পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).djvu/২২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সীতারাম আসিয়া বেদপাঠ, মন্ত্রপাঠ করেন । পাহারাওয়ালারা বাহির হইতে শুনিতে পায়, কিন্তু দ্বার খুলিলেই সব অন্তৰ্দ্ধান হয় । ( বলা বাহুল্য যে, জয়ন্তী নিজেই রাত্রিকালে ঈশ্বরস্তোত্র পাঠ করেন, পাহারাওয়ালারী তাহাই শুনিতে পায় ) ! রাম । তার পর ? হ্যাম । তার পর এখন আজি সে তিন দিন পুরিল । রাজা টেটর দিয়েছেন যে, কাল এক মাগ চোরকে বেষ্ট জং করিয়া বেত মারা যাবে, যাহার ইচ্ছা হয়, দেখিতে আসিতে পারে । শুন নাই ? রাম । কি দুৰ্ব্ব,দ্ধি ! তর্কালঙ্কার ঠাকুরষ্ট বা কিছু বলেন না কেন ? বড় রাণীই বা কিছু বলেন ন। কেন ? প্লেটে পালাগালির ভয়ে কি ক্টার। আর কাছে আসিতে পারেন না ? প্তম । তার না কি অনেক বলে:ছন । রাজ। বলেন, ভাল, দেবতাই স{স হয়, তবে আপনার রক্ষা আপনিই করিবে, তোমাদের কথা কব:র প্রয়োজন কি ? আর যদি মানুষ হয়, তবে আমি রাস, চারের দও দিব, তে!মাদের কথা কব1র প্রশ্নে। জন কি ? ত৷ এক রক- বলেণ্ডে মন্দ নয়-ঠিক রাম । কথাচ ত ! তা ব্যাপারট। কি হয়- ক’ল দেখতে যেতে হবে । তুমি সবে ? KBB S BB BBS BB SBBB BBSBSS BBB কী গু ..ক না দেখ তে বাবে ? অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ আজ জয়ন্তীর বেত্ৰাঘাত হইবে । রাজ্যে ঘোষণা দেওয়৷ হইয়াছে যে, তাহাকে বিবস্ত্র। করিয়। বেত্ৰাঘাত করা হইবে । প্রভাত হইতেই লোক আসিতে আরম্ভ করিল। বেল অল্প হইতেই দুর্গ পরিপূর্ণ হইল, আর লোক ধরে না । ক্রমে ঠেসাঠেসি, ঘোসঘোষি, পেষাপেষি, মেশামিশি হইতে লাগিল । এই দুর্গমধ্যে আর এক দিন এমনই লোকারণ্য হইয়াছিল— সে দিন রমার বিচার । আজি জয়ন্তীর দণ্ড । বিচার অপেক্ষ দণ্ড দেখিতে লোক বেশী আসিল । নন্দ| বাতায়ন হইতে দেখিলেন, কালো চুল মাথার তরঙ্গ ভিন্ন আর কিছু দেখা যায় না, কদাচিৎ কোন স্ত্রীলোকের মাথায় আঁচল বা কোন পুরুষের মাথায় চাদর জড়ান, সেই কৃষ্ণসাগরে ফেনরাশির ন্যায় ভাসিতেছে। সেই রমার পরীক্ষা নন্দার মনে পড়িল, ২য় – ২৯ ❖ጫ কিন্তু মনে পড়িল যে, সে দিন দেখিয়াছিলেন যে, ' সেই জনার্ণব বড় চঞ্চল, সংক্ষুব্ধ, যেন বাত্যাতাড়িত, রাজপুরুষের কষ্ট্রে শান্তিরক্ষা করিয়াছিল—আজ সকলেই নিস্তব্ধ । সকলেরই মনে রাজ্যের অমঙ্গল আশঙ্ক। বড় জাগরুক। সকলেই মনে মনে ভয় । পাইতেছিল । আঞ্জ এষ্ট লোকারণ্য সিংহ-ব্যাঘ্রবিমন্দিভ মহারণ্য অপেক্ষাও ভয়ানক দেখাইতেছিল । সেই বৃহৎ দুর্গপ্রাঙ্গণের মধ্যস্থলে এক উচ্চ মঞ্চ নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল । তদুপরি এক কৃষ্ণকায় বলিষ্ঠগঠন বিকটদর্শন চণ্ডাল, মূৰ্ত্তিমান অন্ধকারের দ্যায় দীর্ঘ বের হস্তে লইয়। দণ্ডায়মান আছে । জয়ন্তীকে তদুপরি আরোহণ করাইয়।, সৰ্ব্ব-সমক্ষে বিবস্ত্র করিয়| সেই bণ্ডাল বেত্ৰাঘাত করিবে, ইহাই রাজাজ্ঞ । জয়ন্তীকে এখনও সেখানে আনা হয় নাই । রাজ এখন ও তাসেম নাই—আসিলে তবে তাঙ্গকে আন হইবে । মঞ্চের সম্মুখে রাজার জন্য সিংহাসন রক্ষিত হইয়াছে । তাহা বেষ্টন করিয়৷ চiপদার ও সিপাহীগণ দাড়াইয়া আছে । অমাত্যবর্গ তাঞ্জ সকলেই অনুপস্থিত । এমন কুকাণ্ড দেখিতে আসিতে কাহারও প্রবৃত্তি হয় নাই । রাজাও ক৷ তাকেও ডাকেন নাই ! কতক্ষণে রাজ তাসিবেন, কতক্ষণে সেই দণ্ডনীয়। .দবী ব৷ মানবী আসিবে, কতক্ষণে কি হইবে, সেই জষ্ঠ প্রত্যাশাপন্ন হইয়া লোকারণ্য উৰ্দ্ধমুখ হইয়াছিল । এমন সময়ে হঠাৎ লকিব ফুকরাইল ; স্তাবকের। স্তুতিপাঠ করিল । দর্শকের জানল, রাজা আসিতেছেন । রাঞ্জার বেশভূষার কিছুমাত্র পারিপাট্য নাই —বৈশাখের দিনান্তকালের মেঘের মত রাজা আজ ভয়ঙ্করমূৰ্ত্তি । আয়ত চক্ষু রক্তবর্ণ—বিশাল বক্ষ মধ্যে মধ্যে স্ফীত ও উচ্ছ্বসিত হইতেছে, বর্ষণোমুখ জলধরের উন্নমনের ন্যায় রাজা আসিয়া সিংহাসনের উপর বসিলেন । কেহ বলিল না, মহারাজাবিরাজকি জয় ! তখন সেই লোকারণ্য উৰ্দ্ধমুখ হইয়৷ ইতস্ততঃ দেখিতে লাগিল-দেখিল, সেই সময়ে প্রহরিগণ জয়ন্তীকে লইয়া মঞ্চোপরি আরোহণ করিতেছে । প্রহরীর। তাহাকে মঞ্চোপরি স্থাপিত করিয়৷ চলিয়া গেল । কোন প্রাসাদশিখরোপরি উদিত পূর্ণচন্দ্রের ন্যায় জয়ন্তীর অতুলনীয় রূপরাশি সেই মঞ্চোপরি উদিত হইল। তখন সেই সহস্ৰ সহস্র দর্শক উৰ্দ্ধমুখে, উৎক্ষিপ্তলোচনে গৈরিক বসনাবৃতা মঞ্চস্থা অপূৰ্ব্ব জ্যোতিস্ময়ী মূৰ্ত্তি নিরীক্ষণ করিতে লাগিল। সেই উন্নত,