૨૩ বঙ্কিমচন্দ্রের গ্রন্থাবলী বালিসে মাথা দিয়া কাদিতেছে, কমলমণি তাহার চুল বাধিতে বসিল । চুলবাধা কমলের একটা রোগ। চুল বাধা সমাপ্ত হুইলে, কুন্দের মাথা তুলিয়া, কমল তাহার মস্তক আপনার কোলে রাখিলেন । অঞ্চল দিয়া ভাহার চক্ষু মুছাইয়া দিলেন । এই সব কাজ শেষ করিয়া শেষে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কুঁদি, কাদিতেছিলি কেন ?” কুন্দ বলিল, “তুমি যাবে কেন ?” কমলমণি একটু হাসিলেন। কিন্তু ফোটা দুষ্ট চক্ষের জল সে হাসি মামিল না—ন বলিয়া কঠিয়া তাহার কমলমণির গণ্ড বহিয়া হাসির উপর আসিয়া পড়িল । রৌদ্রের উপর বৃষ্টি হইল । কমলমণি বলিলেন, “তাতে কাদিস কেন ?" কুন । তুমি আমায় ভালবাস। ক । কেন—অার কেহ কি ভালবাণে না ? কুন্দ চুপ করিয়া রহিল। ক । কে ভালবাসে না ? গিল্পী ভালবা ে নী --ন ? আমায় লুকুসনে । কুন্দ নীরব । *. কমল । দাদা বাবু ভালবাসে না ? কুন্দ নীরব । কমল বলিলেন, “যদি আমি তোমায় ভালবাসি —আর তুমি আমায় ভালবাস, তবে কেন আমার সঙ্গে চল না ?” কুন্দ তথাপি কিছু বলিল না । কমল বলিলেন, “ষাবে ?” কুন্দ ঘাড় নাড়িল-“বাব না।’ কমলের প্রফুল্ল মুখ গষ্ঠার হইল । তখন কমলমণি সস্নেহে কুন্দনন্দিনীর মস্তক বক্ষে তুলিয়া লইয়া ধারণ করিলেন এবং সস্নেহে তাহার গ্লণ্ডদেশ গ্রহণ করিয়া কহিলেন, “কুন্দ, সত্য বলিবি ?” কুন্দ বলিল, “কি ?” , কমল বলিলেন, “ষা দ্বিজ্ঞাসা করিব ? আমি তোর দিদি—আমার কাছে লুকুসনে—আমি কাহারও কাছে বলিব না।” কমল মনে মনে রাখিলেন, “যদি বলি ত রাজমন্ত্রী শ্ৰীশবাবুকে, আর খোকার কাণে কাণে* _ _. - :". কুন্দ বলিলেন, “কি বল ?”
- ক । তুই দাদাবাবুকে বড় ভালবাসিস—ন ?
কুন্দ উত্তর দিল না, কমলমণির হৃদয়মধ্যে মুখ লুকাইয়া কাদিতে লাগিল । কমল বলিলেন,-“বুঝেছি-মরিয়াছ। মরু, তাতে ক্ষতি নাই—কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে অনেকে মরে যে ” কুন্দনন্দিনী মস্তক উত্তোলন করিয়া কমলের মুখপ্রতি স্থিরদৃষ্টি করিয়া রহিল । কমলমণি প্রশ্ন বুঝিলেন। বলিলেন, “পোড়ারমুখী, চোখের মাথা খেয়েছ ? দেখতে পাও না যে—“মুখের কথা মুখে রহিল, তখন ঘুরিয়া কুন্দের উন্নত । মস্তক আবার কমলমণির বক্ষের উপর পড়িল । কুন্দনন্দিনীর অশ্রজলে কমলমণির হৃদয় প্লাবিত হইল । কুন্দনন্দিনী অনেকক্ষণ নীরবে কাদিল-বালিকার ন্যায় বিবশী হুইয়া কাদিল । সে কাদিল, আবার পরের চক্ষের জল তাহার চুল ভিজিয়া গেল। ভালবাস কাহাকে বলে, সোণার কমল তাহ জানিত। অন্তঃকরণের অন্তঃকরণমধ্যে কুন্দনন্দিনীর দুঃখে দুঃখী, স্বখে মুখী হইল। কুন্দনন্দিনীর চক্ষু মুছাইয়া কহিল, “কুন্দ ” : কুন্দ আবার মাথা তুলিয়া চাহিল । ক । আমার সঙ্গে চল । , " কুনের চক্ষে আবার জল পড়িতে লাগিল। কমল বলিলেন, “নহিলে নয় ।—সোণীর সংসার ছারখার গেল ।” কুন্দ কাদিতে লাগিল। কমল বলিলেন, “যাবি ? মনে করিরা দেখ ?” কুন্দ অনেকক্ষণ পরে চক্ষু মুছয় উঠিয়া বসিম্ব বলিল, “যাব ।” অনেকক্ষণ পরে কেন ? তাহ কমল বুঝিল । বুঝিল যে, কুন্দনন্দিন পরের মঙ্গলমন্দিরে আপনার প্রাণের প্রাণ বলি দিল। নগেন্দ্রের মঙ্গলার্থ, স্বৰ্য্যমুখীর মঙ্গলার্থ, নগেন্দ্রকে ভুলিতে স্বীকৃত হইল । সেই জন্য অনেকক্ষণ লাগিল । আপনার মঙ্গল ? কমল বুঝিয়াছিলেন যে, কুন্দনন্দিন আপনার মঙ্গল বুঝিতে পারে ন! } अह्s=श्वa=श्लल्ल পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ হীরা এমন সময়ে হরিদাসী বৈষ্ণবী আসিয়া গান করিল। “কঁাটা বনে তুলতে গেলাম কলঙ্কের ফুল, গো সখি কাল কলঙ্কেরি ফুল । মাথায় পরলেম মালা গেঁথে, কাণে পবৃলেম ফুল, সখি কলঙ্কেরি ফুল ।” এ দিন স্থৰ্যমুখী উপস্থিত। তিনি কমলকে গান শুনিতে ডাকিতে পাঠাইলেন । কমল কুলাকে সঙ্গে