পাতা:বংশ-পরিচয় (অষ্টম খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৩১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বংশ-পরিচয় । মাত্রায় ব্যস্ত হইলেন। তিনি তুকারামের নিকট একখানি পত্র প্রেরণ করিয়া তাঁহাকে রাজ-দরবারে আমন্ত্ৰণ করিলেন। কিন্তু তুকারাম এক দীর্ঘ প্ৰত্যুত্তরে শিবাজী:মহারাজের আমন্ত্রণ প্ৰত্যাখ্যান করিলেন। সেই পত্রে তুকারাম লিখিলেন, মহারাজ ধনী, ঐশ্বৰ্য্যশালী, রাজচক্ৰবৰ্ত্তী ; আমি দীন-দরিদ্র ভিখারী ; ধনীর প্রাসাদে ধনীর অবস্থানই শোভা পায়, কদাচি দরিদ্রের নহে। অতএব মহারাজ এ বিষয়ে আমাকে অব্যাহতি দিবেন। আর মহারাজের প্রতি আমার এই উপদেশ যে, সর্বদা ধৰ্ম্মের দিকে মতিগতি রাখিবেন এবং অপত্যনির্বিশেষে প্রজাপালন করিবেন। কদাচ প্ৰজার উপর অযথা অত্যাচার করিবেন নাইত্যাদি। শিবাজী:মহারাজ তুকারামের এই চিঠি পাইয়া তুকারামের উপর অসন্তুষ্ট না হইয়া বরং সাতিশয় সন্তুষ্ট হইলেন। তিনি এবার স্বয়ং মণি-মুক্ত ও বহুমূল্য রত্ন লইয়া লোহাগাভা নামক স্থানে তুকারাম-দর্শনে আসিলেন। তুকারাম শিবাজীর এই সমস্ত উপহারের দিকে আদৌ ভ্ৰক্ষেপও করিলেন না। শিবাজী রামদাস স্বামীর শিষ্য ছিলেন, সাধু-সন্ন্যাসীর উপর তাহার প্রগাঢ় শ্রদ্ধা-ভক্তি ছিল, তুকারামের ত্যাগ দেখিয়া তাহার উপর তাহার শ্রদ্ধার ভাব আরও বাড়িয়াই উঠিল, তিনি নতমস্তকে তুকারামের উপদেশসমূহ গ্ৰহণ করিলেন। এই ঘটনায় আমাদের মনে পড়ে, মহাপ্ৰভু শ্ৰীশ্ৰীচৈতন্যদেব ও রাজা প্ৰতাপ রুদ্রের কথা । , উড়িষ্যার রাজা প্ৰতাপ রুদ্র মহাপ্রভুর চরণ দর্শন করিবার জন্য রামানন্দ রায়, বাসুদেব সার্বভৌম দ্বারা কত প্রকারে মহাপ্রভুর নিকট নিবেদন করিয়াছিলেন, কিন্তু মহাপ্ৰভু তঁহাদিগকে বলিয়াছিলেন “হেন কথা কভু মুখে নাহি আনি আর । আনিলে হেথায় মোরে দেখিবে না। আন ।”