পাতা:বংশ-পরিচয় (চতুর্দ্দশ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৫২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিম্বগ্রামের হাজরা-বিংশ V খনন করান। উক্ত ধৰ্ম্মসায়রে অদ্যাপি শীতল রায় ধৰ্ম্মশিলার কামাখ্যা ও ঘটাদি উত্তোলিত হইয়া থাকে এবং শীতল সায়রে ও রামসমুদ্রে ধৰ্ম্মরাজের গাজন বসিয়া থাকে। সাটানন্দী এবং বিদ্বগ্রামের সেনবংশীয়গণ রাজা লাউসেনের প্রতিষ্ঠিত কুলপ্ৰথামত অদ্যাপি ধৰ্ম্মরাজ বা মহালক্ষ্মী ব্যতীত অন্য কোনও দেবদেবীর পূজা করেন না । রাজা ধৰ্ম্মসেনের মৃত্যুর পর তৎপুত্ৰ শ্ৰীমন্ত সেন তঁহার পৈত্রিক জায়গীর আদি লাভ করেন। তিনি তাহার প্রজাবর্গের সুখস্বাচ্ছন্দ্যের জন্য ও তাঁহাদের চাষ-আবাদের জন্য গ্রামের চতুষ্পার্শে বহু খাল বিল দীঘি ও পুষ্করিণী আদি খনন করান ; তন্মধ্যে মুক্ত সাম্বর, ঘড়িদীঘি, সারদীঘি, বড়পুষ্কবিণী ও সানবাধা পুষ্করিণীই বিশেষ প্ৰসিদ্ধ। সায়র, দীঘি ও পুষ্করিণীসমূহের অধিকাংশই অদ্যাবধি বিম্ব গ্রামের হাজরাউপাধিধারী সেনবংশীয়দিগের অধিকারেই আছে। শ্ৰীমন্ত সেন হাজরার মৃত্যুর পর তৎপুত্র রামজয় হাজরা তঁহার জীবিতকাল পৰ্য্যন্ত জায়গীর আদি ভোগ করার পর পরলোকগমন করিলে তৎপুত্ৰ পীরিতরাম হাজরা তঁহার ত্যক্ত সম্পত্তিতে অধিকারী হয়েন। তঁহার আমলে এদেশে বগীর হাঙ্গামা হইয়া বহু লোকের ধনসম্পত্তি নাশ হয়। রাজা পীরিত রাম তাহার বন্ধুবান্ধবগণের সহিত মিলিত হইয়া বগীগণের বিরুদ্ধে বহুবার যুদ্ধ করিলেও তাহদের পুনঃ পুনঃ আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত হইয়। গৃহসংসারাদি ত্যাগ করিয়া সন্ন্যাস অবলম্বন করেন এবং পশ্চিমাঞ্চলে তীর্থ যাত্রা করেন। তঁহার অবর্তমানে মহলী-মজকুরাদি জায়গীরসমূহ নবাব-সরকারে রাজস্ব বাকী পড়ায় বাজেয়াপ্ত হইয়া যায় ; যৎসামান্যমাত্র অবশিষ্ট থাকে। বিম্বগ্রাম অঞ্চলে মেয়েদের মধ্যে এ সম্বন্ধে এখনও কিম্বদন্তী আছে যে, “হেমন্তসেন গা বসালে শ্ৰীমন্ত দিলে দীঘি, পীরিতিরাম সব খোয়ালে দেশ লুটেছে ঠগী” । ।