পাতা:বংশ-পরিচয় (অষ্টম খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/২৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন । R\, গিয়া বলিলেন, “রাজা কৃষ্ণচন্দ্ৰকে রাজস্ব পরিশোধের জন্য এক বৎসরের সময় দিয়া মুক্তি দেওয়া হউক।” নন্দকুমারের হাতের ক্রীড়া-পুত্তলি নবাব পরদিন রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে ঐ সৰ্ত্তে মুক্তি দিলেন। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের বুঝিতে বাকি রহিল না যে, তাহার মুক্তির মূলে পণ্ডিত জগন্নাথ তর্কপঞ্চাননের চেষ্টা নিহিত । তদবধি রাজা কৃষ্ণচন্দ্ৰ তর্কপঞ্চাননের আর কোনরূপ অনিষ্ট করিবার চেষ্টা করেন নাই । আজও রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের বংশধরগণ ফুলিয়া গ্রামে পণ্ডিত জগন্নাথের বংশধরগণের শিষ্যস্বরূপ বাস করিতেছেন । এই ভাবে সুখ, সমৃদ্ধি, মান, প্ৰতিপত্তির মধ্যে পণ্ডিত জগন্নাথের জীবনের ৬২ বৎসর অতিক্রান্ত হইল। তিনি এই সময়ে দারুণ শোক প্ৰাপ্ত হইলেন। তঁহার পতিগতপ্ৰাণা, সতীসাধবী সহধৰ্ম্মিণী এই সময়ে স্বৰ্গারোহণ করিলেন। দ্ৰৌপদীর শোকে জগন্নাথ বিশেষ দুঃখিত হইলেও যথারীতি কৰ্ত্তব্য কৰ্ম্ম করিয়া যাইতে লাগিলেন। কিছুদিন পরে তঁহার এক আত্মীয় তাহাকে বলিলেন যে, আপনার বয়স ৬২ বৎসর হইলেও শরীর পঞ্চবিংশতি বর্ষীয় যুবার ন্যায়, আপনি যদি অনুমতি করেন, তবে আপনার জন্য একটি মেয়ে দেখি । তর্কপঞ্চানন তাহার প্রতি কুপিত হইয়া এরূপ প্ৰস্তাব প্ৰত্যাখ্যান করিলেন। স্ত্রীবিয়োগের পর হইতে জগন্নাথের ভগবদুপাসনা উত্তরোত্তর বাড়িয়া উঠিল। তপ, জপ, সন্ধ্যা, আহ্নিক, পূজাৰ্চনা পূৰ্বাপেক্ষা বৃদ্ধি পাইল। তিনি একদিকে যেমন সন্ধ্য-বন্দন পূর্বাপেক্ষা অধিক পরিমাণে করিতে লাগিলেন, তদ্রুপ কীৰ্ত্তন শুনিতেও পূর্বাপেক্ষা অধিকতর আগ্ৰহ দেখাইতে লাগিলেন। এমন কি নিজের গ্রাম হইতে অন্য গ্রামেও তিনি কীৰ্ত্তন শুনিবার জন্য যাইতেন। কখনও কখনও তিনি ছাত্রগণকে সঙ্গে লইয়া গান শুনিতে যাইব্ৰেন এবং তঁহার এরূপ স্মরণশক্তি ছিল যে, উভয় দলে কি কি গান হইয়াছে, সেগুলি তিনি