পাতা:বংশ-পরিচয় (নবম খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সীতাদেবী সীতা রাবণ কর্তৃক অবরুদ্ধ থাকিয়াও সতীত্ব অক্ষুন্ন রাখিতে পারিয়াছেন কি না, ইহা সৰ্বজনসমক্ষে পরীক্ষার জন্য সীতাকে জলন্ত অগ্নিকুণ্ডে প্ৰবেশ করিতে বলা হয়। সীতাদেবী বলেন, “যদি আমি মনে প্ৰাণে রামচন্দ্র ভিন্ন অন্য পুরুষের চিন্তাও না করিয়া থাকি, তাহা হইলে অগ্নি আমাকে স্পর্শও করিবে না।” সত্যও হইল। তাহাই। প্ৰজ্বলিত হুতাশন নিস্তেজ হইল, যেমন সীতা তেমনই অগ্নির ভিতর হইতে বাহির হইলেন। রামচন্দ্ৰ বিভীষণকে লঙ্কার রাজপদে প্ৰতিষ্ঠা করিয়া লক্ষ্মণ ও সীতাকে লইয়া অযোধ্যায় প্ৰত্যাগমন করিলেন এবং ভারতের হাত হইতে রাজদণ্ড লইয়া অপত্যনির্বিশেষে প্ৰজা পালন করিতে লাগিলেন । কিন্তু নানা জনে সীতা-চরিত্রে কলঙ্কের আরোপ করিতে লাগিল । বলিতে লাগিল, দশানন রাবণের পুরীতে অবরুদ্ধ থাকিয়া সীতা নিশ্চয়ই আপন সতীত্ব রক্ষা করিতে পারেন নাই। প্ৰজাগণের মনোবাঞ্ছা পরিপূরণের জন্য অগত্যা শ্ৰীরামচন্দ্ৰ সীতাকে বনবাসে পাঠাইতে সঙ্কল্প করিলেন। সীতাদেবী তখন পাচ মাসের গর্ভবতী। লক্ষ্মণ রামচন্দ্রের আদেশে সীতাকে তপোবন দেখাইবার ছলে বাল্মিকীর তপোবনে নির্বাসিত করিয়া আসিলেন। সীতা লক্ষ্মণের মুখে নিজের নির্বাসনের বাৰ্ত্তা শুনিয়া লক্ষ্মণকে বলিলেন, “লক্ষ্মণ! তুমি আৰ্য্যপুত্রকে (রামচন্দ্ৰকে ) বলিও, আমি তঁহার প্রতি একটুও অসন্তুষ্ট হই নাই, সবই আমার অদৃষ্টের দোষ।” অতঃপর সীতার রোদন শুনিয়া বাল্মিকী আসিয়া সীতাকে লইয়া । যাইলেন। বাল্মিকীর আশ্রমে সীতা লালিত-পালিত হইতে লাগিলেন। তথায় তাহার কুশ ও লব নামে দুইটি পুত্ৰ জন্মগ্রহণ করিল। বাল্মিকী রাম-সীতার কাহিনীপূৰ্ণ “রামায়ণ” নামক মহাকাব্য লিখিয়া কুশ ও লবকে তাহা শিক্ষা দিতে লালিগেন ।