পাতা:বংশ-পরিচয় (ত্রয়োদশ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ve বংশ-পরিচয় বিলাত যাত্ৰা করেন । ইহাদের মধ্যে সুরেন্দ্ৰনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় বিলাত যাইবার জন্য পিতৃ-অনুমতি গ্ৰহণ করিয়াছিলেন । অবশিষ্ট দুইজন বিহারিলাল গুপ্ত ও রমেশচন্দ্ৰ দত্ত রাত্ৰিতে গোপনে বাটা হইতে পলায়ন করিয়া জাহাজ উঠিয়াছিলেন। বিলাত যাইবার ব্যবস্থা ইহারা ইহাদের অভিভাবকগণকে না জানাইয়া নিজের গোপনে গোপনেই করিয়াছিলেন। কারণ, তখনকার কালে বিলাত যাওয়া সহজ ছিল না। তখন বিলাত যাত্ৰা করিলে সমাজচ্যুতি অবশ্যম্ভাবী ছিল। তখন হিন্দুৱ পক্ষে বিলাত-যাত্ৰা কিরূপ বিপত্তিজনক ছিল, তাহা আজিকার দিনে অনুমানেই বুঝিতে পারা যায়। জাহাজে যে তিনখানি টিকিট খরিদ করা হইয়াছিল সেগুলি সুরেন্দ্ৰনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামেই খরিদ করা হইয়াছিল। “সুরেন্দ্ৰনাথ ও তঁহার দুইজন বন্ধুর জন্য”-এই পরিচয়েই র্তাহারা টিকিট কিনিয়াছিলেন। এই তিন যুবকের মধ্যে সুরেন্দ্রনাথের নাম ভারতের আবালবৃদ্ধবনিতার পরিচিত। সুরেন্দ্ৰনাথ দেশসেবাকেই জীবনের ব্ৰত বলিয়া গ্ৰহণ করিয়াছিলেন । রমেশচন্দ্ৰ সুরেন্দ্রনাথের এই পবিত্ৰ ব্ৰতের উল্লেখ করিয়া বলিয়াছিলেন, ইহা অপেক্ষ মহত্তর ব্ৰত আর নাই । রমেশচন্দ্ৰ যখন বিলাত গমন করেন তখন তিনি বি-এ পরীক্ষার জন্য প্ৰস্তুত হইতেছিলেন। বিহারিলাল গুপ্তও প্ৰসিদ্ধ সিবিলিয়ান ছিলেন। ইনি কলিকাতা হাইকোর্টের জজ হইয়াছিলেন এবং জজিয়তি করিতে করিতেই অবসর গ্ৰহণ করেন। রমেশচন্দ্ৰ বিভাগীয় কমিশনার পর্য্যন্ত হইয়াছিলেন, কিন্তু তাহাও কায়েমীরূপে নহে। তঁহার মত যোগ্য ব্যক্তিকেও তখনকার কালে এই পদটীও পাকা বা কায়েমীভাবে দেওয়া হয় নাই। রাজকাৰ্য্যেও তিনি বিশেষ যোগ্যতার পরিচয় দিয়াছিলেন। কেবল রাজকাৰ্য্যে কেন, অন্যান্য ক্ষেত্রেও তঁাহার যোগ্যতা পরিস্ফুট হইয়াছিল ।