পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (প্রথম ভাগ).djvu/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> o বঙ্কিমচন্দ্রের গ্রন্থাবলী ছেলে । উস্সেভ জবর ! কিয়া হে সকৃত ? বাদশাহ আলমকে ঔর মীর সকৃত নাই । মা ! উস্সেভ জবর। ছেলে । মাতৃসেভ জবর ? মা ! বাপ জানু—ঔর পুছিও মৎ—মেয়নে উস্কী নিমক খাইন। ছেলে । নিমক্‌ খায়ে হে। ! কিস্তরে মা ? ম। আসরফি দিন । ছেলে । কাহে মাজী ? মা ! উস্কী গুনাহ কে বাত, কিসিক পাস বোলুন মনাসেব নেহিন, এস লিয়ে । ছেলে । আচ্ছা বাত হৈ । মুঝকে একঠো আসরফি বখশিশ, ফরমাইয়ে । মা ! কাহে রে বেটা ? ছেলে । নেহি ত মুঝকে বোল দিজিয়ে বাত ঠো কিয়া হুৈ ? মা ! বাত, ঔর কিয়া, বাদশাহক। তসবীর— তোবা ! তোবা ! বাৎঠো আবহী নিকলীর্থী । ছেলে । তসবীর ভাঙ্গড়ালা ? মা ! অারে বেটা, লাথ সে ভাঙ্গভালী ! তোব ! মেয়নে নেমকহারামী কর চুক ! ছেলে । নিমকহারাম কিয়া হৈ ইসমে,তোম্ম, মেয়নে বেটা ! হামারা বোলুনেসে নিমকহারামী কিয় হৈ ? ম। দেখিও বাপ জান, কিসক্টকে বলিও মৎ। ছেলে । আপ খাতেরজমা রহিয়ে—কিসইকা পাস নেহিন বোলেঙ্গে ! তখন বুড়ী বিলক্ষণ রসরঞ্জিত করিয়া চিত্রদলনের ব্যাপারটা সমস্ত বলিল । পঞ্চম পরিচ্ছেদ দরিয়া বিবি বুড়ীর পুত্রের নাম খিজির সেখ । সে তসবীর অঁকিত । দিল্লীতে তাহার দোকান । মা'র কাছে দুই দিন থাকিয়া সে দিল্লী গেল । দিল্লীতে তাহার এক বিবি ছিল । সেই দোকানেই থাকিত । বিবির নাম ফতেমা । খিজির, মা'র কাছে রূপনগরের কথ। যাহ। শুনিয়াছিল, তাহ সমস্তই ফতেমার কাছে বলিল । সমস্ত কথা বলিয়া, খিজির ফতেমাকে বলিল ষে, “তুমি এখনই দরিয়া বিবির কাছে যাও । এই সংবাদ বেগম সাহেবাকে বেচিয়া আসিতে বলিও । কিছু পাওয়া যাইবে ” দরিয়া বিবি পাশের বাড়ীতেই বাস করে । ঘরের পিছন দিয়া যাওয়া ষায় । অতএব ফতেম! বিবি, বেপরদা না হইয়াও দরিয়া বিবির গৃহে গিয় উপস্থিত হইলেন । ' খিজির বা ফতেমার বিশেষ পরিচয় দিবার প্রয়োজন হয় নাই । কিন্তু দরিয়া বিবির বিশেষ পরিচয় চাহি । দরিয়া বিবির আসল নাম দরীর উন্নিসা কি এমনি একটা কিছু ; কিন্তু সে নাম ধরিয়া কেহ ডাকিত নী-দরিয়া বিবি বলিয়াই ডাকিত । তার বাপ-ম। ছিল না, কেবল জ্যেষ্ঠা ভগিনী আর একটা বুড়ী ফুফু কি খালা কি এমনই একটা কি ছিল । বাড়ীতে পুরুষমানুষ কেহ বাস করিত না । দরিয়া বিবির বয়স সতের বৎসরের বেশী নহে- তাহাতে আবার কিছু খৰ্ব্বাকার, পনের বছরের বেশী দেখাইত না । দরিয়া বিবি বড় সুন্দরী, ফুটন্ত ফুলের মত, সৰ্ব্বদা প্রফুল্ল । দরিয়া বিবির ভগিনী অতি উত্তম স্বরূম ও আতর প্রস্তুত করিতে পারিত । তাহাই বিক্রয় করিয়া তাহীদের দিনপাত হইত। আপনার এক্কা বা দোল করিয়া বড় মানুষের বাড়ী গিয়া বেচিয়া আসিত । দুঃখী মানুষ, রাত্রি হইলে পদব্রজেও যাইত। বাদশাহের অন্তঃপুরে কাহারও যাইবার অধিকার ছিল ন। - বাহিরের স্ত্রীলোকেরও নাকিন্তু দরিয়া বিবির সেখানে যাইবারও উপায় ছিল তাহ। পরে বলিতেছি । ফতেম আসিয় দরিয়া বিবিকে চঞ্চলকুমারীর সংবাদ বলিল এবং বলিয়া দিল যে, ঐ সংবাদ বিক্রয় করিয়া অর্থ আনিতে হইবে । দরিয়া বিবি বলিল, “রঙ্গমহালের ভিতর প্রবেশ করিতে হুইবে—পরওয়ানাখানা কোথায় ?” ফতেম৷ বলিল, “তোমারই কাছে আছে । দরিয়া বিবি তখন পেটেরা খুলিয়া একখান। কাগজ বাহির করিল। তাহ উটাইয়৷ পাণ্টাইয়া দেখিয় বলিল, “এইখান বটে !” দরিয়া বিবি তখন কিছু স্ববৃমা লইয়া ও পরওয়ানা লইয়া বাহির হইল ।