পাতা:বংশ-পরিচয় (দ্বাদশ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/১৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রায় শ্ৰীযুক্ত নগেন্দ্ৰনাথ গঙ্গোপাধ্যায় বাহাদুর Y') প্ৰতি বৎসর রাসযাত্রার সময় অদ্বৈত মহাপ্ৰভুর লীলাস্থল শ্ৰীধাম শান্তিপুরে বহুসহস্ৰ লোকের সমাগম হয়। তখন শান্তিপুর বাওয়ার জন্য রেলওয়ে লাইন হয় নাই। পূর্ব বঙ্গ, উত্তর বঙ্গ, শ্ৰীহট্ট , আসাম প্রভৃতি স্থানের শান্তিপুর-যাত্রী লোক রাণাঘাট ষ্টেশনে নামিতেন এবং সেখান হইতে পদব্ৰজে দশ মাইল পথ যাইয়। শান্তিপুরে উপস্থিত হইতেন । এই সকল যাত্রী প্ৰায়ই রাণাঘাটে একদিন অপেক্ষা করিতেন এবং ফিরিবার সময় টোণে স্থানাভাব-বশতঃ দুই তিন দিন অপেক্ষা করিতে বাধ্য হইতেন । রামলাল তাহার বহির্বাটী ও বাগান-বাড়ীতে এইসকল লোককে স্থান দিতেন, পীড়িতগণের চিকিৎসা করিতেন এবং তীর্থ-দর্শনে আসিয়া অপরের অনুগ্রহণে যাহ্বাদের বাধা ছিল না। তাহাদিগের সেবার ব্যবস্থা করিতেন । বিশিষ্ট কুলীনবংশে জন্মগ্রহণ করায় তিনি রাণাঘাট ব্ৰাহ্মণ-সমাজে শীর্ষস্থান অধিকার করিয়াছিলেন । কিন্তু কৌলীন্য-মৰ্য্যাদা রক্ষার জন্য তিনি সাধারণ লোকের ন্যায় সঙ্কীর্ণমনা ছিলেন না। রাণাঘাটের জনৈক সন্ত্রান্ত ব্ৰাহ্মণ ভাগলপুর-নিবাসী বিলাত-প্ৰত্যাগত কোন খ্যাতনামা আত্মীয়ের সংসারে অনেকদিন বাস করেন । পরে তিনি রাণাঘাটে আসিলে ব্ৰাহ্মণগণ তঁহাকে সমাজচু্যত করিতে বদ্ধপরিকর স্কন । তখন বিলাত-ফেরতের সংস্পর্শের জন্য সমাজের কঠোর শাসন ছিল । বিপন্ন ভদ্রলোক উদারচেতা, রামলালের সহায়তা লওয়ায় তিনি সর্বাগ্রে তাহার বাড়ী নিমন্ত্রণ গ্ৰহণ করিয়া তাহাকে দায়মুক্ত করেন । এই প্রকার উদারতার অনেক নিদর্শন তাহার চরিত্রে পাওয়া | চুয়াডাঙ্গার সন্নিকট কোন এক পল্লীগ্রামের একটি রোগক্লিষ্ট নীচ জাতীয় লোক একদিন সপরিবারে রামলালবাবুর দ্বারে উপস্থিত হয়।