাদিতে কঁাদিতে বহন করিয়া লইয়া যাইতেছে। আর একটি দৃশ্য দেখিতে পাইলেন, সে দৃশ্যটি হইল। এই যে, একজন ভিক্ষু প্ৰশান্তমনে, উৎফুল্লচিত্তে যাইতেছিলেন। রাজকুমার সিদ্ধার্থ সারথিকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “ওহে সকল মানুষকেই কি এই প্রকার জরা, ব্যাধি, জন্ম-মৃত্যুর হাতে নিষ্পেষিত হইতে হয় ?” সারথি উত্তর করিল, “স্থা হইতে হয়। কালের প্রভাব নষ্ট করিবার কাহারও সাধ্য নাই। আজ যে শিশু আছে কাল সে যুবক হইবে, আর আজ যে যুবক কালক্রমে তাহাকে শিথিল-অঙ্গ বৃদ্ধে পরিণত