পাতা:বংশ-পরিচয় (ত্রয়োদশ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SR8 ংশ-পরিচয় সেই সময়ে রায়তদের অসুবিধার বিষয় তিনি উপলব্ধি করিয়াছিলেন। জমীদারেরা তখন ইচ্ছামত রায়তদের খাজনা বৃদ্ধি করিতেন এবং জমি হইতে উৎখাতও করিতে পারিতেন। সকল জমীদারই যে এইরূপ অত্যাচার রায়তদের উপর করিতেন তাহা নহে ; তবে কেহ কেহ। করিতেন। রমেশচন্দ্ৰ তাহাদের নিৰ্য্যাতন হইতে বাঙ্গালার রায়তদিগকে উদ্ধার করিবার জন্য উহাদের কষ্টকর অবস্থা সম্বন্ধে একখানি পুস্তিকা রচনা করেন। উহা প্ৰকাশিত হইবার পর প্রথমে জমীদার ও গবর্ণমেণ্ট কর্তৃক উপেক্ষিত হইয়াছিল। কিন্তু রমেশচন্দ্র নিরুৎসাহ হইবার পাত্ৰ নহেন। তিনি ধীরভাবে এই বিষয়ের অনুসন্ধান করিয়া প্ৰকৃত তথ্য সংগ্ৰহ করিতে লাগিলেন ও মধ্যে মধ্যে সেসকল বিষয়ে লিখিতেও থাকিলেন। কিছুদিন পরেই গবমেণ্ট প্রজাস্বত্ব আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা বুঝিতে পারিলেন। বাঙ্গালার তদানীন্তন রাজস্ব বিভাগীয় সেক্রেটারী স্যার এণ্টনী ম্যাকডোনেল অবশেষে এই সম্বন্ধে এক আইনের খসড়া-রচনায় ব্ৰতী হইলেন। তিনি যুবক রমেশচন্দ্রের নিকট হইতে যে সমস্ত তথ্য প্ৰাপ্ত হইতেন সেই-- গুলি হইতে র্তাহার প্রভূত সাহাষ্য ও উপকার হইত। তিনি এই বিষয় সরকারী গেজেটে উল্লেখ করিয়া এইরূপ মন্তব্য প্ৰকাশ করেন যে, রমেশচন্দ্রের নিকট হইতে আমি এ সম্বন্ধে যে মূল্যবান উপকরণ লাভ করিয়াছি, এরূপ মূল্যবান উপকরণ বা সাহায্য আর কাহারও। নিকট হইতে পাই নাই। অবশেষে এই আইনের খসড়াই বড়লাট লর্ড ডাফরিণের সময়ে আইনে পরিণত হয়। ইহাতে বাঙ্গালার রায়তেরা যে সাহায্য চাহিতেছিল তাহা তাহারা লাভ করে। ইহারই নাম-১৮৮৫ খ্ৰীষ্টাব্দের বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন । অসহায় দরিদ্র অজ্ঞ বাঙ্গালার কৃষক ও রায়তদিগের কল্যাণের জন্য রমেশচন্দ্ৰ দত্তের এই প্ৰয়াস চিরকাল ইতিহাসে সুবর্ণীক্ষরে লিখিত থাকিবে।