পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बधिकम ब्रा5नावली গ্রন্থে আরও কিছ বাড়াবাড়ি করিয়াছেন, তাহা পাঠ্যকালে রামের কান্না পড়িয়া আমাদিগের মনে হইয়াছিল যে, বাঙ্গালির মেয়েরা স্বামী বা পত্রকে বিদেশে চাকরি করিতে পাঠাইয়া এইরুপ করিয়া কাঁদে বটে। ভবভূতির পক্ষে ইহা বক্তব্য যে, উত্তরচরিত নাটক; নাটকের উদ্দেশ্য হচ্চিত্র; রামায়ণ প্রভৃতি উপাখ্যান কাব্যের উদ্দেশ্য ভিন্নপ্রকার। সে উদ্দেশ্য কাৰ্য্যপরম্পরার সরস বিবাতি। কে কি করিল, তাহাই উপাখ্যান কাব্যে লেখকেরা প্রতীয়মান করিতে চাহেন; সে সকল কাৰ্য্য করিবার সময়ে কে কি ভাবিল, তাহা সপজ্জন্টীকৃত করিবার প্রয়োজন তােদশি বলবৎ নহে। কিন্তু নাটকে সেই প্রয়োজনই বলবৎ। নাটককারের নিকট আমরা নায়কের হৃদয়ের প্রকৃত চিত্ৰ চাহি। সতরাং তাঁহাকে চিত্তভােব অধিকতর স্পষ্টীকৃত করিতে হয়। অনেক বাগাড়ম্বর আবশ্যক হয়। কিন্তু তথাপি উত্তরচরিতের প্রথমাঙ্কের রামবিলাপ মনোহর নহে। সে কথাগালিন বীরবাক্য নহেনবপ্ৰেমমন্ধ অসারবান, যােবকের কথা। প্রথমাঙ্ক ও দ্বিতীয়াঙ্কের মধ্যে দ্বাদশবৎসর কাল ব্যবধান। উত্তরচরিতের একটি দোষ এই যে, নাটক বাণিতি ক্রিয়া সকলের পরস্পর কালগত নৈকট্য নাই। এই সম্পবন্ধে উইন্টস টেল নামক সেক্ষপীয়রকৃত বিখ্যাত নাটকের সঙ্গে ইহার বিশেষ সাব্দশ্য আছে। এই দ্বাদশবৎসর মধ্যে সীতা যমল সন্তান প্রসব করিয়া সম্বয়ং পাতালে অবস্থান করিলেন, তাঁহার পত্রেরা বালিমীকির আশ্রমে প্রতিপালিত এবং সশিক্ষিত হইতে লাগিল। রামচন্দ্রের পৰবৰ্তৃপ্রদত্ত বরে দিব্যাস্ত্র তাহদের সম্ববতঃসিদ্ধ হইল। এদিকে রামচন্দ্ৰ অশ্বমেধ যজ্ঞানপীঠান করিতে লাগিলেন। লক্ষণের পত্র চন্দ্ৰকেতু সৈন্য লইয়া যজ্ঞের আশ্বরক্ষণে প্রেরিত হইলেন। কোন দিন রামচন্দ্র দৈবাদেশে জানিলেন যে, শম্পবাক নামক কোন নীচজাতীয় ব্যক্তি তাহার রাজ্যমধ্যে তপশাচরণ করিতেছে। ইহাতে তাহার রাজ্যমধ্যে অকালমতু্য উপস্থিত হইতেছে। রামচন্দ্ৰ ঐ শদ্র তপস্বীর শিরচ্ছেদ মানসে সশস্ত্রে তাহার অন্যসন্ধানে নানা দেশ ভ্ৰমণ করিতে লাগিলেন। শম্পবাক পঞ্চবটীর বনে তপঃ করিতেছিল। দ্বিতীয়াঙ্কের বিস্কম্ভকে মনিপত্নী আত্ৰেয়ী এবং বনদেবতা বাসন্তীর প্রমখাৎ এই সকল বত্তান্ত প্রকাশ হইয়াছে। যেমন প্রথমাঙ্কের পর্বে প্রস্তাবনা, সেরপ অন্যান্য অঙ্কের পকেব একটি একটি বিভ্ৰাকম্ভক আছে। এগলি অতি মনোহর। কখন বিদাষী ঋষিপত্নী, কখন প্ৰেমময়ী বনদেবী, কখন তমসা মরলা নদী, কখন বিদ্যাধর বিদ্যাধরী, এইরপে সৌন্দৰ্য্যময়ী সন্টির দ্বারা ভবভূতি বিস্কম্ভক সকল অতি রমণীয় করিয়াছেন। দ্বিতীয়াঙ্কের আরম্ভেই সন্দর। যথা;- অধিবগবেশ তাপসী। আয়ে, বনদেবতেয়ং ফলকুসমপল্লবাঘোণ মামাপতিস্ঠতে। (১) শিক্ষা সম্পবন্ধে আত্ৰেয়ীর কথা বড় সন্দর বিতরতি গােরঃ প্রাজ্ঞে বিদ্যাং যথৈব তথা জড়ে নচ খল, তয়োজ্ঞানে শক্তিং করোত্যপহন্তি বা। ভবতি চ তয়োভূয়োন ভেদঃ ফলং প্রতি তদন্যথা প্রভবতি শচিবিশোবাদ গ্রাহে মণিন মদাং চয়ঃ ৷ (২) হরোস হেমান উইলসন বলেন যে, উত্তরচরিতে কতকগলি। এমত সন্দের ভাব আছে যে, তদপেক্ষা সন্দির ভাব কোন ভাষাতেই নাই। উপরে উদ্ধত কবিতা এই কথার উদাহরণস্বরুপ তিনি উল্লেখ করিয়াছেন। রামচন্দ্র শবকের সন্ধান করিতে করিতে পঞ্চবটীর বনে শম্পািবককে পাইলেন, এবং খড়গদ্বারা তাহাকে প্রহার করিলেন। শম্পবাক দিব্য পরষ; রামের প্রহারে শাপমাক্ত হইয়া রামকে (১) অহো! এই বনদেবতা ফলপ্যািপপল্লবাঘের দ্বারা আমার অভ্যর্থনা করিতেছেন। (২) গাের বন্ধিমানকে যেমন শিক্ষা দেন, জড়কেও তদুপ দিয়া থাকেন। কাহারও জ্ঞানের বিশেষ সাহায্য বা ক্ষতি করেন না। কিন্তু তথাপি তাহদের মধ্যে ফলের তারতম্য ঘটে। কেবল নিৰ্ম্মল মণিই প্রতিবিম্ব গ্রহণ করিতে পারে; মাত্তিকা তাহা পারে না। SV