পাতা:বংশ-পরিচয় (ত্রয়োদশ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Voor ংশ-পরিচয় সাস্তুনাস্থল-সংসারের তুচ্ছতা ও ক্ষুদ্র স্বার্থের মধ্যে এক মহত্ত্বের আদর্শলোক, দৈনন্দিন মানবজীবনের অবসাদ ও অস্বাস্থ্যের মধ্যে সৌন্দর্য্যের এক নিভৃত নিকুঞ্জবন সৃজন করিতে পারে, তবেই তঁহার এই কীৰ্ত্তি তাহার উপযুক্ত গৌরব লাভ করিতে পরিবে । * * * বিদ্যাসাগর বাঙ্গালা ভাষার প্রথম যথার্থ শিল্পী ছিলেন। তৎপূর্বে বাঙ্গালায় গদ্যসাহিত্যের সুচনা হইয়াছিল, কিন্তু তিনিই সর্বপ্রথমে বাঙ্গালা গদ্যে কলা-নৈপুণ্যের অবতারণা করেন। ভাষা যে কেবল ভাবের একটা বুলিমাত্র নহে, তাহার মধ্যে যেন তেন প্রকারেণ কতকগুলা বক্তব্য বিষয় পুরিয়া দিলেই যে কৰ্ত্তব্য সমাপন হয় না, বিদ্যাসাগর দৃষ্টান্ত দ্বারা তাহাই প্ৰমাণ করিয়াছিলেন। তিনি দেখাইয়াছিলেন যে, যতটুকু বক্তব্য তাহা সরল করিয়া, সুন্দর করিয়া এবং সুশৃঙ্খল করিয়া ব্যক্ত করিতে হইবে। আজিকার দিনে এ কাৰ্য্যটিকে তেমন বৃহৎ বলিয়া মনে হইবে না, কিন্তু সমাজ-বন্ধন যেমন মানুষ্যের বিকাশের পক্ষে অত্যাবশ্যক, তেমনি ভাষাকে কলাবন্ধনের দ্বারা সুন্দরীরূপে সংযমিত না করিলে সে ভাষা হইতে কদাচ প্ৰকৃত সাহিত্যের উদ্ভব হইতে পারে না । সৈন্যদলের দ্বারা যুদ্ধ সম্ভব, কেবলমাত্ৰ জনতার দ্বারা নহে;-জনতা নিজেকেই নিজে খণ্ডিত, প্ৰতিহত করিয়া থাকে, তাহাকে চালনা করাই কঠিন। বিদ্যাসাগর বাঙ্গালা গদ্য ভাষার উচ্ছঙ্খল জনতাকে সুবিভক্ত, সুবিন্যস্ত, সুপরিচ্ছন্ন এবং সুসংযত করিয়া তাহাকে সহজ গতি এবং কাৰ্য্যকুশলতা দান করিয়াছিলেন। এখন তাহার দ্বারা অনেক সেনাপতি ভাব-প্রকাশের কঠিন বাধাসকল অতিক্ৰম করিয়া সাফল্যলাভে সমর্থ হইয়াছেন। কিন্তু যিনি সেই সেনানীর রচনাকৰ্ত্ত, যুদ্ধজয়ের যশোভাগ সৰ্ব্বপ্রথমে তঁহাকেই দিতে হয়।” স্বৰ্গীয় রজনীকান্ত গুপ্ত বিদ্যাসাগর মহাশয় সম্বন্ধে লিখিয়াছেন ঃ“বিদ্যাসাগর ক্ষণজন্ম মহাপুরুষ । পৃথিবীতে যেসকল মহাপুরুষ মহৎ