পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भिवाकस কমলা। গোর তিন জনের; গোর প্রথমে বয়সে গরমহাশয়ের ; মধ্যবয়সে সত্ৰীজাতির; শেষ বয়সে উত্তরাধিকারীর; দড়ি ছিড়িবার সময়ে কারও নয়। প্ৰসন্ন। বলি, ঐ শ্যামলা-গাই কার? কমলা। যে ওরা দধি খায় তার। প্ৰসন্ন। ও গোর আমার কি না ? কমলা। তুই বেটী কখন ওর এক বিন্দ দগধ খেলি নে, কেবল বেচে মরলি, গোর তোর হলো? ও গোর, যদি তোর হয়, তবে বাঙ্গাল বেকের টাকাও আমার। দে বেটী, গোর চােরকে ছেড়ে দে-গরীবের ছেলে দগধ খেয়ে বাঁচুক । হাকিম দেখিলেন, দই জনে বড় বাড়াবাড়ি করিতেছে-আদালত মেছো-হাটা হইয়া উঠিল। তখন উভয়কে ধমক দিয়া, জিজ্ঞাসাবাদ নিজহস্তে লাইলেন। জিজ্ঞাসা করিলেন, “প্ৰসন্ন এই গোেরর দািধ বেচে ?” কমলা। আজ্ঞে, হাঁ । “উহার গোহাঁলে এই গোর থাকে ?” কমলা। ও গোরও থাকে, আমিও কখন কখন থাকি। “ওই খাওয়ায় ?” কমলা। উভয়কে। বাদিনীর উকীল তখন বলিলেন, “আমার কায্য সিদ্ধ হইয়াছে-আমি উহাকে আর জিজ্ঞাসা করিতে চাই না।” এই বলিয়া তিনি উপবেশন করিলেন। তখন আসামীর উকীল গাত্ৰোখান করিলেন। দেখিয়া কমলাকান্ত জিজ্ঞাসা করিলেন, “আবার তুমি কে ?” আসামীর উকীল বলিলেন, “আমি আসামীর পক্ষে তোমাকে ক্রস করিব।” কমলা। একজন ত ক্রস করিয়া গেল, আবার তুমি কুমার বাহাদর এলে না কি ? উকীল। কুমার বাহাদর কে ? কমলা। রাজপত্রকে চেন না ? ত্রেতা যাগে আগে ক্রস করিলেন, পবনাঙ্গজ মহাশয়। তার পর ক্রস করিলেন, কুমার বাহাদর।* উকীল। ও সব রাখ-তুমি গোর চেন বলেছি-কিসে চেন ? কমলা। কখন শিঙ্গে-কখন শামলায় ! উকীল রাগিয়া উঠিয়া, গজন করিয়া, টেবিল চাপড়াইয়া বলিলেন, “তোমার পাগলামি রাখ-তুমি এই গোর চিনিতে পারিতেছ। কিসে?” কমলা। ঐ হাম্পিবা-রবে। উকীল হতাশ হইয়া বলেন, "Hopeless’ উকীল মহাশয় বসিয়া পড়িলেন-আর জেরা করবেন না। কমলাকান্ত বিনীতভাবে বলিল, “দাঁড়ি ছোিড় কেন, বাবা ?” উকীল আর জেরা করবেন না দেখিয়া হাকিম কমলাকান্তকে বিদায় দিলেন। কমলাকান্ত উদ্ধৰ্বশ্বাসে পলাইল। আমি কিছ কােজ সারিয়া বাহিরে আসিয়া দেখিলাম যে, কমলাকান্ত থেলো হকা হাতে করিয়া বসিয়া আছে—চারি দিকে লোক জমিয়াছে—প্ৰসন্নও সেখানে আসিয়াছে - দুধের কল্প দিবা, তাের ঘোলমউনির দিবা, তাের ফাঁদ নাথের দিবা, তুই যদি চােরকে গাের, ८छ८छ् ना ‘ग्रन!” আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “চক্ৰবত্তী মহাশয়! চোরকে গোর ছাড়িয়া দিবে কেন ?” কমলাকান্ত বলিল, “পব্বকালে মহারাজ শোেনজিংকে এক ব্রাহ্মণ বলিয়াছিল যে, “বৎস, গোপস্বামী-ও তস্কর, ইহাদের মধ্যে যে ধেনীর দগ্ধ পান করে, সেই তাহার যথার্থ অধিকারী। অন্যের তাহার উপর মমতা প্রকাশ করা বিড়ম্বনা মাত্র। এই হলো ভীস্মদের ঠাকুরের Hindu Law, আর ইহাই এখনকার ইউরোপের International Law । যদি সভ্য এবং উন্নত হইতে চাও, তবে কাড়িয়া খাইবে। গো শব্দে ধেনই বােব আর পথিবীই বােব, ইনি তস্করভোগা।

  • অঙ্গদ ।

শান্তিপৰব, ১৭৪ অধ্যায়। SOA