পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).djvu/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* 3 懿 সক্ষম, তাহাকে দোষী মনে করা কি এত গুরুতর অপরাধ ? - কুমতি। ভ্রমর আমাকে দোষী মনে করিয়াছে বলিয়াই আমি দোষী হইয়াছি। সাধুকে চোর বলিতে বলিতে চোর হয়। স্বমতি । দোষটা যে চোর বলে, তার । যে চুরি করে, তার কিছু নয় ? কুমতি । তোর সঙ্গে ঝগড়ায় আমি পারব না । দেখ না, ভ্রমর আমার কেমন অপমানটা করিল ? আমি বিদেশ থেকে আসছি শুনে বাপের বাড়ী চলিয়৷ গেল । সুমতি । যদি সে যাহা ভাবিয়াছিল, তাহাতে তাহার দৃঢ় বিশ্বাস হইয়া থাকে, তবে সে সঙ্গত কাজই করিয়াছে। স্বামী পরদারনিরত হইলে নারীদেহ ধারণ করিয়া কে রাগ না করিবে ? কুমতি । সেই বিশ্বাসষ্ট তাহার ভ্রম —আর দোষ কি ? সুমতি । এ কথা কি তাহাকে একবার জিজ্ঞাসা কৰিয়াছ ? কুমতি । না । সুমতি । তুমি ন জিজ্ঞাস করিয়া রাগ রতেছ, আর ভ্রমর নিতান্ত বালিকা, ন জিজ্ঞাস। রিয়া রাগ করিয়াছিল বলিয়া এত হাঙ্গাম ? সে কাজের কথা নয়, আসল রাগের কারণ কি, বলিব ? কুমতি । কি, বল না । সুমতি । আসল কথা রোহিণী । রোহিণীতে প্রাণ পড়িয়াছে—তাই অার কালো ভোমর ভাল লাগে না । কুমতি । এত কাল ভোমর। ভাল লাগিল কিসে? সুমতি । এত কাল রোহিণী জোটে নাই । এক দিনে কোন কিছু ঘটে না । সময়ে সকল উপস্থিত হয় । আজ রৌদ্র ফুটিয়াছে বলিয়া কাল দুৰ্দ্দিন হইবে না কেন? শুধু কি তাই—আরও আছে। কুমতি । আর কি ? সুমতি । কৃষ্ণকান্তের উইল । বুড় মনে মনে iজালিত, ভ্রমরকে বিষয় দিয়া গেলে বিষয় তোমারই *ছিল। ইহাও জানিত যে, ভ্রমর এক মাসের মধ্যে ভোমাকে উহা লিখিয়া দিবে। কিন্তু আপাততঃ তোমাকে একটু কুপথগামী দেখিয়া তোমার চরিত্র শোধন জন্য তোমাকে মরের আঁচলে বাধিয়া দিয়া গেল । Ý ভ্রমরের উপর রাগিয়৷ উঠিয়াছ

; ,
"ኟ - : " • • :F می: f:

- *్క • . . . . • , . কুমতি । তাহা সত্যই । আমি কি "স্ত্রীর মাসহারা খাইব না কি ? মুমতি । তোমার বিষয় তুমি কেন ভ্রমরের কাছে লিখিয়া লও না ? কুমতি । স্ত্রীর দানে দিনপাত করিব ? সুমতি । আরে বাপ রে ! কি পুরুষসিংহ । তবে ভ্রমরের সঙ্গে মোকদমা করিয়া ডিক্ৰী করিয়া লও না—তোমার পৈতৃক বিষয় ত বটে ? কুমতি । স্ত্রীর সঙ্গে মোকদ্দমা করিব ? সুমতি । তবে আর কি করিবে ? গোল্লায় যাও । - কুমতি । সেই চেষ্টায় আছি । সুমতি । রোহিণী—সঙ্গে যাবে কি ? তখন কুমতিতে সুমতিতে ভারি চুলোচুলি ঘুষোঘুষি আরম্ভ হইল । ত্রিংশক্তম পরিচ্ছেদ আমার এমন বিশ্বাস অাছে যে, গোবিন্দলালের মাত যদি পাক গৃহিণী হইতেন, তবে ফুৎকারমাত্রে এ কাল মেঘ উড়িয়। যাইত। তিনি বুঝিতে পারিয়াছিলেন যে, বধূর সঙ্গে তাহার পুত্রের আস্তরিক বিচ্ছেদ হইয়াছে। স্ত্রীলোক ইহা সহজেই বুঝিতে পারে । তিনি যদি এই সময় সর্পদেশে, স্নেহবাক্যে এবং স্ত্রীবুদ্ধিসুলভ অন্যান্য সকপায়ে তাহার প্রতীকীর করিতে যত্ন করিতেন, তাহা হইলে বুঝি সুফল ফলাইতে পারিতেন ; কিন্তু গোবিনালালের মাতা বড় পাক গৃহিণী নহেন, বিশেষ পুত্রবধু বিষয়ের অধিকারিণী হইয়াছে বলিয়া ভ্রমরের উপরে একটু বিদ্বেষভাবপন্নও হইয়াছিলেন । যে স্নেহের বলে তিনি ভ্রমরের ইষ্টকামনা করিবেন, ভ্রমরের উপর তাহার সে স্নেহ ছিল না । পুত্ৰ থাকিতে পুত্রবধুর বিষয় হইল, ইহা তাঙ্গার অসহ্য হইল। তিনি একবারও অনুভব করিতে পারিলেন না যে, ভ্রমর গোবিন্দলাল অভিন্নসম্পত্তি জানিয়া, গোবিন্দলালের চরিত্রদোষ-সম্ভাবনা দেখিয়া কৃষ্ণকান্ত রায় গোবিনালালের শাসনজক্ট ভ্রমরকে বিষয় দিয়া গিয়াছিলেন । একবারও তিনি মনে মনে ভাবিলেন না যে, কৃষ্ণকান্ত মুম্‌ধু অবস্থায় কতকটা লুপ্তবুদ্ধি হইয়া, কতকটা ভ্রান্তচিত্ত হইয়াই এ অবিধেয় কাৰ্য্য করিয়াছিলেন । তিনি ভাবিলেন যে, পুত্রবধুর সংসারে তাহাকে কেবল গ্রাসাচ্ছাদনের অধিকারিণী এবং অন্নদাস পৌরবর্গের মধ্যে গণ্য