পাতা:বংশ-পরিচয় (দ্বাদশ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/১৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রায় শ্ৰীযুক্ত নগেন্দ্ৰনাথ গঙ্গোপাধ্যায় বাহাদুর S 8 আদালতের আশ্রয় গ্ৰহণ করিতে হয়। বিচারের পূর্বদিন জয়লাভের আশায় উক্ত বন্ধু তঁাহার কুল-পুরোহিতের দ্বারা একটী বিরাট স্বস্ত্যয়নের আয়োজন করেন। স্বস্ত্যয়ন শেষ হইলে পুরোহিতমহাশয়কে ফল জিজ্ঞাসা করিলে তিনি বলেন, “যতো ধৰ্ম্মস্ততে জয়ঃ” । ইহাতে ভদ্রলোক মহাক্ৰাদ্ধ হইয়া চিরদিনের জন্য তাঁহাকে পৌরোহিত্য হইতে বিদায় দেন। এই ঘটনা রামলালের কর্ণগোচর হইলে তিনি পুরোহিত মহাশয়ের অবমাননায় আন্তরিক সহানুভূতি প্ৰকাশ করেন এবং তাহার ক্ষতি পূরণের জন্য বরাবর সাহায্য করিতেন। তাহার পুত্ৰগণও রামলালবাবুর নিকট অনেকদিন এইরূপ সাহায্য পাইয়াছেন। বলা বাহুল্য, বিচার-ফলে পুরোহিত মহাশয়ের বাক্য সফল হয় এবং ধৰ্ম্মেরই 5 | রামলাল ও তঁহার পত্নী উভয়েরই ইচ্ছা তঁহাদের একমাত্ৰ পুত্ৰ নগেন্দ্ৰনাথের বিবাহ অল্প বয়সে দিবেন। উপনয়নের অল্পদিন পরেই শান্তিপুর-নিবাসী স্বনামখ্যাত সীতানাথ মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের জ্যেষ্ঠ কন্যা শ্ৰীমতী বিশ্বেশ্বরী দেবীর সহিত নগেন্দ্ৰনাথের বিবাহ হয়। সীতানাথ শান্তিপুর রামনগরপাড়ার একজন বদ্ধিষ্ণু লোক ছিলেন। তিনি ব্যবসায়ে অনেক উন্নতি করেন । তখনকার কালে তিনি বড়লোক বলিয়া প্ৰসিদ্ধ ছিলেন । বৃহৎ অট্টালিকা, তৎসংলগ্ন নিজের স্থাপিত সুন্দর শিবমন্দির, পুষ্পেপাদ্যান ইত্যাদিতে র্তাহার বাড়ী সুশোভিত ছিল ; দোল, দুর্গোৎসব প্ৰভৃতি ক্রিয়া মহাসমারোহে সম্পন্ন হইত এবং বাড়ীতে অন্যান্য বিগ্রহের নিত্যসেবা হইত। বিবাহের কিছু দিন পরে বিশ্বেশ্বরী দেবী যখন প্ৰথম শ্বশুরালয়ে আসেন, সেই বৎসর রামলালবাবু কয়েক সহস্ৰ শিশি:কুইনাইন খরিদ করেন এবং কয়েক মাসের মধ্যেই ইহার দর প্ৰায় ছয়গুণ হওয়ায় তিনি যথেষ্ট লাভবান হন। তিনি সর্বদা বলিতেন, তাহার সুলক্ষণ পুত্রবধূকে গৃহে আনায় তঁহার সংসারে লক্ষ্মী অবতীর্ণ হইলেন ।