পাতা:বংশ-পরিচয় (দ্বাদশ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শুড়িপুষ্করিণীর সাহানা-বংশ O N) স্নেহশীলা অম্বিকা দেবী একমাত্ৰ পুত্রবধূকে ছাড়িয়া থাকিতে কষ্টবোধ করিতেন। বলিয়া তাহাকে শৈশবাবধি প্ৰায় সমস্ত জীবনই শ্বশুরালয়ই কাটাইতে হইয়াছে। অম্বিকা দেবীর স্নেহ-যত্নে পালিত বলিয়া পুত্ৰবধুতেও শ্বশ্রাদেবীর সহৃদয়ত, দানশীলতা, পরদুঃখকাতরতা প্ৰভৃতি ংক্রামিত হইয়াছে। বাঁকুড়ার বাড়ীর অনতিদূরে যে সকল দরিদ্রলোক বাস করে তাহদের অসুখের সংবাদ পাইলেই তিনি সাণ্ড, বালি, কাগজি লেবু প্ৰভৃতি দিয়া থাকেন এবং অন্নপথ্যের দিন নিজগৃহে পাচক ব্ৰাহ্মণের দ্বারা পথ্য তৈয়ারী করাইয়া পঠাইয়া দেন । বিজয়ার দিন বাঁকুড়ার যে পল্লীতে সত্যকিঙ্কর বাস করেন সেই পল্লীর লোহার, খয়রা, বাউরী প্ৰভৃতি জাতির স্ত্রী পুরুষ বালক বালিকা সকলেই তাহদের “মা”কে বিজয়া-প্ৰণাম করিতে আইসো, বিনোদিনী দেবীও সকলকে মিষ্টান্নাদি দিয়া স্নেহপূর্ণ সন্তাষণে আপ্যায়িত করেন। বিনোদিনী দেবী অত্যন্ত সন্তানবৎসল এবং পতিপরায়ণা, পুত্ৰকন্যাদের লালন-পালনের ভার দাসদাসীর উপর অর্পণ করিয়া তিনি নিশ্চিন্ত থাকিতে পারিতেন না । পুত্ৰকন্যার লালন-পালনের জন্য রাত্রির পর রাত্ৰিজাগরণবশতঃ তাহার স্বাস্থ্যভঙ্গ হয় এবং তিনি রক্তপিত্ত রোগে আক্রান্ত হন এবং দীর্ঘ আট নয়। বৎসর কাল এলোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, কবিরাজী, হেকিমী প্ৰভৃতি চিকিৎসকের চিকিৎসাধীন থাকেন। সেই অৰ্দ্ধমৃত শয্যাশায়িত অবস্থাতেও তিনি স্বামী ও পুত্ৰকন্যাগণের আহারাদির জন্য এরূপ ভাবে লক্ষ্য রাখিতেন যে, পাচক ব্ৰাহ্মণ ও দাসদাসিগণকে সমস্ত কাৰ্য্য তঁাহার আদেশক্রমেই করিতে হইত। পরিবারে দাস-দাসী ও পুত্ৰ-কন্যার মধ্যে আহাৰ্য্যের বিশেষ পার্থক্য নাই ; তাহার ব্যবস্থায় দাসদাসীরা পৰ্য্যন্ত দধি দুগ্ধ পাইয়া থাকে। বাকুড়ায় আসিয়া তিনি মহিলা সমিতিতে যোগ দিয়াছেন এবং সমিতির যাবতীয় জনমঙ্গলকর কাৰ্য্যে তঁহার পূর্ণ সহানুভূতি আছে ।