পাতা:বংশ-পরিচয় (ত্রয়োদশ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূদেব মুখোপাধ্যায় qq তর্কভূষণমহাশয়ের পরিবারে দেবতা-ব্ৰাহ্মণের প্রতি অচলা ভক্তি ও নিষ্ঠা ছিল। ভূদেব-জননীর ভক্তির মাত্ৰা অসাধারণ ছিল। স্বামীর প্ৰতি তঁহার অপরিসীম ভক্তি ছিল । তিনি প্ৰত্যহ স্বামীর পাদোদক পান না করিয়া জলগ্ৰহণ করিতেন না । ভূদেব যখন তিন চারি বৎসরের শিশু, সেই সময়ে তিনি একবার খেলিতে খেলিতে শিশুসুলভ কৌতুহলবশতঃ তঁহার পিতার চৰ্ম্মপাদুকা পায়ে দিয়াছিলেন। ইহাতে ভূদেব-জননী শিশুর এই অজ্ঞানকৃত অপরাধে বিচলিত হইয়া অধৰ্ম্মের আশঙ্কা করিয়াছিলেন এবং পারিবারিক অকল্যাণের সম্ভাবনায় সন্ত্রস্ত হইয়াছিলেন। অবশেষে ঐ জুতা শিশু ভূদেবকে দিয়া মাথায় বহাইয়া ও নিজে পুনঃ পুনঃ উহাকে প্ৰণাম করিয়া। তবে নিশ্চিন্ত হইয়াছিলেন । হাতে খড়ি হইবার পূর্বেই ভূদেববাবু তঁহার পিতার নিকট হইতে মুখে মুখে অনেকগুলি সংস্কৃত শ্লোক শিখিয়াছিলেন। ঐসকল শ্লোক তিনি প্ৰত্যহ প্ৰাতে পিতৃসমীপে আবৃত্তি করিতেন। পিতা পুত্ৰ একসঙ্গে ভাটা খেলিতেন, তীর ছড়িতেন, প্ৰাতে ও সন্ধ্যায় একত্র দৌড়াদৌড়ি করিতেন । পিতা পুত্রকে বাগানে লইয়া গিয়া ভিন্ন ভিন্ন গাছ ও পাতা ফুল দেখাইয়া তাহদের নাম বলিয়া দিতেন। পঞ্চমবর্ষ বয়সের পূর্বে ভূদেববাবুর অক্ষরপরিচয় হয় নাই। পিতামহ সাৰ্বভৌম মহাশয় ভূদেববাবুর হাতে খড়ি দেন। বাড়ীতে কিছু বাঙ্গালা পড়িয়া ও সংস্কৃত পড়িতে আরম্ভ করিয়া নবম বৎসর বয়সে ভূদেববাবু সংস্কৃত কলেজে ভৰ্ত্তি হন এবং সেখানে প্ৰায় দুই বৎসর অধ্যয়ন করেন। সংস্কৃত কলেজে ভৰ্ত্তি হইয়া ভূদেববাবু মন দিয়া পড়াশুনা করিতে লাগিলেন। এই সময়ে উলাষ্টন নামক এক ইংরেজ ও দুইজন বাঙ্গালী সংস্কৃত কলেজে ইংরেজী শিক্ষা দিতেন। উলাষ্টন সাহেব একদিন ভূদেবের আকৃতি প্ৰকৃতিতে আকৃষ্ট হইয়া