পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২০৬

বঙ্কিম রচনাবলী পৰ্ব্বতাদির বর্ণনা অতি মনোহর। আমরা সচরাচর অন্যপ্রাসালঙ্কারের প্রশংসা করি না, কিন্তু এরপ অন্যপ্রাসের উপর বিরক্ত হওয়াও যায় না। গঞ্জৎকুঞ্জকুটীরকৌশিকঘাটাঘৎকারবৎকীচকস্তম্ববাড়শবরমিকমেীকুলিকুলঃ ক্ৰৌঞ্চাবতোহয়ং গিরিঃ। এতস্মিন প্ৰচলাকিনাং প্রচলতামদ্বেজিতাঃ কাজিতৈরদ্বেল্পন্তি পরাণৱে eva. কুম্ভীনাসাঃ ॥ এতে তে কুহরেষদ গদগদানন্দগোদাবরীবারয়ো মেঘালঙ্কৃতমৌলিনীলশিখরাঃ ক্ষেীণীভূতো দক্ষিণাঃ। অন্যোন্যপ্রতিঘাতসঙ্কুলচলৎ কল্লোলকোলাহলৈরােত্তালাস্ত ইমে গভীরপয়সঃ পণ্যাঃ সরিৎসঙ্গমাঃ। (১) তৃতীয়াঙক অতি মনোহর। সত্য বটে যে, এই উৎকৃষ্ট নাটকে ক্রিয়াপারস্পপৰ্য্য বড় মনোহর নহে, এবং তৃতীয়াঙ্ক সেই দোষে বিশেষ দন্ট। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুৰ্থ, পঞ্চম অঙ্ক য্যেরপ বিস্তৃত, তদনরাপ বহল ক্রিয়াপরম্পরা নায়ক-নায়িকাগণ কর্তৃক সম্পন্ন হয় নাই। যিনি মাকবেথ পাঠ করিয়াছেন, তিনি জানেন যে, নাটকে বর্ণিতা ক্রিয়া সকলের বাহাল্য, পারস্পৰ্য্য এবং শীঘ্র সম্পাদন, কি প্রকার চিত্তকে মন্ত্রমন্ধে করে। কাৰ্য্যগত এই গণ নাটকের একটি প্রধান গণ। উত্তরচরিতে তাহার বিরলপ্রচার; বিশেষতঃ প্রথম ও তৃতীয়াঙ্কে। তথাপি ইহাতে কবি যে অপব্ব কবিত্ব প্রকাশ করিয়াছেন, সেই গণে আমরা সে সকল দোষ বিস্মত হই। দ্বিতীয়াঙেকর বিস্কম্ভক যেমন মধর, তৃতীয়াঙ্কের বিস্কম্ভক ততোধিক। গোদাবরী সংমিলিতা, তমসা ও মরালা নাম্নী দাইটি নদী রােপ ধারণ করিয়া রামসীতা বিষয়িণী কথা কহিতেছে। অদ্য দ্বাদশ বৎসর হইল, রামচন্দ্র সীতাকে বিসঙ্জন করিয়াছেন। প্রথম বিরহে তাঁহার যে গারতের শোক উপস্থিত হইয়াছিল, তাহা পকেবা বাণিত হইয়াছে। কালসহকারে সে শোকের লাঘব জন্মিবার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু তাহা ঘটে নাই; সব্বসন্তাপহত্তা কাল এই সন্তাপের শমতা সাধিতে পারে নাই। অনিভিন্নো গভীরত্বদন্তগঢ়ঘনব্যথাঃ । , পািটপাকপ্ৰতীকাশো রামস্য করণে রসঃ ৷ (২) এইরূপ মৰ্ম্মমধ্যে রদ্ধ সন্তাপে দগ্ধ হইয়া রাম, পরিক্ষীণ শরীরে রাজকম্পমান ঠান করিতেন। রাজকম্পেম ব্যাপতি থাকিলে, সে কন্টের তােদশ বাহ্য প্রকাশ পায় না; কিন্তু আজ পঞ্চবটীতে আসিয়া রামের ধৈৰ্য্যাবলম্বনের সে উপায়ও নাই। এ আবার সেই জনস্থান; পদে পদে সীতাসহবাসের চিহ্নপরিপািণ । এই জনস্থানে কত কাল, কত সখে, সীতার সহিত বাস করিয়াছিলেন, তাহা পদে পদে মনে পড়িতেছে। রামের সেই দ্বাদশ বৎসরের রদ্ধ শোকপ্রবাহ ছটিয়াছে—সে প্রবাহবিলে, এই গোদাবরীস্রোতঃস্খলিত শিলাচিয়ের ন্যায় রামের হৃদয়পাষাণ আজি কোথায় যাইবে, কে বলিতে পারে ? জনস্থানবাহিনী করণোদ্রাবিতা নদীগলিন দেখিল যে, আজি বড় বিপদ। তখন মােরলা কলকল করিয়া গোদাবরীকে বলিতে চলিল, “ভগবাতি! সাবধান থাকিও-আজ রামের বড় বিপদ। দেখিও, রাম যদি মচ্ছা যান, তবে তোমার জলকণাপণ শীতল তরঙ্গের বাতাসে মদ, মদ, তাঁহার মােচ্ছ ভঙ্গ করিও।” রঘকুলদেবতা ভাগীরথী এই শোকতাপনাতপসন্তাপ (১) এই পৰ্ব্ববত ক্ৰৌঞ্চাবত। এখানে অব্যক্তনাদী কুঞ্জকুটীরবাসী পেচককুলের ঘৎকারশান্দিত বায়যোগ্যধৰনিত বংশবিশেষের গাচ্ছে ভীত হইয়া কাকেরা নিঃশব্দে আছে। এবং ইহাতে সপেরা, চঞ্চল ময়ারগণের কেকারবে ভীত হইয়া পরাতন বটব্যুক্ষের সঙ্কন্ধে লাকাইয়া আছে। আর এই সকল দক্ষিণ পহ্মবািত। পৰবতকুহরে। গোদাবরীবারিরাশি গল্পগদনিনাদ করিতেছে; শিরোদেশ মেঘমালায় অলঙ্কৃত হইয়া নীল শোভা ধারণ করিয়াছে; আর এই গভীরজলশালিনী পবিত্রা নদীগণের সঙ্গম পরস্পরের চঞ্চল তরঙ্গকোলাহলে দন্ধৰ্ষ হইয়া রহিয়াছে। (২) অবিচলিত গভীরত্বহেতুক হৃদয়মধ্যে রদ্ধ, এ জন্য গাঢ়ব্যথ রামের সন্তাপ মািখবদ্ধ পাত্ৰমধ্যে পাকের সন্তাপের ন্যায় বাহিরে প্রকাশ পায় না। SCAO