পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).djvu/২১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা । কিন্তু আপনিই ত ভাহাকে ত্ৰিশূল বিধিয়া মারিতে চাহিয়াছিলেন ; আপন হইতেই দুইবার তাহার অসদভিসন্ধি ধর। পড়িয়াছে । বলিতে কি, আপনি মহারাণীর প্রতি দয়াবতী ম৷ হইলে সে সত্য স্বীকার করিত না ; তাহার বধদণ্ড হইত না । এখন তাহার অন্যথা করিতে চান কেন ? জয়ন্তী ! মহারাজ ! আম৷ হইতে ইহা ঘটিয়াছে বলিয়াই তাহার প্রাণ-ভিক্ষ চাহিতেছি । ধৰ্ম্মের উদ্ধার জন্য ত্রিশূলাঘাতে অধৰ্ম্মাচারীর প্রাণবিনাশেও দোষ বিবেচনা করি ন! ; কিন্তু ধৰ্ম্মের এখন রক্ষা হইয়াছে, এখন প্রাণিহত্যা-পাপ হইতে উদ্ধার পাইলার জন্য ব্যাকুল তষ্টয়াছি । গঙ্গারামের জীবন আমাকে ভিক্ষ দিন । রাজা । তাiপনাকে তাদের কিছুষ্ট নাচ । BBB KBS BBBBS BBSDS BBB KKSDB তোমাকে ভিক্ষ। আমি তোমায় এখনই মুক্ত হইবে । কিন্তু ম! ! দি ঈ, আমি তাত ব যোগ্য নাই । iভক্ষ। দিব ন । গঙ্গারামের জীবন তোমাকে বেচিব—মূল দিয়া কিনিতে গুইবে । রস্তা ঈষৎ হস্তের সহিত । কি মূল মহারাজ ? রাজভাণ্ডারে এমন কোন পনেৰ অভাব .ধ, ভিখারিণী তাঙ্গা দিতে পারিখে ? লাজ । রাজভাণ্ডারে নাই --রাজার জীবন । আপনি সেই মধুমতাতারে ঘাটের উপর কমানের নিকট দাড়াঙ্গয় স্বীকার করিয়াছিলেন দুধ, আমি মাহু! পুজি, তাহ পাইব । সে অমূল্য সামগ্ৰী আমাকে দিন—সেই মূল্যে আজ গঙ্গারামের জীবন আপনার নিকট বেচিব । জয়ন্তী ! কি সে অমূল্য আপনি রাজ পাইয়াছেন । সামগ্ৰী মহারাজ ? রাজা । যাহার জন্ত রাজ্য ত্যাগ করিতে পারি, তাই চাহিতেছি । জয়ন্তী । সে কি মহারাজ ? রাজা । শ্ৰীনামে আমার প্রথম মহিষী আমার জীবনস্বরূপ । আপনি দেবী, সব দিতে পারেন । আমার জীবন আমায় দিয়া সেই মূল্যে গঙ্গারামের জীবন কিনিয়া লউন ৷ ” - জয়ন্তী । সে কি মহারাজ ! আপনার ন্যায় ধৰ্ম্মাত্মা রাজাধিরাজের জীবনের সঙ্গে সেই নরাধম পাপাত্মার জীবনের কি বিনিময় হয় ? মহারাজ ! কাণ কড়ির বিনিময়ে রত্নাকর ? রাজা । মা ! জননী যত দেন, ছেলে কি মাকে কখন তত দিতে পারে ? a膏一决引 £8, (to জয়ন্তী । মহারাজ ! আপনি আজ অন্তঃপুরদ্বার সকল মুক্ত রাখিবেন, আর অস্তঃপুরে প্রহরীদিগকে আজ্ঞা দিবেন, ত্ৰিশূল দেখিলে যেন পথ ছাড়িয়া দেয় । আপনার শয্যাগৃহে আজ রাত্রিতেই মূল্য পৌঁছিবে । গঙ্গারামের মুক্তির হুকুম হৌক । রাজ হর্ষে অভিভূত হইয়া বলিলেন, "গঙ্গারামের এখনই মুক্তি দিতেছি ।" এই বলিয়া অনুচরবর্গকে সেইরূপ আজ্ঞা দিলেন । জয়ন্তী বলিলেন, “আমি এই অসুচরদিগের সঙ্গে গঙ্গারামের কারাগারে যাইতে পারি কি ?” রঞ্জি। আপনি যাহা ইচ্ছা করিতে পারেন, কিছুতেই আপনার নিষেধ নাই । - পঞ্চম পরিচ্ছেদ অন্ধকারে কুপের পায় নিম্ন, আদ, বায়ুশূন্ত কারসূচমধ্যে গঙ্গারাম শৃঙ্খলবদ্ধ এক পড়িয় আছে । সেই নিশীথকলেও তাকার নিদ্র। নাই—যে পর্য্যন্ত সে শুনিয়াছে যে, তাহাকে শূলে যাইতে হইবে, সেই পর্যন্ত আর সে ঘুমায় নাই—আহার নিদ্র সকলই বন্ধ । এক দণ্ডে মারা যায়, মৃত্যু তত বড় কঠিন সগু নহে কিন্তু কারাগৃহে একাকী পড়িয়া দিব। রাত্র সম্মুখেই মুতু দণ্ড. ইহ। ভাবন করার অপেক্ষা গুরুতর দণ্ড আর কিছুই নাই । গঙ্গারাম পলকে পলকে শূলে যাইতেছিল । দণ্ডের আর তাহার কিছু অধিক বাকী নাই । ভাবিয়া ভাবিয়া চিত্তবৃত্তিসকল প্রায় নিৰ্ব্বাপিত হুইয়াছিল । মন অন্ধকারে ডুবিয়া রহিয়াছিল—ক্লেশ অনুভব করিবার শক্তি পর্য্যন্ত যেন তিরোহিত হইয়াছিল । মনের মধ্যে কেবল দুটি ভাব এখনও জাগরিত ছিল – ভৈরবীকে ভয়, আর রমার উপর রাগ । ভয়ের অপেক্ষা, এই রাগই প্রবল । গঙ্গারাম আর রমার প্রতি আসক্ত নহে, এখন রমার তেমন আন্তরিক শূত্র আর কেহ নহে । - গঙ্গারাম এখন রমাকে সম্মুখে পাইলে নখে বিদীর্ণ করিতে প্রস্তুত । গঙ্গারামের যখন কিছু চিন্তাশক্তি হইল, তখন কি উপায়ে মরিবার সময়ে রমার সৰ্ব্বনাশ করিয়৷ মরিতে পারিবে, গঙ্গারাম তাহাই ভাবিতেছিল। শূলতলে দাড়াইয়া রমার সম্বন্ধে কি অশ্লীল অপবাদ দিয়া যাইবে, গঙ্গারাম তাহাই কখন কখন ভাবিত । অঙ্গ সময়ে জড়পিণ্ডের মত স্তম্ভিত হইয়া পড়িয়া থাকিত । কেবল মধ্যে মধ্যে বাহিরে অভিষেকের উৎসবের মহৎ কোলাহল