পাতা:বংশ-পরিচয় (চতুর্দ্দশ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৫০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৰ্দ্ধমানের পালবংশ VAS প্ৰাচীন ঝাড়খণ্ড বা বৰ্ত্তমান সাওতাল পরগণার পূর্বে প্রাচীন সুস্ত বা রাঢ়ামণ্ডল অবস্থিত বলিয়া বর্ণিত হইয়াছে। এই প্ৰাচীন রাঢ়ামণ্ডলকে কতক পরিমাণে বৰ্ত্তমান ইংরাজ রাজত্বের বদ্ধমান বিভাগ বলিয়া বৰ্ণনা করা যাইতে পারে। এই অঞ্চল বহু প্ৰাচীনকাল হইতেই এক বিশিষ্ট শ্রেণীর ক্ষত্ৰিয়জাতির আবাসভূমি ছিল। মহাভারতের সভাপর্বে ২৯ অধ্যায়ে ভীমসেনাদির দিগ্বিজয়-প্রসঙ্গে এবং মহাকবি কালিদাস-কৃত রঘুবংশের ৪র্থ সর্গে, রঘুৱাজার দিগ্বিজয়-প্রসঙ্গে এই সুম্ভদেশীয় রাজগণের বর্ণনা পাওয়া যায় । শ্ৰদ্ধেয় শ্ৰীযুক্ত রমাপ্রসাদ চন্দ এবং পূজনীয় রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রভৃতি বিশিষ্ট ঐতিহাসিকগণের লিখিত গৌড়বঙ্গের ইতিহাস পাঠ করিলেও দেখা যায়, খৃষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দী হইতে ত্ৰয়োদশ শতাব্দী পৰ্য্যন্তও এই রাঢ়ামণ্ডল বহুতর বিশিষ্ট ক্ষত্ৰিয় বংশের আবাসভূমি বলিয়া প্রমাণিত হইয়াছে। কর্ণসুবর্ণের গুপ্তবংশীয় সম্রাটগণের বা গৌড়ের পালবংশীয় সম্রাটগণের বা সেনবংশীয় সম্রাটগণের সকলেরই এই রাঢ়ামণ্ডলে আদিনিবাস ছিল। বঙ্গদেশীয় কবি ঘনরাম চক্ৰবৰ্ত্তী-রচিত ‘ধৰ্ম্মমঙ্গলে’ অজয়নদের তীরবত্তী ঢেকুরীগড়ের মহারাজা কৰ্ণ সেন এবং তৎপুত্র রাজা লাউসেনের কথা পাওয়া যায়। এই লাউসেন মঙ্গল-কোটের, বৰ্দ্ধমানের এবং সিমুলার রাজার কন্যাগণকে বিবাহ করেন। পূৰ্ব্বোক্ত গুপ্ত, পাল বা সেনবংশীয় নরপতিগণও চেন্দি, হৈহয়, চান্দেল, রাঠোর প্রভৃতি ভারত-প্রসিদ্ধ ক্ষত্ৰিয়বংশসমূহে পরিণয়কাৰ্য্য সমাধা করায় এবং তাঁহাদের মধ্যে অনেকে বহু বহু অশ্বমেধযজ্ঞাদি সম্পন্ন করায় তাহারা যে ক্ষত্ৰিয় ছিলেন সে বিষয়ে অণুমাত্ৰও সন্দেহ নাই । গৌড়ের পাল-সম্রাটগণ প্ৰায় পঞ্চশত বৎসর ধরিয়া রাঢ়, বারেন্দ্ৰ, বঙ্গ, কলিঙ্গ ও মগধে সাম্রাজ্য পরিচালনা করিয়াছিলেন। তাহারা মূলতঃ ক্ষত্রিয় হইলেও তাঁহাদের মধ্যে কয়েকজন সম্রাট বৌদ্ধধৰ্ম্ম গ্ৰহণ