পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

d- Vegg -7 একটি রক্ষাকালী পজা হইত, এবং ব্ৰাহ্মণেরা চন্ডীপাঠ করিয়া কিছু লাভ করিতেন। তার পরে, মোনগোলাফীর আবার আগ্নেয় ব্যোমযান (অর্থাৎ যাহাতে জলজন না পরিয়া, উত্তপ্ত সামান্য বায় পরিত হয়) বিষোল হইতে প্রেরণ করিলেন। তাঁহাতে আধনিক বেলনের ন্যায় একখানি “রথ” সংযোজন করিয়া দেওয়া হইয়াছিল। কিন্তু সে বারও মনষ্যে উঠিল না। সেই রথে চড়িয়া একটি মেষ, একটি কুক্কট ও একটি হংস সবগ পরিভ্রমণে গমন করিয়াছিল। পরে সবচ্ছন্দে সন্দেহ নাহি । এক্ষণে ব্যোমযানে মনষ্য উঠিবার প্রস্তাব হইতে লাগিল। কিন্তু প্রাণিহত্যার আশঙ্কায় ফ্রান্সের অধিপতি, তাহাতে অসম্পমতি প্রকাশ করিলেন। তাঁহার অভিপ্রায় যে, যদি ব্যোমযানে মন:ষ্য উঠে, তবে যাহারা বিচারালয়ে প্রাণদন্ডের আজ্ঞাধীন হইয়াছে, এমত দই ব্যক্তি উঠকমরে মরিবে। শনিয়া পিলান্তর দে রোজীর নামক একজন বৈজ্ঞানিকের বড় রাগ হইল-“কি ! আকাশ-মাগে প্রথম ভ্ৰমণ করার যে গৌরব, তাহা দৰবত্ত নরাধমদিগের কপালে ঘটিবে!" একজন রাজ-পরিস্ত্রীর সাহায্যে রাজার মত ফিরাইয়া তিনি মাকুইস দালান্দের সমভিব্যাহারে ব্যোমযানে আরোহণ করিয়া আকাশপথে পৰ্যটন করেন। সে বার নির্বিঘের পথিবীতে ফিরিয়া আসিয়াছিলেন, কিন্তু তাহার দই বৎসর পরে—আবার ব্যোমযানে আরোহণ পৰিবাক, সমদ্র পার হইতে গিয়া, অধঃপতিত হইয়া প্রাণত্যাগ করেন। যাহা হউক, তিনিই মনষ্যমধ্যে প্রথম গগন পৰ্যটক। কেন না, দশমন্ত, পরেরবা, কৃষ্ণাক্তজন প্রভৃতিকে মনষ্যে বিবেচনা করা অতি ধল্টের কাজ ! আর যিনি জয় রাম বলিয়া পঞ্চমবায়াপথে সমদ্র পার হইয়াছিলেন, তিনিও মনষ্যে নহেন, নচেৎ তাঁহাকে এই পদে অভিষিক্ত করার আমাদিগের আপত্তি ছিল না। দে রোজীরের পরেই চালাস ও রবার্ট একত্রে, রাজভবন হইতে, ছয় লক্ষ দশকের সমক্ষে জলজনীয় ব্যোমযানে উডীন হয়েন। এবং প্রায় ১৪,ooo ফিট উদ্ধের উঠেন। ইহার পরে ব্যোমযানারোহণ বড় সচরাচর ঘাঁটিতে লাগিল। কিন্তু অধিকাংশই আমোদের জন্য। বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব পরীক্ষার্থ যাঁহারা আকাশ পথে বিচরণ করিয়াছেন, তন্মধ্যে ১৮০৪ সালে গাই লাসাকের আরোহণই বিশেষ বিখ্যাত। তিনি একাকী ২৩,ooo ফিট উদ্ধের্ব উঠিয়া নানাবিধ বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের মীমাংসা করিয়াছিলেন। ১৮৩৬ সালে গ্রীন এবং হলশড সাহেব, পনের দিবসের খাদ্যাদি বেলনে তুলিয়া লইয়া, ইংলণ্ড হইতে গগনারোহণ করেন। তাঁহারা সমদ্র পার হইয়া, আঠার ঘন্টার মধ্যে জাম্পমানীর অন্তগত উইলবাগ নামক নগরের নিকট অবতরণ করেন। গ্রীন অতি প্ৰসিদ্ধ গগন পৰ্যটক ছিলেন। তিনি প্রায় চতুৰ্দশ শত বার গগনারোহণ করিয়াছিলেন। তিনবার, বায়াপথে সমদ্রপার হইয়াছিলেন—অতএব, কলিযাগেও রামায়ণের দৈববলসম্পন্ন কাৰ্যসকল পািনঃ সম্পাদিত হইতেছে। গ্রীন দাইবার সমদ্রমধ্যে পতিত হয়েনএবং কৌশলে প্রাণরক্ষা করেন। কিন্তু বোধ হয়, জেমসগ্নেশর অপেক্ষা কেহ অধিক উদ্ধেৰ উঠিতে পারেন নাই। তিনি ১৮৬২ সালে উলবিহােমন্টন হইতে উদ্ভীন হইয়া প্রায় সাত মাইল উদ্ধের্ব উঠিয়াছিলেন। তিনি বহশতবার গগনোপরি ভ্রমণপাকবািক, বহবিধ বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের পরীক্ষা করিয়াছিলেন। সম্প্রতি আমেরিকার গগন পয্যটক ওয়াইজ সাহেব, ব্যোমযানে আমেরিকা হইতে আটলাণ্টিক মহাসাগর পার হইয়া ইউরোপে আসিবার কল্পনায়, তাহার যথাযোগ্য উদ্যোগ করিয়া যাত্রা করিয়াছিলেন। কিন্তু সমদ্রোপরি আসিবার পকেবা বাতামধ্যে পতিত হইয়া অবতরণ করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। কিন্তু সাহস আতি ভয়ানক! পাঠকদিগের অদলেট সহসা যে গগন-পৰ্যটন-সখি ঘটিবে, এমত বোধ হয় না, এজন্য গগনপৰ্যটকেরা আকাশে উঠিয়া কিরােপ দেখিয়া আসিয়াছেন, তাহা তাঁহাদিগের প্রণীত পন্তকাদি হইতে সংগ্ৰহ করিয়া এস্থলে সন্নিবেশ করিলে বোধ হয়, পাঠকেরা অসতুটি হইবেন না। সমদ্র নামটি কেবল জল-সমাদের প্রতি ব্যবহৃত হইয়া থাকে; কিন্তু যে বায় কর্তৃক পথিবী পরিবেষ্টিত, তাহাও সমদ্রবিশেষ, জলসমদ্র হইতে ইহা বহত্তর। আমরা এই বায়বীয় সমদ্রের তলচর জীব। ইহাতেও মেঘের উপদ্বীপ, বায়ার স্রোতঃ প্রভৃতি আছে। তদ্বিষয়ে কিছ জানিলে ক্ষতি নাই। ব্যোমযান অলপ উচ্চ গিয়াই মেঘসকল বিদীণ কারিয়া উঠে। মেঘের আবরণে পথিবী দেখা যায় না, অথবা কদাচিৎ দেখা যায়। পদতলে, অচ্ছিন্ন, অনন্ত দ্বিতীয় বসন্ধারাবৎ মেঘজল বিস্তত। এই বাপীয় আবরণে ভূগোলক আবতে; যদি গ্রহান্তরে জ্ঞানবান জীব থাকে, তবে তাহারা S 3Գ