পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

KeBo9 vy তথায় রাজধানী সংস্থাপন করিয়াছেন।) ব্যোমযানে আরোহণ করিয়া উন্ধেব উত্থান করলেও ঐরপ ক্রমে হিমের আতিশয্য অনভূত হয়। তাপ, তাপমান যন্ত্রের দ্বারা মিত হইয়া থাকে। যন্ত্ৰ ভাগে ভাগে বিভক্ত। মন কিছ উষ্ণ, তাহার পরিমাণ ৯৮ ভাগ। ২১২ ভাগ তাপে জল বাপ হয়। ৩২ ভাগ তাপে জল তুষারত্ব প্রাপ্ত হয়। (তাপে জল তুষার হয়, এ কোন কথা ? বাস্তবিক তাপে জল তুষার হয় না, তােপাভাবেই হয়। ৩২ ভাগ তাপ, জলের স্বাভাবিক তাপের অভাববাচক ।) পাবে বিজ্ঞানবিদগণের সংস্কার ছিল যে, উদ্ধের্ব তিন শত ফিট প্রতি এক ভাগ তাপ কমে। অর্থাৎ তিন শত ফিট উঠিলে এক ভাগ তাপহানি হইবে-ছয় শত ফিট উঠিলে দাই ভাগ তাপ কমিবে-ইত্যাদি। কিন্তু গ্নেশর সাহেব বহবার পরীক্ষা করিয়া স্থির করিয়াছেন যে, উদ্ধের তাপহানি এরপ একটি সরল নিয়মানগামী নহে। অবস্থাবিশেষে তাপহানির লাঘব গৌরব ঘাঁটিয়া থাকে। মেঘ থাকিলে, তাপহানি অলপ হয়-কারণ, মেঘ তাপরোধক এবং তাপগ্রাহক। আবার দিবাভাগে যেরপ তাপহানি ঘটে, রাত্রে সেরাপ নহে। গ্নেশর সাহেবের পরীক্ষার ফল নিম্নলিখিত মত ভূমি হইতে হাজার ফিট পয্যন্ত মেঘাচ্ছন্নাবস্থায় তাপহানির পরিমাণ ৪, ৫ ভাগ, মেঘ না থাকিলে ৬, ২ ভাগ, দশ হাজার ফিট পয্যন্ত, মেঘাচ্ছন্নাবস্থায় ২, ২ ভাগ, মেঘ না থাকিলে ২ ভাগ। বিশ হাজার ফিট উদ্ধেব, মেঘাচ্ছন্নে ১, ১ ভাগ; মেঘ শ্যান্যে ১, ২ ভাগ ত্ৰিশ হাজার ফিট উদ্ধের্ব মোট ৬, ২ ভাগ তাপহাস পরীক্ষিত হইয়াছিল ইত্যাদি। তাপহাস হেতু উদ্ধের্ব স্থানে স্থানে তুষার-কণা (Snow) দহট হয়; এবং ব্যোমযান কখন কখন তন্মধ্যে পতিত হয়। হাত পা অবশ হয়, এবং চেতনা অপহৃত হয়। উদ্ধের্ব তাপাভাবের কারণ তপ্ত বা তাপ্য সামগ্রীর অভাব। রৌদ্র ভূমে যেমন প্রখর, উন্ধেব বরং ততোধিক প্রখরতার বোধ হয়। কিন্তু তাহাতে কি তপ্ত হইবে ? ভূমি অতি দারে, বায় অতিক্ষীণ-অলপপরমাণ। দশ বারটি তলার বস্তা উপৰ্য্যুপরি রাখিয়া দেখিবেন, উপরিস্থ তলার ভারে, নিম্নস্থ। বস্তার তলা গাঢ়তার হইয়াছে। তেমনি নিম্নস্থ। বায়ই গাঢ়-উপরিস্থ বায় ক্ষীণ। পরীক্ষা দ্বারা স্থির হইয়াছে যে-এক ইঞ্চি দীঘ প্রস্থে, এরপ ভূমির উপরে যে ভার, তাহার পরিমাণ সাড়ে সাত সের। আমরা মস্তকের উপর অহরহঃ এই ভার বহন করিতেছি।--তািড়জন্য কোন পীড়া বোধ করি না কেন ? উত্তর, “অগাধজলসিঞ্চারী” মৎস্য উপরিস্থ বারিরাশির ভারে পীড়িত হয় না কেন ? উপরিস্থ বায়স্তরসমাহের ভরে নিম্নস্থ। বায়স্তরসকল ঘনীভূত-যত উদ্ধেৰ যাওয়া যায়, বায়, তত ক্ষীণ হইতে থাকে। গগনপৰ্যটকেরা ইহা পরীক্ষা করিয়া জানিয়াছেন, গরতা অনসারে ৩দ০ মাইল উদ্ধের্বর মধ্যেই অদ্ধেক বায় আছে; এবং পাঁচ ছয় মাইলের মধ্যেই সমদায় বায়ার তিন ভাগের দই ভাগ আছে। এই জন্য উদ্ধের্ব উঠিতে গেলে, নিশ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য অত্যন্ত কন্ট হয়। মসরে ফ্লামারিয়া দশ সহস্র ফিট উন্ধেব উঠিয়া, প্রথম বারে, যেরপ কম্পন্ট অনভূত করিয়াছিলেন, তাহার বর্ণনা এইরূপ করিয়াছেন, যথা “সাতটা বাজিতে এক পোয়া থাকিতে আমার শরীরমধ্যে এক অপৰিবৰ্ণ আভ্যন্তরিক শীতলতা অনভূত করিতে লাগিলাম। তৎসহিত তন্দ্ৰা আসিল। কন্টে নিশ্বাস ফেলিতে লাগিলাম। কণামধ্যে শোঁ শোঁ শব্দ হইতে লাগিল এবং আধ মিনিট কাল, আমার হন্দ্রোগ উপস্থিত হইল। কন্ঠ শতক হইল। আমি এক পাত্র জল পান করিলাম--তাহাতে উপকার বোধ হইল। যে বোতলে জল ছিল—তাহা ছিপি খলিবার সময়ে, যেমন শ্যাক্ষেপনের বোতলের ছিপি সশব্দে বেগে উঠিয়া পড়ে, জলের বোতলের ছিপি খলিতে সেইরাপ হইল। ইহার কারণ সহজেই বক্সা যাইতে পারে। তখন আমাদিগের মস্তকের উপর বায়, এক ভাগ কম হইয়াছিল। যখন বোতলে। ছিপি আটিয়া গগনে যাত্রা করিয়াছিলাম, তখনকার অপেক্ষা এখনকার বায়ার ভার এক ভাগ কম হইয়াছিল।” দই একবার গগন-মাগে যাতায়াত করিলে, এ সকল কািট সহ্য হইয়া আইসে, কিন্তু অধিক উদ্ধেৰ উঠিলে সহিষ্ণ ব্যক্তিরও কমন্ট হয়। গ্নেশর সাহেব এ সকল কন্টে বিশেষ সহিষ্ণ ছিলেন, কিন্তু ছয় মাইল উদ্ধেৰ উঠিয়া তিনিও চেতনাশন্য ও মমষ হইয়াছিলেন। ২৯,০০০ ফিট