পাতা:বংশ-পরিচয় (ষষ্ঠ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৫০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রায় সাহেব রাধাগোবিন্দ রায় 8S ছিলেন । প্ৰকৃত বৈষ্ণবের যে লক্ষণ তাহা তাহার জীবনের দৈনন্দিন প্ৰত্যেক কাৰ্য্যের মধ্যে স্বতঃই ফুটিয়া উঠিত। একজন প্ৰবল প্ৰতাপশালী জমিদার হইয়াও তিনি লোক ব্যবহারে তুণাদপি নীচ হইয়া থাকিতেন, তিরুর মত র্তাহার সহিষ্ণুতা ছিল এবং সর্বদা হরিনাম কীৰ্ত্তন ও ধৰ্ম্মপ্রসঙ্গ লইয়া সাধুসউজ্জনসহবাসে দিনযাপন করিতেন । তঁহার বেশভূষাতেও কোন আড়ম্বর ছিল না। তঁহাকে জানা না থাকিলে, তঁহার বেশভূষা দেখিয়া তাহাকে রায় সাহেব বলিয়া লোকে বুঝিতে পারিত না। প্ৰকৃত বৈষ্ণবের মত তিনি অতি দীনভাবাপন্ন এবং বিবিধ সৎগুণে ভূষিত ছিলেন । সাক্ষাৎ হইলে প্ৰথম সম্ভাষণ তিনিই করিতেন, অপরকে সে অবসর দিতেন না। এমন কি একটী বালকের সহিত কথা কহিতে, কি আলাপ করিতে হইলেও তিনি বিনীতভাবেই কথা কহিতেন । আজিকালিকার বড়লোক বা জমিদারগণের ন্যায় তিনি অনধিগম্য ছিলেন না ! সামান্য ইতর লোক, এমন কি একটী বালক পৰ্য্যন্ত অসঙ্কোচে তঁাহার নিকট উপস্থিত হইয়া তাহার সহিত কথা কহিত । তিনি প্ৰত্যহ ব্ৰাহ্মমুহূৰ্ত্তে গাত্ৰোথান করিতেন। বাড়ীতে যে রাধাগোবিন্দ বিগ্ৰহ প্ৰতিষ্ঠিত ছিল, নিম্নলিখিতভাবে তাহার সেবাৰ্চিনা এবং ভোগীরাগাদি সম্পন্ন হইত। কোনওক্রমে তাহার ব্যতিক্রম হইবার উপায় ছিল না। অতি প্ৰত্যুষে মঙ্গল, আরতি, প্ৰভাতী-কীৰ্ত্তন । লুচি, ভাজা ও ক্ষীরের লাডু, ভোগ। বাড়ী প্ৰদক্ষিণ করিয়া সংকীৰ্ত্তন { তাহার পর স্নান, আরতি, ফলমূল, লুচিভোগ । তৎপরে মধ্যাহ্নে রাজভোগ-আধা মণ অন্ন, বহুবিধ তরকারি, বিবিধ মিষ্টান্ন, ভোগ, আরতি ও কীৰ্ত্তন । বৈকালে-রাস, বৈকালী ভোগ-ফলমূল, ডাব, নানাবিধ সরবৎ, ছানা, মাখন, ক্ষীর সর ইত্যাদি । সন্ধ্যায়- আরতি, ২ ঘণ্টা কীৰ্ত্তন । , R