পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী দেখিলাম, এ সংসার কেবল ঢৌ-কিশাল। বড় বড় ইমারত, বৈঠকখানা, রাজপরী সব ঢেকিশালা --তাহাতে বড় বড় ঢেকি, গড়ে নাক পরিয়া খাড়া হইয়া রহিয়াছে। কোথাও জমিদাররপে ঢেকি, প্রজাদিগের হৃৎপিন্ড গড়ে পিষিয়া, নাতন নিরিখ রােপ চাউল বাহির করিয়া সখে সিদ্ধ করিয়া অন্ন ভোজন করিতেছেন। কোথাও আইনকারক ঢেকি, মিনিট রিপোটের রাশি গড়ে পিষিয়া, ভানিয়া বাহির করিতেছেন-আইন; বিচারক ঢোকি সেই আইনগলি গড়ে পিষিয়া বাহির করিতেছেন-দারিদ্র্য, কারাবাস-ধনীর ধনান্ত-ভাল মানষের দেহান্ত। বাব ঢেকি, বোতল গড়ে পিতৃধন পিষিয়া বাহির করিতেছেন-পিলে যকৃৎ; তাঁর গহিণী। ঢেকি একাদশীর গড়ে বাজার খরচ পিষিয়া বাহির করিতেছেন-অনাহার। সব্বাপেক্ষা ভয়ানক দেখিলাম লেখক ঢেকি-সাক্ষাৎ মা সরস্বতীর মন্ড ছাপার গড়ে পিষিয়া বাহির করিতেছেন-স্কুলবকি! দেখিতে দেখিতে দেখিলাম-আমিও একটা মস্ত ঢেকি-কমলা শ্রমে লম্বমান হইয়া পড়িয়া আছি; নেশার গড়ে মনোদঃখ ধান্য পিষিয়া দপ্তর চাউল বাহির করিতেছি। মনে মনে অহঙ্কার জন্মিল—এমন চাউল ত কাহারও গড়ে হইতেছে না। তখন ইচ্ছা হইল-এ চাউল মনষ্য-লোকের উপযক্ত নহে, আমি সবগে গিয়া ধান ভানিব। তখনই সবগে গেলাম—“অশ্বমনোরথে।” সবগে ময় দুবরাজকে প্ৰণাম করিয়া বললাম, "হে দেবেন্দু! আমি শ্ৰীকমলাকান্ত ঢেকি-সমােবগে *ाकों দেবেন্দ্ৰ বলিলেন, “আপত্তি কি-পরিস্কার চাই কি ?” আমি। উকবশিী মেনকা রম্ভা। দেবরাজ। উব্বশী মেনকা পাইবে না-আর যাহা চাহিলে, তাহা ত মত্ত লোকেও তুমি পাইয়া থাক,-আটটার হিসাবে। আমি দশম খ-বলিলাম, “কি ঠাকুর, অন্টারম্ভা! সে কি আজকাল নরলোকের পাবার যো আছে ? সে আজকাল দেবতাদেরই একচেটে ।” সন্তুষ্ট হইয়া দেবরাজ আমাকে বিকশিশ হকুম করিলেন,-এক সের অমত, আর এক ঘণ্টার জন্য উৰ্ব্বশীর সঙ্গীত। চৈতন্য হইয়া দেখিলাম, পাশে ঘটিতে এক সেরা দগ্ধ,-আর প্রসন্ন, দাঁড়াইয়া চীৎকার করিতেছে—“নেশাখোর!” “বিটলে!” “পেটাৰ্থী !” ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি উব্বশীকে বলিলাম, “বাইজি! এক ঘণ্টা হইয়াছে-এখন বন্ধ কর।” कaवादास्ट * अथभ न६था-कि विधिब ? পজ্যেপাদ শ্ৰীষিক্ত বঙ্গদর্শনস্ট সম্পাদক মহাশয় শ্ৰীচরণকমলেষ। আমার নাম শ্ৰীকমলাকান্ত চক্রবত্তী, সাবেক নিবাস শ্ৰীশ্ৰীনসিধাম, আপনাকে আমি প্ৰণাম করি। আপনার নিকট আমার সাক্ষাৎসম্পবন্ধে পরিচয় নাই, কিন্তু আপনি নিজগণে আমার বিশেষ পরিচয় লইয়াছেন, দেখিতেছি। ভীমদেব খোেশানবীস, জয়াচোর লোক আমি পকেবই বঝিয়াছিলাম-আমি দপ্তরটি তাঁহার নিকট গচ্ছিত রাখিয়া তীর্থদর্শনে যাত্ৰা করিয়াছিলাম; তিনি সেই অবসর পাইয়া সেইটি আপনাকে বিক্রয় করিয়াছেন। বিক্রয় কথাটি আপনি সস্বীকার করেন নাই, আমি জানি, ভীমদেব ঠাকুর বিনামল্যে শালগ্রামকে তুলসী দেন না, বিনামল্যে যে আপনাকে চক্রবত্তী প্রণীত দপ্তর দিবেন, এমন সম্ভাবনা অতি বিরল। এই জয়াচুরির কথা আমি এত দিন জানিতাম না। দৈবাধীন একটি যোড়া জােতা কিনিয়া এ সন্ধান পাইলাম। একখানি ছাপার কাগজে জনতা যোড়াটি বান্ধা ছিল, দেখিয়া ভাবিতেছিলাম যে, কাহার এমন সৌভাগ্যের উদয় হইল যে, তাহার রচনা শ্ৰীমৎ কমলাকান্ত শম্পমার চরণষগলের ব্যবহায্য

  • "কমলাকান্তের দপ্তর” বঙ্গদর্শনে প্রথম প্রকাশিত হয়। যখন এই পত্ৰগলি বঙ্গদর্শনে প্রকাশিত হয়, তখন সজীব বাবা ইহার সম্পাদক।

SO