পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बख्खान्मद्राइम বালকেরা। শৈশবে পড়িয়া থাকে, চন্দ্ৰ উপগ্রহ। কিন্তু উপগ্রহ বলিলে, সৌরজগতের সঙ্গে চন্দ্রের প্রকৃত সম্প্ৰবন্ধ নিদিষ্ট হইল না। পথিবী ও চন্দ্র যািগল গ্রহ। উভয়ে এক পথে, একত্র সােয্য প্ৰদক্ষিণ করিতেছে-উভয়েই উভয়ের মাধ্যাকর্ষণ কেন্দ্রের বশবত্তী-কিন্তু পথিবী গরিত্বে চন্দ্রের একাশী গণ, এজন্য পথিবীর আকর্ষণী শক্তি চন্দ্রপেক্ষা এত অধিক যে, সেই যক্ত আকর্ষণে কেন্দ্র পথিবীস্থিত; এজন্য চন্দ্রকে পথিবীর প্রদক্ষিণকারী উপগ্রহ বোধ হয়। সাধারণ পাঠকে বঝিবেন যে, চন্দ্র একটি ক্ষদ্রতর পথিবী; ইহার ব্যাস ১০৫o ক্রোশ; অর্থাৎ পথিবীর ব্যাসের চতুর্থাংশের অপেক্ষা কিছ বেশী। যে সকল কবিগণ নায়িকাদিগকে আর প্রাচীন প্রথামত চন্দ্ৰমাখী বলিয়া সন্তুষ্ট নহেন-নািতন উপমার অন্যাসন্ধান করেন—তাঁহাদিগকে আমরা পরামর্শ দিই যে, এক্ষণ অবধি নায়িকাগণকে পথিবীমখী বলিতে আরম্ভ করিবেন। তাহা হইলে অলঙ্কারের কিছ গৌরব হইবে। বাবাইবে যে, সন্দেরীর মখমন্ডলের ব্যাস কেবল সহস্ৰ ক্রোশ নহে-কিছ: কম চারি সহস্ৰ ক্রোশ। এই ক্ষদ্র পথিবী আমাদিগের পথিবী হইতে এক লক্ষ বিংশতি সহস্ৰ ক্ৰোশ মাত্র-ত্রিশ হাজার যোজন মাত্র। গাগনিক গণনায় এ দীরতা অতি সামান্য-এপাড়া ওপাড়া। ত্রিশটি পথিবী গায় গায় সাজাইলে চন্দ্ৰে গিয়া লাগে। চন্দ্ৰ পৰ্যন্ত রেলওয়ে যদি থাকিত, তাহা হইলে ঘণ্টায় বিশ মাইল গেলে, দিন রাত্ৰি চলিলে, পঞ্চাশ দিনে পৌছান যায়। সতরাং আধনিক জ্যোতিবিদগণ চন্দ্রকে অতি নিকটবত্তীর্ণ মনে করেন। তাঁহাদিগের কৌশলে এক্ষণে এমন দরবীক্ষণ নিশ্চিমত হইয়াছে যে, তদ্দ্বারা চন্দ্রাদিকে ২৪oo গণ ব্যহত্তর দেখা যায়। ইহার ফল। এই দাঁড়াইয়াছে যে, চন্দ্র। যদি আমাদিগের নেত্ৰ হইতে পঞ্চাশং ক্ৰোশ মাত্র দরবত্তীর্ণ হইত, তাহা হইলে আমরা চন্দ্ৰকে যেমন সম্পন্ট দেখিতাম, এক্ষণেও ঐ সকল দরবীক্ষণ সাহায্যে সেইরােপ সম্পস্ট দেখিতে পারি। এরপ চাক্ষষ প্রত্যক্ষে চন্দ্রকে কিরােপ দেখা যায় ? দেখা যায় যে, তিনি হস্তপদাদিবিশিষ্ট দেবতা নহেন, জ্যোতিৰ্ম্মময় কোন পদার্থী নহেন, কেবল পাষাণময়, আগ্নেয় গিরিপারিপািণ, জড়পিণড। কোথাও অত্যুন্নত পৰ্ব্ববতমালা-কোথাও গভীর গহবর।