পাতা:বংশ-পরিচয় (ষষ্ঠ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৪৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রায় সাহেব রাধাগোবিন্দ রায় 8 U এই কমললোচন রায় সাহেবও নিঃসন্তান। তঁহার আর কোন সন্তানাদির সম্ভাবনা নাই দেখিয়া জেলা মুর্শিদাবাদের পাঁচখুপী গ্রামের বৈষ্ণবশিরোমণি, পরম ভাগবত, সাধু জগচ্চন্দ্র ঘোষ মহাশয়ের নিকট হইতে রাধাগোবিন্দকে দত্তক পুত্ৰ গ্ৰহণ করেন। জগচ্চন্দ্ৰ ঘোষ মহাশয় সংসারী হইলেও সংসারে তঁহার আসক্তি ছিল না । সাধু-সজ্জনের সেবা, ধৰ্ম্মালোচনা এবং ভগবচ্চিন্তাতেই তঁহার সময় অতিবাহিত হইত। এইরূপ শুনা যায়, তিনি একটী মোহর দক্ষিণাসহ স্বীয় পুত্র রায় সাহেব কমললোচন ঘোষ মহাশয়কে দান করিয়া ভেক লইয়া সংসারাশ্রম হইতে বিদায় গ্ৰহণ করেন এবং ভগবানের লীলামুখরিত, তঁহার পূত পদব্রজে পবিত্রীকৃত শ্ৰীবৃন্দাবনের শান্তিময় কোলে গিয়া আশ্রয় গ্ৰহণ করেন । অবশেষে এই স্থানেই প্ৰায় শতবর্ষ বয়সে নশ্বর দেহ ত্যাগ করিয়া বৈকুণ্ঠেশ্বরের পাদপদ্মে লীন হন। রাধাগোবিন্দকে দত্তক গ্ৰহণ করিয়াই কমললোচন তাহার শিক্ষার ব্যবস্থা করিয়া দিলেন । তিনি সংস্কৃত ও ফারসি শিক্ষা করিতে লাগিলেন । বাল্যকালে তঁহাকে ইংরাজী শিক্ষার অবসর দেওয়া হয় নাই। পিতার পরলোক-গমনের পর প্রয়োজনবোধে তিনি স্বতঃপ্ৰবৃত্ত হইয়া ইংরাজী ভাষা শিক্ষা করিয়াছিলেন। পূজ্যপাদ ৬/গৌরকিশোর পণ্ডিত বাবাজী, ৮ রামচন্দ্ৰ শিরোমণি ও কৃষ্ণচন্দ্ৰ ন্যায়বাগীশ মহাশয়গণের নিকট রাধাগোবিন্দ বৈষ্ণবদর্শন, সংস্কৃত দর্শন ও সাহিত্যাদি বিষয়ে শিক্ষালাভ করিয়াছিলেন। কৈশোরে অতিক্ৰম করিয়া যৌবনে পদার্পণ করিতে না করিতে অর্থাৎ তঁাহার ষোল বৎসর বয়ঃক্রমকালে ১৮৬৬ খ্ৰীষ্টাব্দে রায় সাহেব কমললোচন মহাশয় সংসারলীলা সম্বরণপূর্বক সাধনোচিতধামে গমন করেন। এই অল্প বয়সে বিপুল সম্পত্তির অধিকার হইয়া রাধাগোবিন্দ বংশের প্রাচীন “রায় সাহেব” উপাধি লাভ করেন এবং সমাজে দিনাজপুরের রায় সাহেব নামে পরিচিত হন।