পাতা:বংশ-পরিচয় (ষষ্ঠ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৪১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V87 বংশ-পরিচয় ইতিহাস এই “মোহিনী মিল।” যখন বঙ্গব্যবচ্ছেদ আন্দোলনে বাগীস্থানীয় নেতৃবৃন্দ দেশের এক প্ৰান্ত হইতে অপর প্রান্ত পৰ্য্যন্ত মুখরিত করিতেছিলেন, তখন এই নীরবকৰ্ম্মী মোহিনীমোহন স্বদেশের লুপ্ত শিল্পের উদ্ধার এবং অন্ন-সমস্যার সমাধান-কল্পে নির্জনে দেশমাতৃকার চরণে যে অর্ঘ্য স্থাপন করেন তাহারই পরিণতি এই “মোহিনী মিল” । স্বতই মনে হয়, ঋষিকল্প মোহিনীমোহন যেন দিব্যচক্ষে দেখিয়াছিলেন যে, তঁহার বড় সাধের এই তৎকালীন ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান একদিন বাঙ্গালার তথা ভারতের গৌরবের বস্তু হইয়া দাড়াইবে । মোহিনীমোহন এই মিলের সংস্থাপয়িত হইলেও স্বদেশী আন্দোলনের ফলে দেশবাসীর হৃদয়ে শিল্পোন্নতির প্রতি যে একটা প্ৰবল আগ্ৰহ জন্মিয়াছিল, “মোহিনী মিল” তাহারই সুফল সন্দেহ নাই। দেশ-সেবার এই নূতন পন্থা বঙ্গদেশে ইতিপূর্বে কেহ লক্ষ্য করে নাই। স্বদেশী আন্দোলনের চিন্তাধারায় দেশের আর্থিক তির উপায়-উদ্ভাবন-কল্পে এই বিশিষ্ট উপায়টির দিকে যে সমস্ত মনীষীর দৃষ্টি আকৃষ্ট হইয়াছিল স্বৰ্গীয় মোহিনীমোহন তঁহাদের অন্যতম এবং মিলের পরিকল্পনা মোহিনীমোহনের নিজস্ব । মোহিনীমোহন প্রথমতঃ তাহার কৃতবিদ্য পুত্রদ্বয়ের সহায়তায় ব্যক্তিগত সম্পত্তিরূপে এই বিরাট অনুষ্ঠানের সূত্রপাত করেন । এই প্ৰকার জাতীয় অনুষ্ঠানের ফলাফল তখন অনিশ্চিত ছিল । কেন না, বস্ত্ৰশিল্প তখন বাঙ্গলায় অজ্ঞাত ছিল, ল্যাঙ্কাশায়ার তখন ভারতের লজানিবারণ কিরিত এবং তাহারই অঙ্গুলি-সঙ্কেতে কাপড়ের মূল্যের হ্রাস-বৃদ্ধি হইত। সে সময়ে বোম্বে ও আমেদাবাদ ব্যতীত ভারতবর্ষের অন্যান্য প্রদেশে বস্ত্রশিল্পে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির সংখ্যা খুব কম ছিল। বাঙ্গলায় একজনও ছিলেন না বলিলে অত্যুক্তি হয় না। বৃটিশ শাসনের ২০০ বৎসরের মধ্যে বঙ্গদেশে এই জাতীয় শিল্পানুষ্ঠানের বিশেষ কোন চেষ্টা পরিলক্ষিত না হইলেও এই