রাজি। চন্দ্ৰ যে উত্তজবল, তাহা সয্যালোকের কারণে। আমরা পথিবীতেও দেখি যে, যাহা রৌদ্রপ্রদীপ্ত, তাহাই দরি হইতে থাকে। সে তত্ত্ব বক্সাইয়া লিখিবার প্রয়োজন নাই। কিন্তু ইহা সহজেই বাবা যাইবে, যে স্থান উত্তজবলতা প্রাপ্ত হয় না। সকলেই জানে যে, চন্দ্রের কলায় কলায় হ্রাস বদ্ধি এই কারণেই ঘটিয়া থাকে। সে তত্ত্ব বৰ্ব্বাইয়া লিখিবার প্রয়োজন নাই। কিন্তু ইহা সহজেই বাবা যাইবে, যে স্থান উন্নত, সেই স্থানে রৌদ্র লাগে-সেই স্থান আমরা উক্তজবল দেখি-যে স্থানে গহবর অথবা পািব্বতের ছায়া, সে স্থানে রৌদ্র প্রবেশ করে না—সে স্থলগলি আমরা কালিমাপণে দেখি। সেই অনাক্তজবল রৌদ্রশান্য স্থানগলিই “কলঙ্ক”—অথবা “মগ”—প্রাচীনাদিগের মতে সেইগলিই "কদম-তলায় বাড়ী চরকা কাটিতেছে।” চন্দ্রের বহিভাগের এরপ সক্ষমান সক্ষম অন্যাসন্ধান হইয়াছে যে, তাহায় চন্দ্রের উৎকৃষ্ঠািট মানচিত্র প্রস্তুত হইয়াছে; তাহার পবতাবলী ও প্রদেশসকল নাম প্রাপ্ত হইয়াছে—এবং তাহার পৰ্ব্বতমালার উচ্চতা পরিমিত হইয়াছে। বেয়ার ও মাল্লর নামক সপরিচিত জ্যোতিবিদদ্বয় অন্যান ১০৯৫টি চান্দ্ৰ পৰ্ব্ববতের উচ্চতা পরিমিত করিয়াছেন। তন্মধ্যে মনষ্যে যে পর্বতের নাম রাখিয়াছে “নিউটন”, তাহার উচ্চতা ২২,৮২৩ ফিট। এতাদর্শ উচ্চ পৰ্ব্বত-শিখর, পথিবীতে আন্দিস ও হিমালয়শ্রেণী ভিন্ন আর কোথাও নাই। চন্দ্র পথিবীর পঞ্চাশং ভাগের এক ভাগ মাত্র এবং গরত্বে একাশী ভাগের এক ভাগ মাত্র; অতএব পথিবীর তুলনায়, চান্দ্ৰ পৰ্ব্ববতসকল অত্যন্ত উচ্চ। চন্দ্রের তুলনায় নিউটন যেমন উচ্চ, চিম্পবারোজা নামক বহৎ পার্থিব শিখরের অবয়ব আর পঞ্চাশং গণে বদ্ধি পাইলে পথিবীর তুলনায় তত উচ্চ হইত। চান্দ্ৰ পৰ্ব্ববত কেবল যে আশচয্য উচ্চ, এমত নহে; চন্দ্রলোকে আগ্নেয় পৰ্ব্বতের অত্যন্ত আধিক্য। অগণিত আগ্নেয় পৰ্ব্বতশ্রেণী অগ্ন্যাশগারী বিশাল রন্ধুসকল প্রকাশিত করিয়া রহিয়াছে—যেন কোন তপ্ত দ্রবীভূত পদাৰ্থ কটাহে জাবাল প্রাপ্ত হইয়া কোন কালে টগবগা করিয়া ফটিয়া উঠিয়া জমিয়া গিয়াছে। এই চন্দ্রমন্ডল, সহস্রধা। বিভিন্ন, সহস্ৰ সহস্ৰ বিবরবিশিস্টকেবল পাষাণ, বিদীণ, ভগ্ন, ছিন্নভিন্ন, দন্ধ, পাষাণময়। হায়! এমন চাঁদের সঙ্গে কে সন্দরী দিগের মাখের তুলনা করার পদ্ধতি বাহির করিয়াছিল ? Sce