পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).djvu/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(tste রাখিয়া চলিলাম, আপনি অবসরমতে পাঠ করিবেন : অপরাহ্লে আমি পুনৰ্ব্বার আসিব । প্রভুত্তর দিতে চাহেন, তাহাও লইয়। লেখিকার নিকট প্রেরণ করিতে পারিব।” এই বলিয়া ওসমান রাজপুলের নিকট পত্র রাখিয়। প্রস্থান করিলেন । রাজপুত্র একাকী বসিয়া সম্পূর্ণ সংজ্ঞাপ্রাপ্ত হইলে, বিমলার পত্র পাঠ করিতে লাগিলেন । তা|দ্যপাস্ত পাঠ করিয়৷ অগ্নি প্রস্তুত কপির তাহান্তে নিক্ষেপ করিলেন । যতক্ষণ পত্র জ্বলিতে লাগিল, ততক্ষণ তং প্রতি দৃষ্টিপাত করিতে লাগিলেন । যখন পত্র নিঃশেষ দগ্ধ হইয়া গেল, তখন আপনা-আপনি কহিতে লাগি লেন, “স্মৃতিচিহ্ন অগ্নিতে নিক্ষেপ করিয়। নিঃশেষ করিতে পারিলাম : স্মৃতিও ত সন্তাপে পুড়িতেছে, নিঃশেল হয় না কেন ?" জগতসিংহ রীতিমত প্রাতঃরুত্য সমাপন করিলেন । পূজাহ্নিক শেষ করিয়া ভক্তিভাবে ইষ্টদেবতাকে প্রণাম করিলেন ; পরে করযোড়ে উৰ্দ্ধদৃষ্টি করিয়া কহিতে লাগিলেন, “গুরুদেব ! দাসকে ত্যাগ করিবেন না । আমি রাজধৰ্ম্ম প্রতিপালন করিব : ক্ষত্ৰকুলোচিত কার্য্য করিব : ও পাদপদ্মের প্রসাদ ভিক্ষা করি । বিধৰ্ম্মীর উপপত্নী এ চিত্ত শুষ্টতে দুর করিব : তাতাতে শরীর পতন হয়, অন্তকালে তোমাকে পাইব । BBB BBS BBS BBS BBBBS BBBBB যাহা কৰ্ত্তব্য, তাহা করিব । দেখ, গুরুদেব ! তুমি অন্তৰ্য্যামী, অস্তস্তল পৰ্য্যন্ত দৃষ্টি করিয়া দেখ, আর আমি তিলোত্তমার প্রণয়প্রার্থী মচি, আর আমি তাতার দর্শনাভিলাষী নহি : কেবল কাল ভূতপূৰ্ব্বস্তৃতি অনুক্ষণ হৃদয় দগ্ধ করিতেছে । আকাঙ্ক্ষাকে বিসর্জন দিয়াছি, স্মৃতিলোপ কি হইবে না ? গুরুদেব ! ও পদপ্রসাদ ভিক্ষা করি । নচেৎ স্মরণের যন্ত্রণ সহ্য श्श न ।” প্রতিম। বিসর্জন হুইল । তিলোত্তম। তখন ধুলিশয্যায় কি স্বপ্ন দেখিতেছিল ! এ ঘোর অন্ধকারে যে এক নক্ষত্র প্রতি সে চঙ্গিয়াছিল, সেও তাহাকে তার কর বিতরণ করিবে না । এ ঘোর ঝটিকায় যে লতায় প্রাণ -বাধিয়াছিল, তাত ছিড়িল ; যে ভেলায় বুক দিয়া সমুদ্র পার হইতেছিল, সে ভেল। .ভুবিল ! বঙ্কিমচন্দ্রের গ্রন্থাবলী একাদশ পরিচ্ছেদ গৃহ্যস্তর অপরাহ্লে কথামত ওসমান রাজপুত্ৰসমক্ষে উপস্থিত হইয়া কহিলেন, “দুবরাজ ! প্রত্যুত্তর পাঠইবার অভিপ্রায় হইয়াছে কি ?" যুবরাজ প্রত্যুত্তর লিখিয়। রাখিয়াছিলেন, পত্র হস্তে লইয়। ওসমানকে দিলেন । ওসমান, লিপি হস্তে লইয়। কহিলেন, “আপনি অপরাধ লইবেন না ; আমাদের পদ্ধতি আছে, দুর্গবাসী কেহ কাহাকে পত্র প্রেরণ করিলে, দুর্গরক্ষকের পর, পাঠ না করির পাঠান না।” যুবরাজ কিঞ্চিৎ বিধঃ হুইয়া কঙ্গিলন, “এন্ড বল বাহুল । আপনি পর খুলিয়। পড়ুন, অভিপ্রায় হয়, পাঠাষ্টয় দিলেন ।” ওসমান পদ্ধ খুলিয়। পাঠ করিলেন । তাহাতে এইমাত্র লেখা ছিল : - “মন ভাগিলি ! আমি তোমার অনুরোধ বিস্তৃত হুইব না । কিন্তু তুমি যদি পতিব্বত হও, তবে শীঘ্র পভিপথাবলম্বন করিয়া আয়ুকলঙ্ক লাপ করিবে । জগতসিংহ ।” ওসমান পত্র পাঠ করিয়। কষ্ঠিলেন, “রাজপুত্ৰ ! আপনার হৃদয় অতি কঠিন । - রাজপুত্র নীরস হঠ{ কঙ্গিলেন, “পাঠান অপেক্ষ। মঙ্গে " ওসমানের মুখ একটু আরক্ত হইল। কিঞ্চিং কর্কশভঙ্গীতে কচিলেন, “.বাপ করি, পাঠান সৰ্ব্বাশে আপনার সহি ই অভদ্রত না করিয়৷ থাকিবে ।" রাজপুল্ল কুপিতও গুইলেন, লজ্জিতও হইলেন এব° কহিলেন, “ল| মঙ্গাশয় ! আমি নিজের কথা কহি তেছি না । আপনি আমার প্রতি সৰ্ব্বাংশে দয়। প্রকাশ করিয়াছেন এবং বন্দী করিয়াও প্রাণদান , দিয়াছেন ; সেন হস্তী শত্রুর সাংঘাতিক পীড়ার শমত করাইয়াছেন ;--যে ব্যক্তি কারাবাসে শৃঙ্খলবদ্ধ থাকিবে, তাহাকে প্রমোদাগারে বাস করাইতেছেন । আর অধিক কি করিবেন ? কিন্তু আমি বলি কি, - আপনাদের ভদ্রতাজালে জড়িত হইতেছি ; এ সুখের পরিণাম কিছু বুঝিতে পারিতেছি না । আমি বন্দী হই, আমাকে কারাগারে স্থান দিন । এ দয়ার শুঙ্খল হইতে মুক্ত করুন। আর যদি বন্দী ন হই, তবে আমাকে এ হেম-পিঞ্জরে আবদ্ধ রাখার প্রয়োজন কি?" ওসমান স্থিরচিত্তে উত্তর করিলেন, “রাজপুত্র । আশুভের জন্য ব্যস্ত কেন ? অমঙ্গলকে ডাকিতে হয় না, আপনিই আইসে।”