পাতা:বংশ-পরিচয় (ষষ্ঠ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চন্দ্ৰনাথের মোহান্তগণ । VO রাজক কখনও সেই দুগ্ধবতী গাভী দোহন করিয়া একবিন্দু দুগ্ধ পাইত না । রাজক ইহার কোন কারণ ঠাওরাইয়া স্থির করিতে পারিত না। একদিন সে গাভী ছাড়িয়া দিয়া তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ চলিতে লাগিল, অদূরে সে একটা সুন্দর পাহাড় দেখিতে পাইল । দেখিল, সেই গাভী পাহাড়ের উপর নাইয়া এক জায়গায় দাড়াইয়া রহিল, আর আবিরামধারে গাভীর বঁাট হইতে দুধ ঝরিষা পড়িতে লাগিল। রাজক সেই স্থানে যাইয়া দেখে যে, একটী মনোহর শিবলিঙ্গ বিরাজিত রহিয়াছেন । সেইদিন রাত্রে রাজক স্বপ্নে দেখিল যেন ভগবান মহেশ্বর তাহাকে বলিতেছেন যে, তিনি ত্রিপুরাসুন্দরীর সহিত এই চন্দ্রনাথে আসিয়া বসবাস করিতেছেন । রাজক তাহ শুনিয়া তৎপরদিনই মহেশ্বরের সেবার জন্য একজন ব্ৰাহ্মণকে নিযুক্ত করিল। ক্ৰমে সেই রাজক অতুল ঐশ্বৰ্য্যের অধীশ্বর হইয়া পড়িল। ত্রিপুরার মহারাজ এই সংবাদ পাইয়া তথায় যাইয়া শম্ভুনাথের যথাবিহিত পূজা করিলেন। মে স্থানে শম্ভুনাথ আবিভূতি হইয়াছিলেন, সেই স্থান মহারাজের অধীন। মহারাজ লোকজন নিযুক্ত করিয়া শম্ভুনাথের চারিপাশ্বে খুড়িতে আরম্ভ করিলেন, কিন্তু যত খোড়েন, কিছুতেই বিশ্বনাথের মূল আর পান না। অবশেষে মহারাজ স্বপ্ন দেখিলেন যে, মহাদেব তাহাকে বলিতেছেন, যতই কেন খোড় না, কিছুতেই তাহাকে সে স্থান হইতে স্থানান্তরে লাইতে পরিবে: না । তখন মহারাজ সেই লিঙ্গের উপর একটী মন্দির রচনা করিয়া দিলেন। তদবধি শম্ভুনাথ জগতে প্ৰকটিত চাইলেন। আর একটী উপাখ্যান এই--একদা এক কাঠুরিয়া কাঠ কাটিবার জন্য চন্দ্ৰনাথ পাহাড়ে গিয়াছিল। কাঠ কাটিতে কাটিতে তাহার কুঠারের ধার গেল, তখন সে একটি স্ফটিক প্ৰস্তর দেখিতে পাইল। সেই প্ৰস্তরে কুঠার শাণাইবার জন্য তাহা স্পর্শ করিবামাত্র তাহার লোহার কুঠারখানা সোণা হইয়া গেল। এই অয়স্কান্ত মণিই পাশ্বনাথ শিব।