পাতা:বংশ-পরিচয় (নবম খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীশ্ৰীমাতা সারদা দেবী ১২৬৬ সালের বৈশাখমাসে শ্ৰীরামকৃষ্ণের জন্মভূমি কামারপুকুর হইতে দুই ক্রোশ পশ্চিমে শ্ৰীশ্ৰীসারদা দেবীর আবির্ভাব হয়। তঁহার পিতার নাম শ্ৰীরামচন্দ্ৰ মুখোপাধ্যায়। তখন সমাজে বাল্যবিবাহ প্ৰচলিত ছিল, ৫৭ বৎসরের ছোট বালিকাকে খেলার পুতুলের কােছ হইতে ছিনাইয়া লইয়া তাহাকে পাত্ৰস্থা করিত। তাহার ফল। এই হইত যে, এইরূপ সুকুমার বয়সে বালিকার বিবাহ হওয়ায় সে শ্বশুর-শ্বাশুড়ীকে পিতা-মাতার ন্যায় ভক্তি করিত, তাই তখনকার বধূর আগমনে ভাইয়ে ভাইয়ে পৃথকান্ন না হইয়া একান্নবৰ্ত্তী হইয়াই থাকিত। ঠাকুর রামকৃষ্ণের যখন বিবাহ হয়, তখন তাহার বয়স ২৪ বৎসর মাত্ৰ । দক্ষিণেশ্বরে মায়ের মন্দিরের পূজারীরূপে তিনি উন্মত্তপ্ৰায় হইয়াছেন, তাই তাহার আত্মীয়-স্বজন তাহার মাথা ঠাণ্ডা করিবার জন্য-তাহার পাগলামী সারাইবার জন্য এই পাঁচ বৎসর বয়স্ক বালিকার সহিত বিবাহ দেন। কিন্তু বিবাহের পরই অমনি ঠাকুর আবার যে পাগল ক্ষুদিরাম সেই ক্ষুদিরামরূপে দক্ষিণেশ্বরে আসিয়া পূজাপার্বণে বসিলন। ভ্ৰান্ত লোকে বুঝিল নারীর দেহ-সৌন্দর্ঘ্যে বিমুগ্ধ হইয়া সংসার-কারাগারে আবদ্ধ হইবার জন্য রামকৃষ্ণের মস্তিষ্কের বিকৃতি হয় নাই-রামকৃষ্ণ সংসার-কারাগার ছাড়িবার জন্য পথের অন্বেষণ আরিতেছেন। বিবাহের দুই বৎসর পরে রামকৃষ্ণ একবার শ্বশুরালয়ে গিয়াছিলেন, কিন্তু সারদা দেবীর বয়স তখন সবে সাত বৎসর মাত্র, তিনি লজায় স্বামীর কাছেই পৰ্য্যন্ত আসেন নাই। ইহার পর দীর্ঘ আট বৎসর কাল মায়ের সহিত ঠাকুর রামকৃষ্ণের আর দেখা-সাক্ষাৎ হয় নাই। মা এখন আর সাত বৎসর-বয়স্ক বালিকা ন’ন, তিনি পঞ্চদশবর্ষীয়া উদ্ভিন্নযৌবন।