পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कभaाकार এবং কুমারসম্ভব চল্লিশ পার করিয়া লিখিয়াছিলেন, তাহা আমি দুইটি কবিতা উদ্ধার করিয়া দেখাইতেছি প্রথম অজবিলাপে, “ইন্দমাছৰ সিতলকং মখং তব বিশ্রান্তকথং দিনোতি মাম। নিশি সপ্তমিবৈকপঙ্কজং বিরতাভ্যন্তরষটপদস্যবনম৷”* এটি যৌবনের কান্না। তার পর রীতিবিলাপে, “গত এব না তে নিবত্ততে স সখা দীপ ইবানিলাহতঃ। অহমস্য দশেক পশ্য মামবিসহ্যব্যসনেন। ধনমিতাম৷” এটি বড় বয়সের কান্না।-- তা যাই হউক, কালিদাস বাড়া বয়সের গৌরব বঝিলেও কখন ব্যুদ্ধের কপালে মনিবত্তি লিখিতেন না। বিস্মাক, মোলটিকে ও ফ্রেডেরিক বড়; তাঁহারা মনিবত্তি অবলম্বন করিলে —জমান ঐকজাত্য কোথা থাকিত ? টিয়র প্রাচীন-টিয়র মনিবত্তি অবলম্বন করিলে ফ্রান্সের স্বাধীনতা এবং সাধারণতন্ত্রাবলম্বন কোথা থাকিত ? গ্ৰােডন্টােন এবং ডিশ্রেলি বড়ো—তাঁহারা মনিবত্তি অবলম্বন করিলে পালিয়ামেণ্টের রিফর্ম এবং আয়রিশ চচ্চোর ডিসেন্টারিশমেণ্ট काथा था।किऊ ? প্রাচীন বয়সই বিষয়ৈষার সময়। আমি অন্ত্ৰ-দন্তহীন ত্রিকালের বড়ার কথা বলিতেছি নাতাঁহারা দ্বিতীয় শৈশবে উপস্থিত। যাঁহারা আর যােবা নাই বলিয়াই বড়া, আমি তাঁহাদিগের কথা বলিতেছি। যৌবন কম্পেমর সময় বটে, কিন্তু তখন কাজ ভাল হয় না। একে বদ্ধি অপরিপক্ক, তাহাতে আবার রাগ দ্বেষ ভোগাসক্তি, এবং সত্ৰীগণের অন্যসন্ধানে তাহা সতত হীনপ্রভ; এজন্য মনষ্যে যৌবনে সচরাচর কাৰ্যক্ষম হয় না। যৌবন অতীতে মনষ্যে বহদশী, স্থিরবদ্ধি, লব্ধপ্রতিস্ঠ, এবং ভোগাসক্তির অনধীন, এজন্য সেই কাৰ্য্যকারিতার সময়। এই জন্য, আমার পরামর্শ যে, বড়ো হইয়াছি বলিয়া, কেহ সত্বকাৰ্য্য পরিত্যাগ করিয়া মনিবত্তির ভান করিবে না। বাদ্ধক্যেও বিষয়চিন্তা করবে। তোমরা বলিবে, এ কথা বলিতে হইবে না; কেহই জীবন থাকিতে ও শক্তি থাকিতে বিষয়চেন্টা পরিত্যাগ করে না। মাতৃস্তনপান অবধি উইল করা পৰ্যন্ত আবালবদ্ধ কেবল বিষয়ন্বেষণে বিৱত। সত্য, কিন্তু আমি সেরাপ বিষয়ানসন্ধানে বদ্ধকে নিযক্ত করিতে চাহিতেছি না। যৌবনে যে কাজ করিয়াছি, সে আপনার জন্য; তার পর যৌবন গেলে যত কাজ করিবে, পরের জন্য। ইহাই আমার পরামর্শ । ভাবিও না যে, আজিও আপনার কাজ করিয়া উঠিতে পারিলাম না-পরের কাজ করিব কি ? আপনার কাজ ফরোয় না-যদি মনীষাজীবন লক্ষ বর্ষ পরিমিত হইত, তব আপনার কাজ ফারাইত না-মনষ্যের সবার্থপরতার সীমা নাই-অন্ত নাই। তাই বলি, বাদ্ধক্যে আপনার কাজ ফরাইয়াছে, বিবেচনা করিয়া পরাহিতে রত হও । এই মনিবত্তি যথার্থ মনিবত্তি। এই মনিবত্তি অবলম্বন করা। যদি বল, বাদ্ধক্যেও যদি আপনার জন্য হউক, পরের জন্য হউক, বিষয়-কায্যে নিরত থাকিব, তবে ঈশ্বরচিন্তা করিব কবে?-পরকালের কাজ করিব কবে ? আমি বলি, আশৈশব পরকালের কাজ করবে, শৈশব হইতে জগদীশ্বরকে হৃদয়ে প্রধান স্থান দিবে। যে কাজ সকল কাজের উপর কাজ, তাহা প্রাচীন কালের জন্য তুলিয়া রাখিবে কেন ? শৈশবে, কৈশোরে, যৌবনে, বাদ্ধক্যে, সকল সময়েই ঈশ্বরকে ডাকিবে। ইহার জন্য বিশেষ অবসরের প্রয়োজন নাই-ইহার

  • বায়বেশে অলকাগলিন চালিত হইতেছে- অথচ বাক্যহীন তোমার এই মািখ রাত্রিকালে প্রমাদিত, সতরাং অভ্যন্তরে ভ্রমর-গঞ্জন-রহিত একটি পন্মের ন্যায় আমাকে ব্যথিত করিতেছে।

তোমার সেই সখা বায়তাড়িত দীপের ন্যায় পরলোকে গমন করিয়াছেন, আর ফিরিবেন না। আমি নির্বাপিত দীপের দশাবৎ অসহ্য দঃখে ধামিত হইতেছি দেখ।