পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (তৃতীয় ভাগ).djvu/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

v- বঙ্কিমচন্দ্রের গ্রন্থাবলী সুন্দরী তালবৃক্ষতলে একটি ইংরেজ দেখিতে পাইয়াছিল । - ইংরেজকে দেখিয়া শৈবলিনী হেলিল না—দুলিল না—জল হইতে উঠিল না । কেবল বক্ষ পর্য্যস্ত জল মধ্যে নিমজ্জন করিয়া, আদ্রবসনে কবরীসমেত মস্তকের অগ্রভাগমাত্র আবৃত করিয়া, প্রফুল্ল রাজীববং জলমধ্যে বসিয়া রহিল । মেঘমধে। আচল সৌদামিনী হাসিল—ভীমার সেই শুমতরঙ্গে এই স্বর্ণকমল ফুটিল । সুন্দরী পলাইয়! গেল, কেহ নাই দেখিয় ইংরেজ ধীরে ধীরে ভালগাছের অন্তরালে অন্তরালে থাকিয় ঘাটের নিকট আসিল . ইংরেজ দেখিতে অল্পবয়স্ক বটে । "গুম্ফ বা শ্মশ্র কিছুই ছিল না । কেশ ঈষৎ কৃষ্ণবর্ণ, চক্ষুও ইংরেজের পক্ষে কৃষ্ণাভ । পরিচ্ছদের বড় জাকজমক এবং চেন,অঙ্গুরীয় প্রভৃতি অলঙ্কারের কিছু পারিপাট ছিল । ইংরেজ ধীরে ধীরে ঘাটে আসিয়া, জলের নিকট vēstfāgi zifal, “I come again fair lady.” শৈবলিনী বলিল, “আমি ও ছাই পূঝিতে পারি ন! l" $szgsi i Oh---ay—that tasty gilbe: ish —L must speak it i sup1 ose zat again, অীয়া হাtয় । শৈ । কেন, যমের বাড়ার কি এই পথ ? ইংরেজ ন! বুঝিতে পারির কহিল, “কিয়া বোলুত৷ হ্যায় ?” শৈ । বলি, যম কি তোমার ভুলিয়। গিয়াছে ? Estasi i qe i John you inean ? **{ জন্ম নহি, হম্‌ লরেন্স । শৈ । ভাল, একট। ইংরেজি কথ! শিখিলাম— লরেন্স অর্থে বাদর । সেই সন্ধ্যাকালে শৈবলিনীর কাছে লরেন্স দুষ্টর কতকগুলি দেশী গালি খাইয়া স্বস্থানে ফিরিয়। গেল । লরেন্স ফষ্টর পুষ্করিণীর পাহাড় হইতে অবতরণ করিয়া আম্রবৃক্ষ তল হইতে অশ্ব মোচন করিয়া তৎপৃষ্ঠে আরোহণপূর্বক টিবিয়ট নদীর তীরস্থ পৰ্ব্বত প্রতিধ্বনি সহিত শ্রুতগতি স্মরণ করিতে করিতে চলিলেন । এক একবার মনে হইতে লাগিল “সেই শীতল দেশের তুষাররাশির সদৃশ যে মেরি ফক্টরের প্রণয়ে বাল্যকালে অভিভূত হইয়াছিলাম, এখন সে স্বপ্নের মত ; দেশভেদে কি রুচিভেদ জন্মে ? তুষারময়ী মেরি কি শিখারূপিণী উষ্ণদেশের সুন্দরীর তুলনীয় ? বলিতে পারি না ।" ফষ্টর চলিয়া গেলে, শৈবলিী ধীরে ধীরে জলাকলস পূর্ণ করিয়া কুস্তকক্ষে বসন্তপন্নারূঢ় মেঘবৎ মন্দপদে গৃহে প্রত্যাগমন করিল যথাস্থান জল রাখিয়া শষ্যাগৃহে প্রবেশ করিল। - তথায় শৈবলিনীর স্বামী চন্দ্রশেখর কম্বলাসনে উপবেশন করিয়া, নামাবলীতে কটিদেশের সহিত উভয় জানু বন্ধন করিম, মৃৎপ্রদীপ-সম্মুখে তুলটে হাতে লেখা পুতি পড়িতেছিলেন। আমরা যখনকার কথা বলিতেছি, তাহার পর এক শত বৎসর অতীত হইয়াছে । চন্দ্রশেখরের বয়ঃক্রম প্রায় চত্বারিংশত বর্ষ। তাহার আকার দীর্ঘ ; তদুপযোগ বলিষ্ঠ গঠন | মস্তক বৃহৎ, ললাটু4প্রশস্ত—তদুপরি চন্দন রেখা । শৈবলিনী গৃহ প্রবেশকালে মনে মনে ভাবিতেছিলেন ‘যখন ইনি জিজ্ঞাসা করিবেন, কেন এত রাত্রি হইল, তখন কি বলির ? কিন্তু শৈবলিনী গৃহমধ্যে প্রবেশ করিলে, চনদশেখর কিছু বলিলেন না । তখন তিনি বহ্মস্থত্রের স্থরবিশেষের অর্থস গ্রহে ব্যস্ত ছিলেন | শৈবলিনী হাসিয়া উঠিল । - তখন চন্দ্রশেখর চাহিয়া দেখিলেন, বলিলেন, “তাজি এত অসময়ে বিদ্যুৎ কেন ?" শৈবলিনী বলিল, “আমি ভাবিতেছি, ন জানি, আমায় তুমি কত বকিবে ?" চন্দ্র । কেন বকিব ? * শৈ । আমার পুকুরঘাট হুইতে আসিতে বিলঙ্গ হইয়াছে, তাই । চন্দ্র । ধটেও ন্ত – এখন এলে না কি ? বিলম্ব হইল কেন ? শৈ একট। গোরা আসিয়াছিল । তা সুন্দরী ঠাকুরবি তখন ডাঙ্গার ছিল, আমার ফেলিক্স দৌড়িয়। পলাইয়। আসিল । আমি জলে ছিলাম, ভয়ে উঠিতে পারিলাম ন। ভয়ে একগল জলে দাড়াইয়া রহিলাম । সেটা গেলে তবে উঠিয় আসিলাম । চন্দ্রশেখর অন্যমনে বলিলেন, “আর আসিও ম৷ ” এই বলিয়! আবার শাস্করভাষে। মনোনিবেশ করিলেন । রাত্রি অত্যস্ত গভীর হইল । তথনও চন্দশেখর প্রম, মায়, স্ফোট, অপৌরুষেয়ত্ব ইত্যাদি তর্কে নিবিষ্ট । শৈবলিনী প্রথামত স্বামীর অন্নব্যঞ্জন তাহার নিকট রক্ষা করিয়া, আপনি আহারাদি করিয়া, পার্শ্বস্ত শধ্যোপরি নিদ্রায় অভিভূত ছিলেন। এ বিষয়ে চন্দশেখরের অনুমতি ছিল--অনেক রাত্রি পর্য্যন্ত তিনি বিদ্যালোচনা করিতেন, অল্পরাত্রে আহার করিয়া শয়ন করিতে পারিভেন না ।