পাতা:বংশ-পরিচয় (অষ্টম খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/২৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R80 বংশ-পরিচয় । অসাধারণ ভোজনশক্তি ছিল। একদা কালীঘাটে গিয়া তিনি এক শিষ্যের বাটীতে উপস্থিত হন। শিষ্যগণ প্ৰসাদ পাইবার আশায় একটি ছাগ আনিয়া মাংস রাধিতে দেয়। তর্কপঞ্চানন ভ্ৰমফ্রমে মাংসে লবণের পরিমাণ বেশী দিয়া বসেন এবং খাইবার সময় দেখেন যে, মাংসে লবণ বেশী হইয়াছে। তিনি ভাবিলেন, এই মাংস শিষ্যগণকে দিলে নিশ্চয়ই তাহারা মনে করিবে যে, গুরুদেব রন্ধন করিতে পারেন না। এই ভাবিয়া তিনি সেই একটা পাঠার মাংস সমস্ত নিঃশেষ করিয়া ফেলিলেন । অতঃপর ১২১৪ সালের আশ্বিন মাসে ১১৩ বর্ষ বয়ঃক্রমকালে বিজয়া দশমীর দিন জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন প্ৰতিমার সহিত পদব্রজে গঙ্গাতীরে যান এবং বলেন তিনি আর ঘরে ফিরিবেন না, গঙ্গাতীরেই দ্বাদশ দিন অতিবাহিত করিবেন। পরিজনবর্গ তাড়াতাড়ি বঁাশ খুটি দিয়া তাহার বাসের জন্য একখানি ছোট খড়ের ঘর প্রস্তুত করিয়া দিল, জগন্নাথ সেই ঘরে দ্বাদশ দিন অতিবাহিত করিতে লাগিলেন। প্ৰত্যেক পৌত্রকে তিনি দশ সহস্র টাকা দিবার ব্যবস্থা করিলেন, নিজ শ্ৰাদ্ধ ও দৌহিত্রদের জন্য ছত্ৰিশ হাজার টাকা বরাদ্দ করিয়া এবং চারি হাজার টাকা আয়ের সম্পত্তি ও বহুতর উদ্যান ও পুষ্করিণী দুর্গোৎসবের জন্য উইল করিয়া দিয়া ঠিক বারদিনের দিন সজ্ঞানে তিনি গঙ্গাতীরে দেহত্যাগ করিলেন। র্তাহার বংশধগণের মধ্যে বৈকুণ্ঠনাথ ন্যায়রত্ন, রাধাবল্লভ তর্করত্ন, কমলাকান্ত ন্যায়বাচস্পতি, রামদাস তর্কবাচস্পতি প্ৰভৃতি জন্মগ্রহণ করিয়া তাহার বংশমৰ্য্যাদা অক্ষুন্ন রাখিয়াছিলেন। আজ আর সে বাণিজ্যপোতবহুল ত্ৰিবেণীও নাই, আর ত্ৰিবেণীর গৌরবরত্ন জগন্নাথ তর্কপঞ্চাননও নাই !